দেবব্রত মণ্ডল, বারুইপুর: বারুইপুরে নিহত প্রাক্তন নৌসেনা কর্মী দেহের নিম্নাংশ, ধড় ইতিমধ্যে খুঁজে পেয়েছেন তদন্তকারীরা। তবে এখনও পাওয়া যাচ্ছে না কাটা হাত। দেহের কাটার কাজে ব্যবহৃত করাতও উধাও। যা খুঁজতে গিয়ে রীতিমতো হন্যে পুলিশ। প্রশ্ন উঠছে, তবে কি জঙ্গলে থাকা শিয়ালের গর্তেই সন্ধান মিলবে কাটা হাতের। প্রয়োজনে শিয়ালের গর্তে হাতের খোঁজ করা হবে বলেই পুলিশ সূত্রের খবর।
নিহত প্রাক্তন নৌসেনাকর্মীর ছেলের দাবি অনুযায়ী রবিবার বারুইপুর-মল্লিকপুর রোডের ডিহি এলাকার একটি পুকুরে ডুবুরি দিয়ে তল্লাশি চালানো হয়। সেখানেই খুনের পর দেহাংশ কাটার কাজে ব্যবহৃত করাত ফেলে দিয়েছিল বলেই জানিয়েছিল অভিযুক্ত যুবক। তবে তল্লাশির পরেও সেখান থেকে উদ্ধার হয়নি কিছুই। এরপর পুকুর থেকে কিছুটা দূরে একটি জঙ্গলে শুরু হয় প্রাক্তন নৌসেনা কর্মীর (Ex Navy Officer) দেহাংশের খোঁজ। সেখান থেকে উদ্ধার হয় তাঁর শরীরের নিম্নাংশ। শিয়ালের গর্তের কাছ থেকেই পাওয়া গিয়েছিল। এখনও পাওয়া যাচ্ছে না কাটা হাতের খোঁজ। সেগুলিকে টেনে নিয়ে গিয়ে গর্তে রাখতে পারে বলেই মনে করছেন তদন্তকারীরা। পুলিশ সূত্রে খবর, প্রয়োজনে শিয়ালের গর্তেও হাতের খোঁজে তল্লাশি চালানো হবে।
[আরও পড়ুন: বিহারে লরির ধাক্কায় মৃত ১২ পুণ্যার্থী, আর্থিক সাহায্য ঘোষণা কেন্দ্র ও রাজ্যের]
রবিবার রাতভর প্রাক্তন নৌসেনা কর্মীর ছেলে ও স্ত্রীকে জেরা করেন তদন্তকারীরা। তারা জেরায় জানায়, খুনের পর বেশ কিছুক্ষণের জন্য বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায় নিহতের ছেলে। বাইরে থেকে মায়ের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করে সে। এরপর বাড়ি ফেরে। দেহ শৌচাগারে নিয়ে গিয়ে রাত সাড়ে ৯টা থেকে ভোর সাড়ে ৪টে পর্যন্ত দেহ করাত দিয়ে কাটা হয়। বাবার দেহ মোট ৬টি টুকরো করে। শ্বাসরোধ করে খুন, দেহ খণ্ডবিখণ্ড করা এবং দেহ লোপাটের ক্ষেত্রে ছেলেকে সবরকম সাহায্য করে মা।
ধৃত যুবকের দাবি, এরপর প্লাস্টিকে মুড়ে বাবার দেহাংশ নিয়ে সাইকেলে চড়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায় মা ও ছেলে। সেই সময় নিজের কোলে স্বামীর ধড় বসিয়ে যায় প্রাক্তন নৌসেনা কর্মীর স্ত্রী। বারুইপুর-মল্লিকপুর রোডের ডিহি এলাকার একটি পুকুর থেকে ঊজ্জ্বল চক্রবর্তীর অর্ধেক দেহ ফেলা হয়। তার আশপাশের জঙ্গলে কোমর এবং কাটা পা ফেলে দেওয়া হয়। নিহতের ছেলের দাবি, দিল্লিতে খুনের পর লিভ ইন পার্টনারের দেহ ৩৫ টুকরো করার ঘটনায় অনুপ্রাণিত হয়ে একাজ করেছে সে। অভিযুক্তদের মোট ৩টি মোবাইল বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। আর কেউ এই নৃশংস আছে কিনা জানতে অভিযুক্তদের কললিস্ট খতিয়ে দেখা হচ্ছে।