অতিমারীতে এদের কেউ হারিয়েছে বাবাকে। কেউ বা মাকে। কেউ কেউ দু’জনকেই হারিয়ে নিঃস্ব, বিপন্ন। এমন শিশুদের পাশে দাঁড়াতেই ‘সংবাদ প্রতিদিন’ ও ‘ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘ’র মানবিক প্রয়াস ‘আদর’। এমন শিশুদের সন্ধান জানাতে পারেন আপনিও। যোগাযোগ করুন ৯০৮৮০৫০০৪৮ নম্বরে।
তারক চক্রবর্তী , শিলিগুড়ি: স্কুলের গণ্ডি পেরোয়নি তিন ভাই, বোন। এর মধ্যেই তাঁরা এসে দাঁড়িয়েছে নির্মম বাস্তবের রুক্ষ জমিতে। মা, বাবা বলে ডাকার যে আর কেউ রইল না! শিলিগুড়ির (Siliguri) বাবুপাড়ার নন্দিতা, রনি আর রানি রায়। শৈশব, কৈশোর পার হওয়ার আগেই করোনার (Corona Virus) থাবা তিন ভাইবোনকে এনে ফেলেছে স্বজনহীন এক অসীম সংকটের মুখে। উজ্জ্বল আকাশ এক নিমেষে করে দিয়েছে ধূসর।
বাবা মারা গিয়েছেন বছর দুয়েক আগে। তিন ভাইবোনের অভিভাবক বলতে ছিলেন মা। সবার বড়, অষ্টাদশী নন্দিতা জানিয়েছেন, করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে মা জ্বরে পড়েন। হাসপাতালে লালারসের নমুনা পরীক্ষা করিয়ে রিপোর্ট আসে কোভিড পজিটিভ। টানা সাত দিন যমে-মানুষে টানাটানির পর প্রয়াত হন নন্দিতা,রনি, রানির মা। সেদিন যেন ধরণী ফাঁক হয়ে গিয়েছিল তিন ভাইবোনের কাছে। শোক ছাপিয়ে ওঠে আগামীর আশঙ্কা। দু’বেলা খাবার জুটবে কীভাবে? পেশায় টোটোচালক কাকা গৌরগোপাল রায় আপাতত দেখছেন তিন ভাইবোনকে। তাঁর কথায়, “আমার রোজগার সামান্য। কতদিন টানতে পারব জানি না।”
[আরও পড়ুন: আগামী ২ বছরে আন্তর্জাতিক হবে অন্ডাল বিমানবন্দর, ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর]
মা-বাবা হারা নাতি-নাতনিগুলোকে দেখে চোখের জল চেপে রাখতে পারেন না ঠাকুমা মিলনা রায়। সামর্থ্যের অভাবে পেটভরে খাবার তুলে দিতে পারেন না নাতি-নাতনিদের পাতে। সবচেয়ে ছোট রানিকে হলদিবাড়িতে দাদুর বাড়িতে রেখে এসেছেন কাকা। নন্দিতা ও রনি রয়েছে ঠাকুরমা আর কাকার আশ্রয়ে। আঠারোর বড় দিদি বাস্তবটা বুঝলেও তেরো বছরের রনি, রানি মায়ের পথ চেয়ে। এই বুঝি মা ফিরে এসে জড়িয়ে ধরবে তাদের। নন্দিতা দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী। রনি ও রানি দু’জনেই অষ্টম শ্রেণিতে পড়ে।
কিন্তু আর পড়তে পারবে কিনা, কেউ জানে না। বইখাতা কেনা বা টিউশনের খরচ অনেক। কীভাবে তা জুটবে ভেবে পরিজনেরা দিশেহারা। শিলিগুড়ি পুরনিগমের প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারম্যান গৌতম দেব আপাতত ওদের পড়াশোনার জন্য কিছু আর্থিক সাহায্য করেছেন। ঠাকুমা জানিয়েছেন, “বাবা-মা হারা তিন ভাইবোনের ভবিষ্যৎ কী হবে, বুঝতে পারছি না। কাকার সামান্য রোজগার। কেউ যদি একটু সাহায্য করে তবে বাচ্চাগুলোর পড়াশোনা মাঝপথে বন্ধ হয় না।”
এমনই অবস্থা শিলিগুড়ির মজুমদার পরিবারেরও। সিন্ধা (২৫), শুভজিৎ (২১) ও রাজদীপের (১৭) জীবনে প্রথম ধাক্কা লাগে বছর কয়েক আগে, বাবা মারা যাওয়ার পর। সম্প্রতি করোনা মাকেও কেড়ে নেওয়ায় এখন সামনে শুধুই অন্ধকার। ভাইদের দায়িত্ব কেমন করে সামলাবেন সেই চিন্তা কুরে কুরে খাচ্ছে দিদি সিন্ধাকে।
[আরও পড়ুন: Coronavirus: ভাইরাস কেড়েছে বাবার প্রাণ, অনিশ্চিত ভবিষ্যতের পথে ১৫ বছরের দেবস্মিতা]
পাশে চাই আপনাকেও
এই সবহারানো অসহায় শিশুদের পাশে দাঁড়াতে পারেন আপনিও। সরাসরি অর্থসাহায্য পাঠানো যাবে ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের অ্যাকাউন্টে।
State Bank of India, Ballygunge Branch,
A/C No : 30391077575
IFS Code : SBIN0003951
Mobile : 9433607740 (Debashish Maharaj)
বিঃ দ্র: টাকা পাঠানোর পর আপনার নাম,ঠিকানা ও সাহায্যের পরিমাণ স্ক্রিনশট-সহ হোয়াটসঅ্যাপ করুন 9433607740 ও 9088050048 নম্বরে। আমরা যথাসময়ে তা প্রকাশ করব। সাহায্যকৃত অর্থ 80G ধারা অনুযায়ী করমুক্ত।