মণিরুল ইসলাম, উলুবেড়িয়া: স্কুলের গেট খুলছেন শিক্ষকরা। পড়ানো বাদেও স্কুলের যে সব কাজকর্মও থাকে, তাও আপাতত ভাগাভাগি করে নিয়েছেন তাঁরা। কিন্তু কতদিন এমন চলবে? সেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। স্কুলের দরজা খোলা থেকে, স্কুল শুরুর ঘণ্টা বাজানো-সহ অন্যান্য কাজকর্ম হাতে হাতে করছেন তাঁরা। এই ঘটনাই এখন দেখা যাচ্ছে হাওড়ার উলুবেড়িয়ার উত্তর ভাটোরা হাই স্কুলে।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে বাংলার এসএসসির প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক, অশিক্ষক কর্মীর চাকরি গিয়েছে। রাজ্যের বিভিন্ন জায়গার স্কুলগুলিতে সমস্যা দেখা দিয়েছে এই রায়ের পরে। স্কুলের পঠনপাঠন কীভাবে হবে? সেই নিয়েও চর্চা হচ্ছে ওয়াকিবহাল মহলের একাংশের মধ্যে। প্রায় একই রকম পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে উলুবেড়িয়ার উত্তর ভাটোরা হাই স্কুলে। কারণ, আগে থেকেই ওই স্কুলে ছিল না গ্রুপ ডি বিভাগের কর্মী। আগের কর্মী অবসর নেওয়ার পর নতুন কোনও কর্মী সেই স্কুলে কাজে যুক্ত হয়নি। এদিকে গ্রুপ ডি বিভাগের সেসব কাজ সামলাতেন ওই স্কুলের ক্লার্করা।
ওই স্কুলে দুই ক্লার্ক কর্মরত ছিলেন। স্কুলের দরজা খোলা, ঘণ্টা বাজানো থেকে অন্যান্য কাজকর্ম তাঁরাই সামলাতেন। এবার সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে ওই দুই কর্মীর চাকরি চলে গিয়েছে। নির্দেশ জানার পরেই কাজকর্ম মাস্টারমশাইদের বুঝিয়ে স্কুল ছেড়েছেন তাঁরা। গতকাল তাঁদের কাজকর্ম ভাগাভাগি করে সামলেছেন শিক্ষকরা। অফিসের কাজকর্ম কাজের ফাঁকে করেছেন তারা। এদিনও স্কুলের দরজা খোলা-বন্ধের দায়িত্ব সামলেছেন শিক্ষকরাই। সোমবার থেকে কী হবে? সেই প্রশ্নও উঠেছে।
ওই স্কুলে বর্তমানে প্রায় ৭০০ কাছাকাছি ছাত্র রয়েছে। শিক্ষক রয়েছেন ১০ জন। এছাড়া কয়েকজন প্যারাটিচার রয়েছেন। শিক্ষকদের অনুমোদিত পোস্ট এখানে ১৭। ঘাটতিতে রয়েছে গ্রুপ ডি বিভাগের। দুটি পোস্ট খালি রয়েছে। সেখানে কর্মী ছিলেন দুজন। গ্রুপ ডি কর্মী না থাকায়, সেই করণিকরাই দায়িত্ব নিয়ে খাতা বওয়া, ক্লাসে নোটিশ নিয়ে যাওয়া বা ঘন্টা বাজানোর কাজও করতেন। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে বাতিল হয়ে যাওয়া চাকরির তালিকায় নাম রয়েছে এই স্কুলের ওই দুজন করণিকের। তাহলে স্কুলের নানা ধরনের অফিসের কাজ, স্কুলের ঘন্টা বাজানো, ক্লাসের নোটিশ দেওয়া কারা করবেন? স্কুলের টিচার ইনচার্জ শেখ সাহাবুদ্দিন বলেন, "ভাবনা চিন্তা করে দেখি কী করা যায়। আপাতত আমাদেরকেই সেই কাজ করতে হবে। ছাত্রদের স্বার্থে সেটা করব।"