shono
Advertisement

বিরল রোগে আক্রান্ত ভাই-বোন, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পরও নির্বিকার প্রশাসন

মন্ত্রীর কাছে সাহায্য চাইতে গিয়ে ধমক। The post বিরল রোগে আক্রান্ত ভাই-বোন, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পরও নির্বিকার প্রশাসন appeared first on Sangbad Pratidin.
Posted: 09:43 AM Jul 24, 2017Updated: 04:13 AM Jul 24, 2017

নিজস্ব সংবাদদাতা, বালুরঘাট : মন্ত্রীর কাছে সাহায্য চাইতে গিয়ে ধমক। ‘সংবাদ প্রতিদিন’-এ সেই খবর প্রকাশিত হওয়ার পরই কার্যত যুদ্ধকালীন তৎপরতায় বাড়িতে ছুটে গিয়েছিল জেলা প্রশাসন। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে বাড়িতেই বসেছিল মেডিক্যাল বোর্ড। এমনকী বাইরে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসার আশ্বাসও মিলেছিল। কিন্তু ওই পর্যন্তই। দু’মাসেই সব তৎপরতা উধাও। এখন আর কেউ খোঁজও রাখে না বালুরঘাটের বদলপুরের একই পরিবারের শয্যাশায়ী দুই প্রতিবন্ধী ভাই-বোনের। আগের মতোই বাড়িতে থেকেই দিন কাটছে প্রতিবন্ধী রাজু আর মামনির। অসহায় অবস্থায় ফিরেছেন বাবা-মা।

Advertisement

দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাটের বদলপুর গ্রামের বাসিন্দা চঞ্চল মণ্ডল ও মিনা মণ্ডল। এই দম্পতির মেয়ে বছর একুশের মামনি জন্ম থেকেই প্রতিবন্ধী। সম্পূর্ণ শয্যশায়ী। বছর সতেরোর ছেলে রাজু সাত বছর আগে স্নায়ুরোগে আক্রান্ত হয়ে সেও বিছানায়। হতদরিদ্র পরিবারের চিকিৎসা করানোর সামর্থ্য কার্যত নেই। মন্ত্রীর কাছে সাহায্য চাইতে গিয়ে কার্যত ধমক খেয়েছিলেন মিনা। মন্ত্রী তাঁকে বলেন, বিরক্ত না করতে এবং এই ধরনের আবদার নিয়ে আর ফোন না করতে। গত ৪ মে সেই খবর সংবাদ প্রতিদিন-এ প্রকাশিত হতেই জেলা প্রশাসন তোলপাড় হয়। খবর কানে যায় মুখ্যমন্ত্রীরও। তাঁর নির্দেশে সংবাদ প্রকাশের দিন বদলপুর গ্রামে যান প্রশাসনের শীর্ষ কর্তারা। বাড়িতেই কয়েকজনকে নিয়ে মেডিক্যাল বোর্ড বসে। প্রয়োজনে বাইরে নিয়ে গিয়েও চিকিৎসার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়।

[ভুল চিকিৎসায় বধূমৃত্যুর অভিযোগ, প্রতিশোধে হাতুড়ে ডাক্তারকে খুন]

তারপর আত্রেয়ী দিয়ে খুব বেশি জল গড়ায়নি। মাত্র দু’মাসেই রাজু-মামণিকে ভুলেছে প্রশাসন। সেই সময় কিছু জামাকাপড় দেওয়া হয়েছিল। বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য চার হাজার টাকা মিলেছিল। ৯৬০ টাকার আর্থিক সাহায্য দিয়েছিল প্রশাসন। আর রাজু-মামণির ওষুধ বাবদ মিলেছিল ১৯০০ টাকা। মামণির ৮০ শতাংশ প্রতিবন্ধী সার্টিফিকেট থাকায় মাসে ৬০০ টাকা পেত। কিন্তু রাজুর সম্পূর্ণ প্রতিবন্ধী সার্টিফিকেট ছিল না। মেডিক্যাল বোর্ডের সুপারিশে কার্যত রাতারাতি ভাই-বোনকে ১০০ শতাংশ প্রতিবন্ধী সার্টিফিকেটের ব্যবস্থাও করে জেলা প্রশাসন। কিন্তু সেই সার্টিফিকেটের সব সুযোগ-সুবিধা এখনও পাচ্ছে না ওই পরিবার। পরিবারের অভিযোগ, সামান্য কিছু আর্থিক সাহায্য মিলেছিল। সপ্তাহ দু’য়েক একটু নড়াচড়া হয়েছিল। বাড়িতে প্রশাসনের লোকজনও আসত। কিন্তু সেটা মাত্র দিন পনোরোর ব্যাপার ছিল। দুই প্রতিবন্ধী সন্তানের মা মিনাদেবী বলেন, “চিকিৎসার জন্য বাইরে নিয়ে যাওয়ার কথা বলেছিলেন প্রশাসনিক আধিকারকরা। কিন্তু সে বিষয়ে কোনও উদ্যোগ আর নেই। কয়েকবার অতিরিক্ত জেলাশাসকের সঙ্গে যোগাযোগও করেছি আমরা। কিন্তু তিনিও এই ব্যাপারে আর উৎসাহ দেখাচ্ছেন না। ফের আগের দিনে ফিরেছি। ছেলে-মেয়েকে নিয়ে অসহায় অবস্থার কোনও পরিবর্তনই হয়নি।” তাঁর আর্জি, অন্তত প্রতি মাসে ওষুধ কেনার টাকার দেওয়ার ব্যবস্থা করুক প্রশাসন।

তবে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুকুমার দে বলেন, একজন মেডিক্যাল অফিসার ও তিন জন চিকিৎসককে দুই ভাই-বোনের চিকিৎসার ভার দেওয়া রয়েছে। তাঁরা চিকিৎসা করছেন। ওষুধের জন্য টাকাও মিটিয়ে দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) অমলকান্তি রায় জানিয়েছেন, মেয়েটির ফিজিওথেরাপি চলছে। ছেলেটিকে বাইরে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যেতে আবেদন পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকে অনুমোদন এলেই ব্যবস্থা করা হবে।

[পুরুলিয়া কাণ্ড: সনাতনের কুকীর্তি জেনেও কেন চুপ ছিল নির্যাতিত শিশুর মা?]

The post বিরল রোগে আক্রান্ত ভাই-বোন, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পরও নির্বিকার প্রশাসন appeared first on Sangbad Pratidin.

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement