শাহাজাদ হোসেন, ফরাক্কা: সংশোধিত ওয়াকফ আইন প্রত্যাহারের দাবিতে মঙ্গলবার সন্ধ্যে থেকেই উত্তপ্ত জঙ্গিপুর। শান্তি ফেরাতে তৎপর প্রশাসন। আগেই এলাকায় ১৬৩ ধারা জারি হয়েছে। এবার সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হল ইন্টারনেট পরিষেবাও। ঘটনার পর গোটা রাত পেরিয়ে গেলেও এখনও থমথমে জঙ্গিপুর মহকুমার রঘুনাথগঞ্জ ও সুতি এলাকা। মোতায়েন রয়েছে বিশাল পুলিশ বাহিনী। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে আজই জঙ্গিপুর যাওয়ার কথা বিধায়ক জাকির হোসেনের।

ওয়াকফ আইনের প্রতিবাদকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার বিকেল থেকে দফায় দফায় উত্তপ্ত হয়ে ওঠে জঙ্গিপুর। পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে বিক্ষোভকারীরা। পরিস্থিতি সামলাতে কাঁদানে গ্যাসের সেল ফাটায় পুলিশ। শুরু হয়ে যায় জনতা-পুলিশের খণ্ডযুদ্ধ! জ্বালিয়ে দেওয়া হয় পুলিশের দুটি গাড়ি। চলে ইটবৃষ্টি। ভাঙচুর করা হয় বেশ কয়েকটি বাড়ি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আনতে জঙ্গিপুরের এসপি আনন্দ রায়ের নেতৃত্বে বিশাল পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। কিছুক্ষণ পরই পরিস্থিতি সামাল দেয় তারা। পুলিশের তরফে জানানো হয়, পরিস্থিতি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে। জাতীয় সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে। উত্তেজিত জনতাকে ছত্রভঙ্গ করা হয়েছে। যারা গুজব ছড়িয়েছে বা চেষ্টা করেছে তাদের বিরুদ্ধেও আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। গুজবে কান না দিয়ে সবাইকে শান্ত থাকার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে পুলিশের তরফ থেকে। শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, অশান্তি ছড়ানোর অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ২২ জনকে।
উল্লেখ্য, জঙ্গিপুরের অশান্তি নিয়ে ইতিমধ্যেই বিবৃতি দিয়ে রাজ্য প্রশাসনকে সতর্ক করেছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। তাঁর বক্তব্য, “এভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ছড়ানো হিংসা বরদাস্ত করা উচিত নয়। যেভাবে শান্তিপূর্ণভাবে রামনবমী মিটল, তাতেই বোঝা গিয়েছে প্রশাসন হিংসা নিয়ন্ত্রণে সক্ষম, মানুষও অশান্তি চায় না। শান্তি বিঘ্নিত করার যে কোনও চেষ্টা কঠোর হাতে দমন করা উচিত।” রাজ্যপাল পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাজ্যকে কড়া পদক্ষেপ করার পরামর্শ দিয়েছেন।