সুমন করাতি, হুগলি: বর্ষবরণের রাতে ফের রক্তাক্ত হুগলির উত্তরপাড়া। এলাকার তৃণমূল নেতা-কর্মীদের উপর হামলা চলল। ঘটনায় গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য পার্থ নস্করের আঘাত গুরুতর হওয়ায় তাঁকে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। ঘটনার রেশ বুধবার সকালেও চলে। তার জেরে উত্তরপাড়া-দিল্লি রোডের অটো চলাচল বন্ধ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে পাওয়া খবর অনুসারে, মঙ্গলবার রাতে হুগলির উত্তরপাড়ার মাখলা ২০ নম্বর ওয়ার্ডের অটো স্ট্যান্ডের কাছে বর্ষবরণের অনুষ্ঠান চলছিল। রাত সাড়ে ১১টা থেকে ১২টার মধ্যে সেখানে কিছু দুষ্কৃতী তাণ্ডব চালান। তৃণমূল নেতা-কর্মীদের উপর বাঁশ, লাঠি দিয়ে চড়াও হন তাঁরা। বেধড়ক মারধর করা হয় ডানকুনির রঘুনাথপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য পার্থ নস্কর ও তৃণমূল যুব কর্মীদের। এরপর এলাকা ছেড়ে পালান দুষ্কৃতীরা।
আহতদের দ্রুত উদ্ধার করে উত্তরপাড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পার্থ নস্করের শারীরিক অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাঁকে সেখান থেকে উত্তরপাড়ায় বেসরকারি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। পরে রাতেই তাঁকে ফের কলকাতায় নিয়ে গিয়ে এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। পার্থ নস্করের শারীরিক অবস্থা গুরুতর বলে জানা গিয়েছে। এদিকে ওই ঘটনার পরে মধ্যরাতে স্টেশন এলাকার কয়েকটি দোকানেও ভাঙচুর চালান দুষ্কৃতীরা।
কিন্তু কী কারণে এই হামলা? তাই নিয়ে জোর চর্চা চলছে। এই হামলা নিয়ে তৃণমূলের অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন। অভিযোগ, উত্তরপাড়া স্টেশন সংলগ্ন অটো স্ট্যান্ডের পিছনে দিনের আলোয় মাদক বিক্রির কারবার চলে। মাঝেমধ্যে পুলিশি ধরপাকড় চললে তা সাময়িক বন্ধ থাকে। পরে আবার একই ভাবে মাদক বিক্রি শুরু হয়ে যায়। ওই এলাকায় অপরাধমূলক কাজকর্ম লেগেই থাকে বলে অভিযোগ। এই হামলার ঘটনায় স্থানীয় বাসিন্দারা কয়েকজন দুষ্কৃতীকে চিহ্নিত করতে পেরেছেন বলে খবর। পুলিশ দ্রুত তদন্তে নেমে গতকাল রাতেই একজনকে ঘটনায় জড়িত সন্দেহে গ্রেপ্তার করে।
পরে সকালের দিকে আরও কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে। সেই নিয়েও শুরু হয়েছে উত্তেজনা। পুলিশ দুষ্কৃতীদের বদলে এলাকার নিরীহদের ধরেছে বলে অভিযোগ। তাঁদের দ্রুত ছাড়ার দাবি তুলে রাস্তা অবরোধও করা হয়। ঘটনার জেরে উত্তরপাড়া-দিল্লি রোডের অটো চলাচল বন্ধ। বছরের শুরুতেই এই ঘটনায় এলাকায় যথেষ্ট চাপা উত্তেজনা রয়েছে। স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, ওই এলাকায় মাদক বিক্রি বন্ধ করতে হবে। পুলিশও দুষ্কৃতী দৌরাত্ম্য ঠেকাতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।