সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বর্তমানে কোথায় রয়েছেন সন্দেশখালির শেখ শাহজাহান? ইডি মনে করছে তৃণমূল নেতা পালিয়ে গিয়েছেন বাংলাদেশে। তাই লুকআউট নোটিস জারি করা হল। দেশের প্রতিটি বিমানবন্দরকে সতর্ক করা হল। এদিকে, উত্তর ২৪ পরগনার সীমান্ত এলাকাগুলিতে তীক্ষ্ম নজর রেখেছেন তদন্তকারীরা। সূত্রের খবর, তাঁর খোঁজে ইতিমধ্যেই আইবি এবং বিএসএফের সাহায্যও নেওয়া হয়েছে।
গত শুক্রবার সকালে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ‘ঘনিষ্ঠ’ শেখ শাহজাহানের বাড়িতে যান ইডি আধিকারিকরা। তাঁর অনুগামীদের হাতে আক্রান্ত হন তিন ইডি আধিকারিক। তার পর থেকে তুঙ্গে রাজনৈতিক চাপানউতোর। তবে গন্ডগোলের মাঝে আচমকা ‘বেপাত্তা’ শাহজাহান। সরবেড়িয়ার আকুঞ্জবেড়িয়ার বাড়িতে নেই তৃণমূল নেতা। প্রাথমিকভাবে ইডি মনে করছে কাঁটাতার পেরিয়ে বাংলাদেশে চলে গিয়েছেন তিনি। আইবি এবং বিএসএফকে সতর্ক থাকার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।
[আরও পড়ুন: ভিতরে জলরাশির শব্দ, পাশে খেলে বেড়াবে মাছ, গঙ্গার নিচে মেট্রো সফর যেন অ্যাকোয়ারিয়াম!]
উল্লেখ্য, উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ কর্মাধ্যক্ষের পাশাপাশি সন্দেশখালি ১ নম্বর ব্লকের তৃণমূল সভাপতি শেখ শাহজাহান। এই মুহূর্তে ইডির হেফাজতে থাকা প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত তিনি। শেখ শাহজাহানের উত্থান বাম জমানার শেষ দিকে। এলাকার অনেকে বলেন, শেখ শাহজাহান এ রাজ্যের লোকই নন। তিনি অনুপ্রবেশকারী। বাংলাদেশ থেকে এসেছেন এখানে। বামফ্রন্ট জমানার শেষ দিকে স্থানীয় বিধায়ক অনন্ত রায়ের অত্যন্ত আস্থাভাজন হয়ে উঠেছিলেন এই শাহজাহান। কাঠ ও গরু পাচারের পাশাপাশি মানব পাচারের অভিযোগও রয়েছে শাহজাহানের বিরুদ্ধে। এসবের মাধ্যমেই তাঁর প্রতিপত্তি বৃদ্ধি পেয়েছে বলে অভিযোগ বিরোধীদের।
২০১১ সালে রাজ্যে পালাবদল ঘটে। ক্ষমতায় আসে তৃণমূল (TMC)। বদলায় পরিস্থিতি। মাথার উপর থেকে হাত সরে যায় বাম বিধায়কের। বিপাকে পড়েন শাহজাহান। তার পর ২০১৬ সালে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেন তিনি। বাম আমলে অবশ্য শাহজাহান কোনও পদ পাননি। কিন্তু সূত্রের খবর, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকই শাহজাহানকে নিয়ে এসেছিলেন জোড়াফুলে। তাঁর সাহায্যেই সাংগঠনিক পদ পান শাহজাহান। ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে নুসরত জাহানকে সন্দেশখালিতে প্রার্থী করেছিল তৃণমূল। সংখ্যালঘু ভোট একত্রিত করে নুসরতকে জেতানোর ক্ষেত্রে একটা বড় ভূমিকা ছিল তাঁর। যার পুরস্কার স্বরূপ পঞ্চায়েত ভোটে শেখ শাহজাহানকে প্রার্থী করে তৃণমূল। জিতে জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ হন তিনি। ‘দাপুটে’ ওই তৃণমূল নেতাকে হন্যে হয়ে খুঁজছেন তদন্তকারীরা।