শান্তনু কর, জলপাইগুড়ি: হাসপাতালে নেই নির্দিষ্ট জায়গা। নেই নার্স, চিকিৎসক, কর্তব্যরত স্বাস্থ্যকর্মী। একপ্রকার কর্মীশূন্য অবস্থা। এহেন ‘নেই’ হাসপাতালের চূড়ান্ত অব্যবস্থার ছবি এবার সামনে চলে এল। প্রসূতি বিভাগের শয্যাতেই পুত্র সন্তানের জন্ম দিলেন জলপাইগুড়ির (Jalpaiguri) ভেন্টিয়ার বাসিন্দা নুরিনা পরভীন। দীর্ঘক্ষণ ওই অবস্থাতেই পড়ে মা এবং সদ্যোজাত। মুখে মল ঢুকে শেষমেশ মৃত্যু (Death) হল সদ্যোজাতের! অভিযোগ, নার্সদের উদাসীনতায় শেষ পর্যন্ত বাঁচানো যায়নি সদ্যোজাতকে। আত্মীয়দের অভিযোগ, ডেকে ডেকেও দেখা মেলেনি নার্সদের। উলটে স্বাস্থ্যকর্মীদের দুর্ব্যবহারের শিকার হতে হয় তাঁদের। এমনই চাঞ্চল্যকর অভিযোগে শোরগোল ধূপগুড়ি গ্রামীণ হাসপাতালে।
ফের বিতর্কে ধূপগুড়ি (Dhupguri) গ্রামীণ হাসপাতাল। কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগ স্বাস্থ্যকর্মী থেকে হাসপাতালে থাকা আয়াদের বিরুদ্ধে। পুজোর রাত হাসপাতালে প্রসূতি বিভাগ এবং সাধারণ বিভাগের পাশে থাকা নার্সিং স্টেশন ও জেনারেল নার্সিং স্টেশনে স্বাস্থ্যকর্মীর সংখ্যা কার্যত শূন্য। প্রসূতি বিভাগেরও একই পরিস্থিতি। এই অবস্থায় ধূপগুড়ি গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি হন ধূপগুড়ির ভেন্টিয়ার নুরিনা পারভীন। বৃহস্পতিবার তাঁর প্রসব বেদনা (Labour pain) ওঠে। কাতরাতে থাকেন তিনি। নার্স, আয়াদের ডাকলেও সাড়া মেলেনি বলে অভিযোগ। বাড়ির লোকজনও তাঁদের ডেকে সাড়া পাননি, দুর্ব্যবহার পেয়েছেন বলে অভিযোগ।
[আরও পড়ুন: ‘পুরুষ কর্মীদের বিউটি পার্লারে মুসলিম মহিলাদের যাওয়া উচিত নয়’, নিদান মৌলবীর]
যন্ত্রণায় চিৎকার করতে করতেই নুরিনা বেডেই সন্তান প্রসব করেন। ওই অপরিচ্ছন্ন অবস্থাতেই পড়ে ছিল মা-সন্তান। সদ্যোজাতর মুখে মল ঢুকে যায়, শ্বাসকষ্ট হতে থাকে তার। শেষমেশ বিপদ বুঝে সদ্যোজাতকে জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে এদিন ভোরে মৃত্যু হয় সদ্যোজাতের। নুরিনার শ্বশুরের অভিযোগ, ”যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে, নার্সদের ডাকছে। কেউ কোনও সাড়া দিচ্ছে না। অথচ নার্সরা নিজেরা চা খেতে খেতে গল্পে মত্ত। আমাদের সঙ্গেই উলটে খারাপ ব্যবহার করলেন ওঁরা।” এর পর রোগীর আত্মীয়রা সংবাদমাধ্যমকে ফোন করে ডাকার কথা বললে, তড়িঘড়ি স্বাস্থ্যকর্মীরা লেবার ওয়ার্ডে যান বলে দাবি। যদিও কর্তব্যে গাফিলতি ও কর্মীসংখ্যা কম থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন কর্তব্যরত চিকিৎসকরা।