মণিরুল ইসলাম, উলুবেড়িয়া: হাওড়ার ছাত্রনেতা আনিস খানের (Anis Khan) দেহের দ্বিতীয় ময়নাতদন্ত ঘিরে ফের জটিলতা। পূর্বসূচি অনুযায়ী, সোমবার সকালে সিট (SIT) সদস্যরা আমতার খাঁ পাড়ায় গিয়ে কবর থেকে দেহ তোলার প্রস্তুতি নিলেও থমকে গেল কাজ। জেলা আদালতের বিচারক ঘটনাস্থলে না এলে কবর থেকে দেহ তোলা যাবে না। আনিসের দাদা সাবির খানের দেওয়া নতুন শর্তে বিপাকে সিট। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে দেহ তুলে ময়নাতদন্তে না পাঠানো হলে সমস্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের।
এটাই প্রথম নয়, এর আগেও আনিস কাণ্ডের জল গড়িয়েছে অনেক দূর। দ্বিতীয়বার ময়নাতদন্তের (Post Mortem) জন্য আনিসের দেহ তুলতে গিয়ে বাধা পেতে হয় সিটকে। আনিসের দাদা সাবির খান বলেন, “আমরা তো আদালতের নির্দেশ মেনে বলেছিলাম দেহ তুলতে দেব। একটু সময় চেয়েছিলাম। সেটা সিট দিতে চাইছে না কেন?” ওইদিনই আনিসের বাবা সালাম খান বলেছিলেন, “সোমবার দিনের আলোয় গ্রামবাসী, বিচারক এবং আইনজীবীর উপস্থিতিতে মৃতদেহ কবর থেকে তোলা হোক ময়নাতদন্তের জন্য।” রবিবার সিটের নোটিস পেয়ে শেষমেশ দ্বিতীয়বার ময়নাতদন্তে রাজি হয় তাঁর পরিবার। ঠিক হয়, সোমবার কবর থেকে দেহ তুলে এসএসকেএম হাসপাতালে ময়নাতদন্ত করা হবে।
[আরও পড়ুন: খাস কলকাতায় স্বর্ণ ব্যবসায়ীর রহস্যমৃত্যু, পা বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার দেহ]
সেইমতো সোমবার সকালেই সিট সদস্যরা পৌঁছে যান আমতায়। প্রয়োজনীয় কাগজপত্রে সইসাবুদের পর যেখানে আনিসের দেহ যেখানে কবর দেওয়া হয়েছিল, সেখানে যান। সঙ্গে ছিলেন ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ, আইনজীবীও। দেহ তোলার প্রস্তুতিও শুরু করেন তাঁরা। তা দেখতে গ্রামবাসীরাও ভিড়ও জমান। তবে শেষমুহূর্তে আনিসের দাদা সাবির খান এসে কাজে বাধা দেন বলে অভিযোগ। সাবির খান জানিয়েছেন, জেলা জজ ঘটনাস্থলে উপস্থিত না হলে তাঁরা দেহ তুলতে দেবেন না। জেলা আদালতের বিচারকের কাছে আবেদন জানানো হয় বলে খবর। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, দেহটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তুলে এসএসকেএমে পাঠাতে না পারলে, ময়নাতদন্তের কাজে যথেষ্ট জটিলতা তৈরি হবে। সঠিক রিপোর্ট পেতেও সমস্যা হবে।
[আরও পড়ুন: ‘আমায় ব্রেস্ট ট্রান্সপ্লান্ট করতে বলা হয়েছিল’, বিস্ফোরক দীপিকা পাড়ুকোন!]
গত ১৮ তারিখ আমতার (Amta) খাঁ পাড়ায় বামপন্থী ছাত্রনেতা আনিস খানের বাড়িতে ঢুকে পুলিশ তাঁকে হুমকি দেয় বলে অভিযোগ। এরপর উভয়পক্ষের কথা কাটাকাটির মাঝেই দোতলার খোলা ছাদ থেকে পড়ে আনিসের মৃত্যু হয় বলে অভিযোগ ওঠে। তা নিয়ে উত্তাল হয়ে উঠেছে রাজ্য রাজনীতি। তদন্ত প্রক্রিয়া নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে অনেক। এই মুহূর্তে রাজ্য পুলিশের তৈরি সিট আনিস হত্যার তদন্ত করছে। যদিও পরিবারের এই তদন্তে ভরসা নেই। তাঁরা সিবিআই তদন্তের দাবিতে অনড়।