shono
Advertisement
Life Imprisonment

স্ত্রীর চাকরি নাপসন্দ, কাটারি হামলায় আঙুল, দাঁত কেটে যাবজ্জীবন কারাবাসে স্বামী

২০২২ সালের জুন মাসে স্ত্রী অফিসে যাওয়ার পথে রাস্তা আগলে দাঁড়িয়ে আক্রমণ করে স্বামী। এই শাস্তি কিছুটা শান্তি দিল, জানান স্ত্রী।
Published By: Sucheta SenguptaPosted: 09:44 PM Oct 05, 2024Updated: 09:44 PM Oct 05, 2024

সুমন করাতি, হুগলি: কাটারির কোপে ক্ষতবিক্ষত হয়েছিলেন, দুই হাতের চারটে আঙুল বাদ যাওয়া, মুখের উপরের পাটির দাঁত হারানোর থেকেও বেশি পীড়া দিয়েছিল স্বামীর এই আক্রমণ। এবার হয়ত সেই আঘাতে মলম লাগল, স্বামীর যাবজ্জীবন কারাবাসের সাজা ঘোষণায়। শনিবার হুগলির পোলবা থানার ধূমা গ্রামের বাসিন্দা পূর্নিমা মেটের স্বামী প্রদীপকে এই সাজা শোনাল চুঁচুড়া জেলা দায়রা আদালত। তাতে এতদিনের যন্ত্রণার জীবনে কিছুটা শান্তি হল বলে জানান পূ্র্ণিমা।

Advertisement

কিন্তু কেন পূর্ণিমার উপর এমন আক্রমণ করেছিল স্বামী প্রদীপ? জানা গিয়েছে, অপরাধ বলতে ছিল পূর্ণিমার চাকরি করা। সুগন্ধার একটি বি.ফার্ম কলেজের হস্টেলে ওয়ার্ডেনের চাকরি করেন তিনি। তা মোটেই পছন্দ ছিল না স্বামীর। ফলে হামলার পরিকল্পনা। ২০২২ সালের ৩ রা জুন বাড়ি থেকে কলেজে যাওয়ার পথে কামদেবপুর স্বাস্থ্যকেন্দ্রের কাছে পথ আটকায় তাঁর স্বামী প্রদীপ মেটে। আচমকা কাটারি দিয়ে কোপাতে শুরু করে স্ত্রীকে। পূর্ণিমা দুহাত দিয়ে নিজেকে বাঁচানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু কাটারির কোপে তাঁর হাতের চারটে আঙুল কেটে মাটিতে পড়ে যায়। মুখে কাটারির কোপ লাগে, উপরের পাটির সব দাঁত পড়ে যায়। ঘাড়ে, হাতে এলোপাথারি কোপে ক্ষতবিক্ষত হন পূর্ণিমা।

দুবছর পর শরীরের সেই আঘাত নিরাময় হলেও মনের ক্ষত ছিল গভীর। শনিবার চুঁচুড়া আদালতে দোষী সাব্যস্ত হওয়া স্বামী প্রদীপের যাবজ্জীবন সাজা ঘোষণায় কিছুটা হলেও শান্তি পেলেন বলে জানান পূর্ণিমা। সরকারি আইনজীবী শংকর গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ''দোষী প্রদীপ মেটের বিরুদ্ধে তদন্তকারী অফিসার সুবীর গোস্বামী ২২ নভেম্বর, ২০২২ সালে চার্জশিট জমা দেন। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৪১, ৩০৭, ৩২৬ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে আদালত। ১৫ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। শুক্রবার অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করেন চুঁচুড়া জেলা আদালতের তৃতীয় দায়রা বিচারক অরুন্ধতী ভট্টাচার্য। আজ তার যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডের নির্দেশ দেন। পুলিশি তদন্তে খুশি আক্রান্ত মহিলা।''

পূর্ণিমার মা পারুল পালের বক্তব্য, ''পুরুষদের কাজই হল সন্দেহ করা। মেয়ে বাইরে কাজে যায় সেটা পছন্দ ছিল না। বাড়িতে অশান্তি করত। অনেকবার বোঝানোর চেষ্টা করেছি। মেয়েকে মেরেই ফেলেছিল। কোনওভাবে বেঁচেছে। একমাত্র মেয়েকে একাই বড় করছে।'' সরকারি আইনজীবী জানান, মহিলার অবস্থা এতটাই খারাপ হয়েছিল যে চুঁচুড়া হাসোতালে তাঁর মৃতুকালীন জবানবন্দি নিয়ে রাখা হয়েছিল। প্রায় ২৭ দিন জমে মানুষে লড়াই করে বেঁচে ফিরেছে। খুব দ্রুত এই মামলার তদন্ত শেষ হয় এবং সাজা ঘোষণা হল।''

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
Advertisement