স্টাফ রিপোর্টার: তরতরিয়ে বাড়া বোধহয় একেই বলে! ‘চিক’ থেকে ‘চিকেন’ মাত্র কয়েক সপ্তাহেই৷ পুরুষ্টু ‘লেগ পিস’৷ আকর্ষণীয় বক্ষদেশ৷ তা ঝলসে তন্দুরি অথবা জিভ লকলক করা চিলি চিকেন৷ কিন্তু মুরগির এই অস্বাভাবিক বাড়বাড়ন্ত কোন জাদুকাঠির ছোঁয়ায়? কতটা স্বাস্থ্যসম্মত? যে চিকেন স্টু নিয়ে টানাটানি ডেকার্স লেনে, যে তন্দুরি চিবিয়ে রসনাতৃপ্তি, তা আদৌ আমাদের ক্ষুন্নিবৃত্তি ছাড়া কি কোনও ভিটামিনের জোগানদার? প্রশ্নটা দীর্ঘদিনের৷ যা জোরালোভাবে উঠে গেল এবার৷ কেন না রাজ্য প্রাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সমীক্ষা যা জানিয়েছে, তা মুরগির মাংস প্রেমীদের ঘুম কেড়ে নিয়েছে৷ সমীক্ষা বলছে, পোলট্রির মুরগি খেলে একাধিক অ্যাণ্টিবায়োটিক আর কাজ করবে না আমাদের শরীরে৷ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাই ধীরে ধীরে নষ্ট হয়ে যাবে৷
মানবদেহে অ্যাণ্টিবায়োটিক প্রতিরোধ গড়ে ওঠার অর্থ এক কথায় সাংঘাতিক৷ ছোটখাটো শরীর খারাপের ক্ষেত্রে যেমন পেটের রোগ, গ্যাস, সর্দিকাশি বা কোনওরকম ইনফেকশনের ক্ষেত্রে অ্যাণ্টিবায়োটিক কাজ করবে না৷ মুরগির শরীরে প্রয়োগ করা অ্যাণ্টিবায়োটিক প্রতিনিয়ত নিতে নিতে শরীরে গড়ে ওঠে একরকমের প্রতিরোধ ক্ষমতা, যার কারণে বেশ কয়েক ধরনের অ্যাণ্টিবায়োটিক শরীরে কাজ করে না৷ ফলে অসুখ সারাতে উচ্চমাত্রার অ্যাণ্টিবায়োটিক প্রয়োগে বাধ্য হন চিকিৎসকরা৷ এর কুপ্রভাব মারাত্মক৷
রাজ্য পোলট্রি ফেডারেশনের সম্পাদক মদন মাইতি সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে বলেছেন, “জানি না কোন সমীক্ষার ভিত্তিতে এই সব বলা হচ্ছে৷ এর কোনও ভিত্তি নেই৷ পোল্ট্রির মুরগি চাষ পুরোপুরি বিজ্ঞানভিত্তিকভাবে করা হয়৷ গবেষণালব্ধ সমস্ত খাদ্য ব্যবহার করা হয়৷ কোনও হরমোন বা এমন কিছু খাওয়ানো হয় না যাতে দ্রূত মুরগি বেড়ে ওঠে৷” পোল্ট্রি ফেডারেশন সূত্রে খবর, জন্মের পর ৩৭ থেকে ৪৫ দিনের মধ্যে মুরগির ওজন দাঁড়ায় মোটামুটি দুই কেজিতে৷ খাবার হিসাবে ভুট্টা, মাইলো, সয়াবিনের ব্যবহার প্রচলিত৷ রাজ্যে প্রতি সপ্তাহে প্রায় দুই কোটি কেজি চিকেন লাগে৷ তবে অভিযোগ, বাচ্চা মুরগি মাত্র পাঁচ সপ্তাহেই দু’কিলো ওজনের হয়ে যাচ্ছে৷ এর কারণ খাদ্য হিসাবে তাদের দেওয়া হচ্ছে ভিটামিন ও ক্যালসিয়াম মেশানো ম্যাশ আর অ্যাণ্টিবায়োটিক ইনজেকশন দেওয়া হচ্ছে নিয়মিত৷ যার ফলে ওজন হু হু করে বাড়ে মুরগির৷
মুরগির মাংসের এই ক্ষতিকর প্রবণতা আটকাতে অর্গানিক পদ্ধতিতে মুরগি চাষ করতে পরামর্শ দিচ্ছে রাজ্যের প্রাণী বিশ্ববিদ্যালয়৷
The post পোলট্রির মুরগি কাড়ছে মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা! appeared first on Sangbad Pratidin.
