সুমন করাতি, হুগলি: কলকাতায় একাধিক এলাকায় বাড়ি হেলে পড়ার ঘটনা এসেছে। এবার সেই আতঙ্ক হুগলির কানাইপুরে। অপরিকল্পিত ভাবে পুকুরে জলসেচের কারণে ধস নেমে একটি বাড়ি ও পাশের দোকানে ফাটল ও হেলে পড়ার ঘটনা ঘটেছে। খোদ পঞ্চায়েত প্রধানের এলাকায় এই ঘটনায় তীব্র চাঞ্চল্য এলাকায়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গঙ্গানগর এলাকার পাম্প হাউসের কাছের পুকুর লিজ নিয়েছেন এক ব্যক্তি। তিনি গত কয়েকদিন ধরেই পাম্প লাগিয়ে জল তুলছিলেন। অভিযোগ, পঞ্চায়েতের থেকে কোনও অনুমতি না নিয়ে এমনকী, পরিকল্পনা ছাড়াই ওই কাজ চলছিল। এই পুকুর ধারে আশেপাশে রয়েছে বেশ কিছু বাড়ি, দোকান।
মঙ্গলবার সকালে স্থানীয়রা দেখেন, পুকুর পাড়ের একটি বাড়ি ও দোকান পুকুরের দিকে ধস নেমে হেলে পড়েছে। ঘটনার খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন কানাইপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান ভবেশ ঘোষ ও পঞ্চায়েতের ইঞ্জিনিয়াররা। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন তাঁরা।
ইঞ্জিনিয়ার সজল ঘোষ বলেন, "বিষয়টি খতিয়ে দেখেছি। পুকুর থেকে এভাবে জল তুলে ফেলার কারণে বাড়িগুলোর পিছনের মাটি নরম হয়ে গিয়েই এভাবে ধস নামার ঘটনা। যত দ্রুত সম্ভব পুকুর পাড় ভালোভাবে বাঁধিয়ে দিতে হবে। বাড়িগুলিতে ভালোভাবে পাইলিং করে সুরক্ষিত করতে হবে। না হলে এই বাড়ি আর দোকান আরও হেলে পড়ার সম্ভবনা রয়েছে।
ক্ষতিগ্রস্ত দোকানের মালিক কার্তিকচন্দ্র দাস বলেন, "গত কয়েকদিন ধরেই দোকানের পিছনের পুকুর থেকে জল তোলা হচ্ছিল। পুকুরটা সেভাবে বাঁধানো নেই। জল কমে যাওয়ার ফলেই আজ দোকানের পিছনে বড় ধস নেমেছে। পুকুর থেকে এভাবে জল তোলার জন্য কোনও সুরক্ষা ব্যবস্থা অবলম্বন করা বা অনুমতিও নেওয়া হয়নি।" ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া বাড়ির মালিক অর্চনা বিশ্বাস বলেন, "আজ সকালে হঠাৎ দেখি আমার বাড়ির পিছনে ধস নেমে পুকুরের দিকে বেশ কিছু অংশ চলে গিয়েছে। পঞ্চায়েতের কাছে আমার অনুরোধ ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা হোক।"
পঞ্চায়েতের উপপ্রধান ভবেশ ঘোষের কথায়, "সকালে খবর পেয়েই আমি এখানে ছুটে আসি। পঞ্চায়েতের ইঞ্জিনিয়ারদেরও ডেকে পাঠাই। সকলেই বিষয়টি দেখেছি। পুকুর থেকে এভাবে জল তুলে নেওয়ার ফলেই এই ঘটনা ঘটেছে। যে ব্যক্তি এই পুকুর লিজ নিয়ে কাজ করছিল তাঁকে ডেকে পাঠিয়েছি। যে বাড়ি আর দোকান ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে সেগুলো নিয়ে কী ব্যবস্থা করা যায়, দ্রুত আলোচনায় বসে তা ঠিক করা হবে।"