সুনীপা চক্রবর্তী, ঝাড়গ্রাম: ওড়িশা সিমলিপালের জঙ্গল থেকে ঝাড়গ্রামের সীমানায় ঢুকে পড়া বাঘিনীকে নিজের ডেরায় ফেরত পাঠাতে উদ্যোগী হল বনদপ্তর। শোনা যাচ্ছে, দুই রাজ্যের বনদপ্তরের টিম আপাতত মহিষ শাবক টোপ হিসেবে রেখে ঘুমপাড়ানি বন্দুকের নিশানায় রেখেছে বাঘিনী জিনাতকে। ঝাড়খণ্ডের পূর্ব সিংভূমের চাকুলিয়া রেঞ্জের চিঁয়াবান্ধির জঙ্গলে বাঘিনীটিকে ধরার জন্য বুধবার বিকেলে জঙ্গলে একটি মহিষ শাবক ছাড়া হয়েছিল। বাঘিনী সেই মহিষ শাবকটি খেয়ে ফেলেছে বলে জানা গিয়েছে।
ঘুমপাড়ানি বন্দুক হাতে তৈরি বনদপ্তরের কর্মীরা। নিজস্ব ছবি।
বৃহস্পতিবার আবারও একটি মহিষ শাবককে জঙ্গলের মধ্যে গাছে বেঁধে রেখে বনদপ্তরের ট্রাঙ্কুলাইজার নির্দিষ্ট দূরত্বে টিম অপেক্ষা করেছে সন্ধ্যা পর্যন্ত। যদিও এদিন সন্ধ্যা পর্যন্ত জিনাত ওই টোপের আশেপাশেই আসেনি বলে জানা গিয়েছে। চিঁয়াবান্ধি জঙ্গলটি মূলত শাল, ইউক্যলিপটাস গাছে সমৃদ্ধ। আর আছে ঝোপঝাড়, লতানো গাছ। ঘন, গভীর এই জঙ্গলটিতে ভীত জিনাত এদিন দিনভর নিজেকে লুকিয়ে রেখেছে বলে জানায় স্থানীয় বনদপ্তর। ওই এলাকার আশপাশে বনদপ্তরের লোকজন, ভারী গাড়ির উপস্থিতি বাঘিনীকে সন্ত্রস্ত করে রেখেছে বলে মনে করা হচ্ছে।
অন্যদিকে, বনদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে বাঘিনী জিনাতকে ট্রাঙ্কুলাইজ করে তাকে ওড়িশার সিমলিপাল রিজার্ভ ফরেস্টেই ফিরিয়ে দিতে উদ্যোগী। এই বিষয়ে জামসেদ ডিভিশনের ডিএফও সুবা আমেদ বলেন, "বাঘিনীটিকে সিমলিপাল রিজার্ভ ফরেস্টে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে। তবে এদিন সন্ধ্যা পর্যন্ত ট্রাঙ্কুলাইজ করার কোনও খবর নেই।" বনদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, দিনভর জিনাত জঙ্গল থেকে বের হয়নি। বাংলার ঝাড়গ্রাম জেলার ঝাড়খণ্ড সীমান্ত থেকে ১০-১২ কিলোমিটার দূরে রয়েছে। রেডিও কলার থাকায় জিপিএসের মাধ্যমে অনবরত ট্র্যাক করা হচ্ছে বাঘিনীর অবস্থান। এদিকে বাঘিনীটিকে ট্রাঙ্কুলাইজ করার খবরে বাংলা সীমানার গ্রামগুলির মানুষজন অনেকটাই স্বস্তিতে। রয়্যাল বেঙ্গ টাইগারকে ওই জঙ্গলে আটকে রেখে ঘুম পাড়িয়ে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে। ফলে আর সীমানা পার করে ঝাড়গ্রামে ঢুকতে পারবে না। বর্তমানে ওড়িশা এবং ঝাড়খণ্ড রাজ্য বনদপ্তরের একটাই টার্গেট, যেনতেন প্রকারে বাঘিনীটিকে নিজের ডেরায় ফিরিয়ে দেওয়া।