সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: আদিবাসী উন্নয়ন দপ্তরের বৈঠকে গলল বরফ। মিলল সমাধান সূত্র। ৫ দিন পর আন্দোলন প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত কুড়মিদের। ১০০ ঘণ্টা পর দূর হল ভোগান্তি।
শনিবার বেলা এগারোটা নাগাদ অবরোধস্থলে যান আদিবাসী কুড়মি সমাজের মূল মানতা অজিতপ্রসাদ মাহাতো। পুরুলিয়া জেলাশাসকের দপ্তরে আন্দোনকারীদের দাবিদাওয়া নিয়ে আলোচনায় বসেন। নবান্ন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যোগ দেন আধিকারিকরা। বৈঠকের পর অজিতপ্রসাদ মাহাতো বলেন, “আমাদের আজ সন্তোষজনক আলোচনা হয়েছে। রেল অবরোধ তুলে নিলাম। পুজোর সময় এটা খারাপ হচ্ছে। তবে দাবি একইরকম থাকবে। কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে লড়াই আমাদের চলবে। আমাদের দম কত আছে সরকারকে দেখালাম। দাবি না মিটলে আবার লড়াই করব।”
[আরও পড়ুন: ‘যাওয়ার সময় হল দাও বিদায়’, তৃণমূল বিধায়কের ফেসবুক পোস্টে তুঙ্গে দলত্যাগের জল্পনা]
উল্লেখ্য, কুড়মি জনজাতিকে আদিবাসী তালিকাভুক্ত করার দাবিতে গত মঙ্গলবার থেকে আন্দোলন শুরু হয় পুরুলিয়ায়। দাবি আদায়ের জন্য রাস্তায় নামেন কুড়মি জনজাতির প্রতিনিধিরা। রেল অবরোধ করেন তাঁরা। দক্ষিণ-পূর্ব রেলের আদ্রা ডিভিশনের রেললাইনে শুয়ে পড়ে রেল চলাচল সম্পূর্ণ আটকে দেন আন্দোলনকারীরা। ফলে বাতিল হয় বহু ট্রেন। শুধু রেললাইন নয়, ৫ নম্বর জাতীয় সড়কও অবরোধ করেন কুড়মি সমাজের প্রতিনিধিরা। রেল পরিষেবার পাশাপাশি সড়কপথও বন্ধ থাকায় একের পর এক বাস, ট্রাক, লরি, গাড়ি দাঁড়িয়ে পড়ে।
পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে কেন্দ্রের কাছে একাধিকবার তদ্বির করেছে রাজ্য সরকার। গত বৃহস্পতিবারই কেন্দ্রের কাছে সংশোধিত সিআরআই (CRI) রিপোর্ট রাজ্য সরকার পাঠিয়ে দেয়। তারপর শুক্রবার বিকেলে সাধারণ ও পুলিশ প্রশাসনের মাধ্যমে সেই রিপোর্টের প্রতিলিপি অবরোধকারীদের হাতেও পৌঁছয়। জেলা ও পুলিশ প্রশাসনের প্রতিনিধিদের মাধ্যমে প্রতিলিপিটি পৌঁছে দেওয়া হয় তাঁদের হাতে।
আন্দোলনকারীদের দাবি, রাজ্যের তরফে সংশ্লিষ্ট বিভাগে পাঠানো সিআরআই রিপোর্টটিতে ‘ভুল’ রয়েছে। সেই অভিযোগে পঞ্চম দিনেও অবরোধ প্রত্যাহারে নারাজ কুড়মিরা। শনিবারও দক্ষিণ-পূর্ব রেলওয়ের পুরুলিয়ার আদ্রা ডিভিশনের আদ্রা-পুরুলিয়া শাখার অবরোধস্থল কুস্তাউর স্টেশনে তুমুল বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। দাবিপূরণ না হলে সমগ্র জঙ্গলমহল স্তব্ধ করে দেওয়ার হুমকিও দেন কুড়মি প্রতিনিধিরা। যদিও বৈঠকের পর সিদ্ধান্ত বদলায়। পাঁচদিনের মাথায় অবশেষে উঠল অবরোধ। মিটল ভোগান্তি।