সুমন করাতি, হুগলি: মাত্র ১০০ টাকার জন্য এক যুবককে খুন করেছিল যুগল। ওই ঘটনায় প্রেমিক-প্রেমিকাকে দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন সাজা শোনাল আদালত। ঘটনার ছয় বছর পর আজ মঙ্গলবার হুগলির চুঁচুড়া আদালত এই সাজা শোনাল। ওই যুগলের নাম কৃষ্ণা বাউল দাস ও লক্ষ্মী রায়।
আদালত সূত্রে খবর, ২০১৯ সালের ৭ জুন রাত তিনতে নাগাদ মগড়া কাঁটাপুকুর এলাকায় একটি দোকানের সামনে এক যুবককে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা গিয়েছিল। বছর ২৩ এর ওই যুবকের নাম মহম্মদ আনোয়ার, বাড়ি মগড়াগঞ্জ নতুন গ্রাম এলাকায়। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছিল, ওই দিন সন্ধ্যার পর থেকে তাঁর খোঁজ মিলছিল না। টহলদারি পুলিশ রক্তাক্ত অবস্থায় ওই যুবককে উদ্ধার করে স্থানীয় গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যায়। যদিও চিকিৎসকরা জানিয়ে দেন, আগেই মৃত্যু হয়েছিল ওই যুবকের। পুলিশ মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়।
মৃতদেহ উদ্ধারের পরদিন ওই যুবকের মামা রঞ্জিত সাউ জনৈক কৃষ্ণা বাউল দাস এবং লক্ষ্মী রায়ের নামে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ তদন্তে নেমে এক প্রত্যক্ষদর্শীর খোঁজ পায়। ওই প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছিলেন, ঘটনার রাতে তিনি ওই যুগলকে আনোয়ারের সঙ্গে ঝগড়া করতে দেখেছিলেন। সেই সূত্র পেয়েই মগরা থানার পুলিশ ওই যুগলকে গ্রেপ্তার করে। জেরার পর একাধিক তথ্য পান তদন্তকারীরা। তদন্তে জানা যায়, আনোয়ারের থেকে একশো টাকা পেতেন লক্ষ্মী। কেন ওই টাকা ফেরত দিতে দেরি হচ্ছে, সেই নিয়েই চলছিল বচসা। সেসময় আনোয়ারের মাথা ইট দিয়ে থেঁতলে দেওয়া হয়। রক্তাক্ত অবস্থায় ওই যুবককে ঘটনাস্থলে ফেলে রেখেই ওই যুগল এলাকা থেকে পালিয়ে যায়। পরে মৃত্যু হয় আনোয়ারের।
ওই মামলার তদন্তকারী অফিসার ছিলেন গৌতম মণ্ডল। চুঁচুড়া আদালতে শুরু হয় মামলার শুনানি। মামলায় মোট ২৪ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। চুঁচুড়া আদালতের অতিরিক্ত জেলা দায়রা বিচারক এদিন ওই যুগলকে দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন সাজা শোনালেন। এছাড়াও পাঁচহাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। মৃত যুবকের মাকে দুই লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আদালতের রায় শুনে খুশি মৃতের মা ও মামা।
