shono
Advertisement

প্রতিবন্ধকতাই কি ভিলেন? হাজার বাধা পেরিয়েও মাধ্যমিকে অকৃতকার্য বিশাখা

ফের পরীক্ষায় বসার জেদ কিশোরীর। The post প্রতিবন্ধকতাই কি ভিলেন? হাজার বাধা পেরিয়েও মাধ্যমিকে অকৃতকার্য বিশাখা appeared first on Sangbad Pratidin.
Posted: 10:38 AM Jun 07, 2018Updated: 10:53 AM Jun 07, 2018

পলাশ পাত্র, তেহট্ট: আর দশজনের থেকে সে আলাদা। কিন্তু তাতে চেষ্টার কসুর ছিল না। কিন্তু তীরে এসে তরী ডুবল। এত চেষ্টার পরেও  সাফল্যের মুখ দেখতে পেল না করিমপুর গোয়াস হাইস্কুলের মূক-বধির ছাত্রী বিশাখা দাস।

Advertisement

বিশাখার মাধ্যমিকে প্রাপ্ত নম্বর ৯৪। অসুস্থ বাবা, মা, মূক ও বধির ভাই বোনকে নিয়ে সংসার। মাধ্যমিকের ফলাফলের পর দুঃস্থ দাস পরিবারে নেমে এসেছে হতাশার কালো মেঘ। প্রতিবেশী থেকে স্কুলের শিক্ষকরা এদিন বিকেলে ছুটে আসে করিমপুর গোয়াস উওরপাড়ার দাস বাড়িতে। তাঁরা সান্ত্বনা দেন। চোয়াল শক্ত করে অসুস্থ বাবা সনাতন ও মা গীতা দাস বলছেন, ‘ও ফের পরীক্ষায় বসবে। এখন ওর মন খারাপ ঠিকই। কিন্ত ও যখন এতটা এগিয়েছে তখন আমরা ওর পিছনে থাকবই। আগামী বছর মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসবে।’

[ বিড়ি বাঁধেন বাবা, ব্লক স্তরে মাধ্যমিকে সর্বোচ্চ নম্বর পেয়ে নজির কিশোরীর ]

জীর্ণ, শীর্ণ বিশাখার বয়স সতেরো। ছোট থেকেই দিদি, দাদার মতো সেও মূক ও বধির। কিছুদিন আগেই তার প্রতিবন্ধী শংসাপত্র হয়েছে। তাও বিশেষ কারণে। কী কারণে? দশম শ্রেণfতে এক চান্সে উঠে গেলেও, তার রেজিস্ট্রেশন না হওয়ায় মাধ্যমিক পরীক্ষা দেওয়াটা অধরা হয়ে গিয়েছিল। ভেঙে পড়েছিল বিশাখা। পরে প্রশাসনিক হস্তক্ষেপ ও শিক্ষকদের উদ্যোগে বিষয়টি জানুয়ারি মাসে মিটে যায়। তবে প্রথমে রেজিস্ট্রেশন না হওয়া নিয়ে শিক্ষকদের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ ওঠে। সেক্ষেত্রে শিক্ষকরা সেই সময় জানিয়েছিল, ও স্কুলে নিয়মিত না আসায় এই সমস্যা হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত তড়িঘড়ি প্রতিবন্ধী শংসাপত্র হয়। রেজিস্ট্রেশন, ফর্ম ফিলাপও প্রায় এক সঙ্গেই হয়। অ্যাডমিট পাওয়ার অনিশ্চয়তা কেটে যায়। অনেক আশা নিয়ে মাধ্যমিক পরীক্ষার নির্দিষ্ট দিনগুলিতে বিশাখা পরীক্ষা দেয়। এই ছাত্রীর বাবা কয়েক বছর ধরে অসুস্থ। মা বিড়ি বাঁধে। মূক বধির দিদির বিয়ে হয়ে গিয়েছে। মূক-বধির দাদা বিশ্বজিৎ রঙের কাজ করে গোটা সংসারটা কাঁধে নিয়েছে। পরিবারের সবার পড়াশোনার গণ্ডিকে ছাপিয়ে অনেকটা এগিয়ে ছিল বিশাখা। কিন্ত এদিন প্রথমে নেট থেকে প্রতিবেশীদের মাধ্যমে ফলাফল জানার পর বিশাখা ভেঙে পড়ে। কথা বলতে না পারলেও চোখের জল আর হাত নেড়ে যা বোঝাচ্ছিল বিশাখা তাতে বুঝতে অসুবিধা হয় না ও কতটা কষ্ট পেয়েছে এই ফলে। ওর প্রাপ্ত নম্বর বাংলা-১০, অংক-১১, ইংরেজি-১২, ভৌতবিজ্ঞান ১৭, জীবনবিজ্ঞান-১৩, ইতিহাস-১১, ভূগোল ২০।

[ অশান্তি কেড়ে নিয়েছে সন্তানকে, মাধ্যমিকের মার্কশিটেই তবু শান্তি খুঁজছেন ইমাম রশিদি ]

বাবা সনাতন ও মা গীতা দাস বলেন, ‘ও আশি শতাংশ প্রতিবন্ধী। ও খুব কষ্ট করে পড়াশোনা করেছে। পাশ করতে না পারায় ওর মন খারাপ। আমাদের মনও ভাল নেই। কিন্তু ও পরীক্ষা দেবেই।’ এদিন বাড়ি আসা স্কুলের শিক্ষক প্রভাস মজুমদার বলেন, ‘পড়াশোনা নিয়ে এ রকম আন্তরিকতা খুব কম দেখা যায়। খুব ভাল মেয়ে।’ স্কুলের প্রধান শিক্ষক ভবানী প্রামাণিক বলেন, ‘ও খুব চেষ্টা করেছিল। পারেনি অন্য কথা। তবে প্রশংসা অবশ্যই করব।’

The post প্রতিবন্ধকতাই কি ভিলেন? হাজার বাধা পেরিয়েও মাধ্যমিকে অকৃতকার্য বিশাখা appeared first on Sangbad Pratidin.

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement