সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: প্রশাসনের চাপের কাছে নতি স্বীকার আদিবাসী কুড়মি (Kurmi Protest) সমাজের। ৫ দিনের মাথায় প্রত্যাহার হল অবরোধ। গত দু’দিন ধরে আন্দোলনকারীদের উপর নানারকমভাবে চাপ তৈরি করছিল প্রশাসন। রবিবার সকালের বৈঠকেও প্রশাসন স্পষ্ট করে দিয়েছিল, অবরোধ প্রত্যাহার না করলে কড়া পদক্ষেপ করা হবে। সেই বৈঠকে যদিও আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন কুড়মিরা। তবে এর কিছুক্ষণের মধ্যেই মত বদল করেন তাঁরা। তুলে নেওয়া হয় আন্দোলন।
মনে করা হচ্ছে, উৎসবের মরশুমে লাগাতার ট্রেন-জাতীয় সড়ক অবরোধ করে ক্রমশ জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছিলেন আন্দোলকারীরা। উপরন্তু প্রশাসনের তরফেও চাপ দেওয়া হচ্ছিল। তাই সমাধান সূত্র অধরা থাকলেও আন্দোলনের রাস্তা থেকে সরে এল আদিবাসী কুড়মি সমাজ।
[আরও পড়ুন: ৮ ঘণ্টা পর নড়ে উঠল পলিথিনে মোড়া খুদে! জীবন্ত শিশুকে মৃত ঘোষণা রাজ্যের সরকারি হাসপাতালের]
সারনা ধর্মের স্বীকৃতি ও তফসিলি উপজাতিভুক্ত হওয়ার দাবিতে গত পাঁচদিন ধরে পুরুলিয়া, খড়গপুরের খেমাশুলি স্টেশনে অবরোধ চালাচ্ছিলেন কুড়মিরা। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল জাতীয় সড়কও। রাজ্যের তরফে যে সিআরআই রিপোর্ট কেন্দ্রকে পাঠিয়েছিল তার উপর কমেন্ট-জাস্টিফিকেশন পছন্দ হয়নি কুড়মিদের। বরং তাঁদের একাংশ দাবি করেছিল, কুড়মিরা ভৌগোলিকভাবে জনবিচ্ছিন্ন। তারা মূলস্রোতে মিশতে ভয় পায়। এই বিষয়টি রিপোর্টে লিখতে হবে। কিন্তু বাংলার পরিস্থিতি মোটেও এরকম নয় বলে দাবি প্রশাসনের। ফলে গত কয়েকদিন ধরে দফায়-দফায় বৈঠক করেও সমাধান সূত্র বের হয়নি। রাজ্য জানিয়েছিল, চলতি মাসের ১০ তারিখ কলকাতায় মুখ্যসচিবের সঙ্গে বৈঠক হবে আন্দোলনকারীদের। কিন্তু সেই প্রস্তাবও ফিরিয়ে দেয় আদিবাসী কুড়মি সমাজ। শেষে নিজেরাই প্রশাসনিক চাপ সহ্য করতে না পেরে অবরোধ প্রত্যাহার করে নেয়।
তবে আদিবাসী কুড়মি সমাজের মূল মানতা (প্রধান নেতা) অজিতপ্রসাদ মাহাতো বলেন, “প্রশাসন আমাদের ভীষণভাবে চাপ দিচ্ছিল। প্রশাসন বলেছিল, আগামী ১০ এপ্রিল সোমবার কলকাতায় মুখ্যসচিব তাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। অবরোধস্থলে সেই চিঠি নিয়ে এসেছিল। কিন্তু আমরা সেই চিঠি ফিরিয়ে দিয়েছি। আমরা কর্মসূচি তুলে নিলাম। তবে আদিবাসী তালিকাভুক্ত করার দাবি নিয়ে আমাদের আন্দোলন চলবেই।”
[আরও পড়ুন: মা সারদার পর মেসি-মারাদোনা-পেলের সঙ্গে মমতার তুলনা, ফের বিতর্কে নির্মল মাজি]