জ্যোতি চক্রবর্তী, বনগাঁ: টানা ১৭ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে শিয়ালদহ-বনগাঁ (Sealdah-Bongaon) শাখায় রেল অবরোধ তুলে দিল পুলিশ। সন্ধে সাড়ে সাতটা নাগাদ অবরোধ উঠে যায়। পুলিশের হস্তক্ষেপে তা প্রত্যাহার করে নিলেও রেলের তরফে আশ্বাসের অপেক্ষায় রয়েছেন অবরোধকারীরা। তবে করোনা (Coronavirus) আবহে এত মানুষ ঠাকুরনগর স্টেশন, প্ল্যাটফর্মে জমায়েত হওয়ায় সংক্রমণের ঝুঁকি ছিল। চিন্তিত ছিল রেল কর্তৃপক্ষও। এমনকী রাতে থাকার জন্য অবরোধকারীরা বাড়ি থেকে কম্বল নিয়ে আসেন। দাবি ছিল একটাই, তাঁদের দাবিমতো ট্রেন চালাতে হবে। যতক্ষণ না তা চালু হবে, ততক্ষণ তাঁরা অবরোধ চালিয়ে যাবেন।
বনগাঁ থেকে শিয়ালদহ যাবার সকালের ডাউন প্রথম ও দ্বিতীয় ট্রেনে করে কলকাতা-সহ জেলার বিভিন্ন প্রান্তে ফুল নিয়ে যান কয়েকশো বিক্রেতা। করোনার প্রভাব বাড়তে থাকায় ট্রেন চালানোর ক্ষেত্রে নতুন নির্দেশিকা জারি হয়েছে। ভোর ৫ টা থেকে সর্বত্র ট্রেন চলছে। কিন্তু শিয়ালদহ-বনগাঁ শাখার ঠাকুরনগরে (Thakurnagar) দিনের প্রথম দুটি ডাউন ট্রেনের সময় ছিল ভোর ৩টে থেকে ৪.৪০এর মধ্যে। কিন্তু সেসময় ট্রেন চলছে না। তা জেনেই ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন ঠাকুরনগরের ফুল ব্যবসায়ীরা। ওই ট্রেন দুটি চালানোর দাবিতে ভোর থেকে ঠাকুরনগর স্টেশনে অনির্দিষ্টকালের জন্য রেল অবরোধ শুরু করেন তাঁরা। বুধবার রাত দুটো থেকে ঠাকুরনগর রেল গেটে লাইনের উপর ফুলের বোঝা রেখে অবরোধ (Rail Block) শুরু করে মহিলা-পুরুষ ব্যবসায়ীরা।যতক্ষণ না ট্রেন চলবে তারা অবরোধ তুলবেন না বলে জানিয়েছেন তারা।
[আরও পড়ুন: বিজেপি ছেড়ে অন্য দলে যোগ দিচ্ছেন? মুখ খুললেন ‘অভিমানী’ তারকা বিধায়ক]
অবরোধকারীদের বক্তব্য, ফার্স্ট ট্রেন এবং সেকেন্ড ট্রেনে তাঁরা ফুল নিয়ে কলকাতায় যান। সড়কপথে গেলে তাঁদের অনেক বেশি টাকা খরচা হয়ে যায়৷ ফুলের ব্যবসা করে তাদের পেট চলে। সকালের দু’টো ট্রেন না চললে তারা কলকাতায় যেতে পারবেন না। ফলে না খেয়ে মরতে হবে। আন্দোলনকারী মহিলারা জানিয়েছেন, বুধবার রাত দুটো নাগাদ তাঁরা প্রথম ট্রেন ধরার জন্য ঠাকুরনগর স্টেশনে এসে জানতে পারেন, ট্রেন বন্ধ। ভোর ৫টা থেকে পাওয়া যাবে। এরপরই ক্ষেপে যান সকলে। রেল লাইনের উপর ফুলের বোঝা ফেলে চলতে থাকে অবরোধ। বেলা বাড়তে থাকায় হাজার খানেক ফুল ব্যবসায়ী অবরোধের শামিল হন।
[আরও পড়ুন: জোরাল মতুয়া অস্বস্তি, ‘বিদ্রোহী’ শান্তনু ঠাকুরের ডাকা রুদ্ধদ্বার বৈঠক নিয়ে মুখ খুললেন দিলীপ ঘোষ]
স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন ও রেল কর্তারা অবরোধকারীদের সঙ্গে কথা বলে তা তুলে দেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু কোনও ফল না হওয়ায় এদিন দুপুরে ঠাকুরনগর স্টেশনে গিয়ে কথা বলেন বনগাঁর এসডিপিও অশেষ বিক্রম দস্তিদার, ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট নাজিম আলি মুক্তি। পরে সন্ধে সাড়ে সাতটা নাগাদ পুলিশ গিয়ে তাঁদের সঙ্গে কথা বলেন, অবরোধ তুলতে হস্তক্ষেপ নেয়। তাতেই ওঠে অবরোধ।