shono
Advertisement

‘গ্রেপ্তার না হলে আমাকে টিকতে দিত না’, বিধায়ক জীবনকৃষ্ণর গ্রেপ্তারির পর দাবি বাবার

কাজের জন্য় বাবার কাছে ঘুষ চেয়েছিলেন বিধায়ক।
Posted: 08:27 PM Apr 17, 2023Updated: 08:27 PM Apr 17, 2023

নন্দন দত্ত, সিউড়ি: নিয়োগ দুর্নীতিতে ধৃত তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহার বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফুঁসছে তাঁর পরিবার। কাজ করে দিতে বাবার থেকেও ঘুষ চেয়েছিলেন বিধায়ক ছেলে। এমনকী, বাবার লাইসেন্স বাতিল করিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। ছেলের প্রতি বাবা এতটাই বীতশ্রদ্ধ যে গ্রেপ্তারির পর তিনি বলছেন, “ও গ্রেপ্তার না হলে আমাকে টিকতে দিত না।”

Advertisement

দীর্ঘ সময় জেরার পর সোমবার সকালে গ্রেপ্তার হয়েছেন মুর্শিদাবাদের বড়়ঞার বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহা। ছেলের গ্রেপ্তারিতে মোটে শোকাহত নন বাবা বিবেকানন্দ সাহা। বরং ছেলের গ্রেপ্তারিতে কিছুটা শান্তিই পয়েছেন বলা যায়। পরিবার সূত্রে খবর, রেল লাইনের ধারে থাকত বিবেকানন্দদের পরিবার। সে সময় একবার সাঁইথিয়ার হাটতলার বাড়িতে এসেছিল জীবন। এছাড়া ৩৫ বছরের বিবাহিত জীবনে স্বামীর আগের পক্ষের ছেলে জীবনের সঙ্গে তেমন করে দেখা হয়নি তাঁর মায়ের। সোমবার সাঁইথিয়া ২ নম্বর ওয়ার্ডের ধর্মরাজতলার বাড়িতে বসে কথাগুলো বলছিলেন জীবনের সৎ মা গায়ত্রী সাহা। বাবা বিশ্বনাথ সাহা জানালেন, “যে ছেলে বাবার ক্ষতি চায়, তার কী হল, তাতে আমাদের কী?” বিশ্বনাথবাবুর ক্ষোভ, তাঁর কাজের জন্য তাঁর কাছেই প্রকারন্তরে ছেলে ঘুষ চেয়েছিল। 

[আরও পড়ুন: হাঁড়িকাঠ প্রস্তুত করে নিজেদের বলি দিলেন দম্পতি! যজ্ঞের আগুনে পুড়ল কাটা মুন্ডু]

সাঁইথিয়ায় তালতলায় চালকল, রেশনের দোকানের ব্যবসা আছে। জীবন সে সব তো দেখেননি। বরং উলটে কী করে সেই ব্যবসা আটকানো যায় তাঁর চক্রান্ত করতেন দিনরাত। দাবি সাহা পরিবারের। বিশ্বনাথবাবুর দ্বিতীয় পক্ষের দুই মেয়ে ও এক ছেলে। ২০১৫ সালে ২১ বছরের বিবেকানন্দ সাহার মৃতদেহ মেলে রেল লাইনের ধারে। ছেলের এই অস্বাভাবিক মৃত্যুর পরে যেন জীবনের সঙ্গে দূরত্ব আরও বেড়েছে পরিবারের । তাঁর বাবা বিশ্বনাথ সাহা জানিয়েছেন, “ওকে গ্রেপ্তারের পর আমার কিছু মনে হয়নি। আমার মনে কোনও দুঃখ নেই। ও নিজেই সব বুঝবে।” তাঁর বাবা এতটাই ক্ষুব্ধ যে তিনি জানান, “ও যে কবে বিধায়ক হয়েছে, কীভাবে হয়েছে, তা আমাকে ফোন করেও জানায়নি। তবে শাসকদলে ক্ষমতাসীন ছিল, তাই চুপ করে থাকতাম। আমাকে সবসময় অসম্মান করত।” বিবেকানন্দবাবুর আরও দাবি, “আমার গোডাউনে গাড়ি লাগাতে দিত না। গোডাউন দখল করে পার্টি অফিস করেছিল। সেখানে মিটিং করত। কিছু বলতে পারতাম না। ও গ্রেপ্তার না হলে আমাকে টিকতে দিত না।”

জীবনকৃষ্ণ সাহার বাবার অভিযোগ, “আমি ন্যায্যভাবে বিডিও অফিসে একটা কাজ পেয়েছিলাম। মিড ডে মিলের সামগ্রী সরবরাহের। কিন্তু অন্যজনের কাছে ঘুষ নিয়ে তালিকায় এক নম্বর থাকা কাজও বাতিল করে দেয়।” তাঁর দাবি, “বাড়িতে বহু ধরনের লোক আসত। আমি স্ত্রী-ছেলে-মেয়ের নামে অংশীদারী ব্যবসা করতে গিয়েছিলাম। কমিশনারকে ফোন করে সে লাইসেন্স বাতিল করে দেয়।”

[আরও পড়ুন: স্ট্যালিনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি-তোপ, তামিলনাড়ুর বিজেপি সভাপতিকে মানহানির নোটিশ DMK’এর]

সাঁইথিয়ায় নিয়মিত যাতায়াত ছিল জীবনের। শহরের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলরের সঙ্গে তাঁর পরিবারের নিয়মিত যোগাযোগ ছিল। জীবনের বোন চুমকি সাহা মণ্ডল জানান, “যে অন্যায় করেছে তাঁর শাস্তি হোক। কতজন কতভাবে টাকা দিয়ে চাকরি করছে । তাতে যোগ্যরা সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়েছে।” ছোট বোন পিঙ্কি সাহা অবশ্য এদিন সাঁইথিয়া বাড়িতে ছিলেন না। তবে নিয়োগ দূর্নীতিতে গ্রেপ্তারেরর পরে যেভাবে সাঁইথিয়ার বাড়িতে লোকের ভিড় বাড়ছে, তাতে বিব্রত সাহা পরিবার। দরজা বন্ধ করে তাঁরা যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে রেখেছেন।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement
toolbarHome ই পেপার toolbarup মহানগর toolbarvideo শোনো toolbarshorts রোববার