সুরজিৎ দেব, ডায়মন্ড হারবার: মাছ ধরতে গিয়ে মাস দুই আগে বাংলাদেশ জলসীমায় আটকে গিয়েছেন এ রাজ্যের ৯৫ জন মৎস্যজীবী। তাঁদের মুক্তি নিয়ে কেন্দ্রকে আগেই পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। বিধানসভায় দাঁড়িয়ে তাঁর মন্তব্য ছিল, ''এটা আন্তর্জাতিক বিষয়, রাজ্যের কিছু করার থাকে না। এটা কেন্দ্রেরই দেখার কথা।'' মঙ্গলবার তিনি নিজে স্থানীয় বিধায়কের সঙ্গে ফোনে কথা বলে মৎস্যজীবীদের ফেরানোর আশ্বাস দিলেন। বিধায়কের মাধ্যমেই স্বজনহারা পরিবারগুলিকে তাঁর বার্তা, দ্রুত মুক্তির ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এ বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী নিজে উদ্যোগী হওয়ায় আশার আলো দেখছে কাকদ্বীপের পরিবারগুলি।
ঘটনা গত অক্টোবরের। সেসময় ইলিশ শিকারে নিষেধাজ্ঞার মরশুম চলছিল। অবৈধভাবে ইলিশ ধরা রুখতে বঙ্গোপসাগরে টহল চলছিল বাংলাদেশের নৌবাহিনীর। বিএনএস শহিদ আখতার উদ্দিন নামে একটি জাহাজ নিযুক্ত ছিল এই কাজে। গত ১৪ অক্টোবর তার রাডারে ধরা পড়ে সন্দেহজনক দুটি মাছ ধরার ট্রলার। ভালোভাবে পর্যবেক্ষণের পর বাংলাদেশের নৌবাহিনী দাবি করে, ট্রলার দুটিতে ভারতীয় পতাকা ছিল। এরপর ওই জলসীমাতেই ট্রলার দুটিকে আটক করা হয়। পরে পটুয়াখালি বন্দরে নিয়ে যাওয়া হয় মোট ৯৬ জন মৎস্যজীবী-সহ কাকদ্বীপের ওই দুটি ট্রলারকে। এর মধ্যে প্রাণে বাঁচতে একজন জলে ঝাঁপ দেন। তাঁর পরিবারকে ২ লক্ষ টাকা আর্থিক সাহায্য ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। বাকি ৯৫ জন মৎস্যজীবীকে স্থানান্তরিত করা হয় কলাপাড়া থানায়। অন্যদিকে, মাছ ধরতে ভারতীয় জলসীমাতেও আটকে পড়েন ৯০ জন মৎস্যজীবী।
এই মৎস্যজীবীদের মুক্তির জন্য মুখ্যমন্ত্রী কেন্দ্রকে উদ্যোগ নেওয়ার আবেদন জানিয়েছেন। কিন্তু তাতে বিশেষ সাড়া মেলেনি। এবারম মুখ্যমন্ত্রী নিজেই উদ্যোগী হলেন। সূত্রের খবর, কাকদ্বীপের তৃণমূল বিধায়ক মন্টুরাম পাখিরাকে ফোন করেন স্বরাষ্ট্রসচিব নন্দিনী চক্রবর্তী। জানান, মুখ্যমন্ত্রী মৎস্যজীবীদের বিষয়ে খোঁজখবর নিতে চান। এরপর মুখ্যমন্ত্রী নিজে কথা বলেন মন্টুরাম পাখিরার সঙ্গে। বাংলাদেশে আটকে পড়া মৎস্যজীবীদের পরিবারগুলো কেমন আছে, তা জানতে চান। তারপর বিধায়ককে জানান, পরিবারগুলির দুশ্চিন্তার কারণ নেই। দ্রুত আপনজনদের ফিরে পাবেন তাঁরা। সেই ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তাতেই আশার আলো দেখছেন আত্মীয়-পরিজনরা।