হাতিদের খিদে মেটাতে তৈরি হচ্ছে ভাণ্ডারা, মিলবে অন্তত ৩৯ রকমের খাবার

09:48 AM Mar 29, 2023 |
Advertisement

অর্ণব দাস: খাবারের খোঁজে হাতির হন্যে হয়ে ঘোরার দিন শেষ! এবার দাঁতালদের জন্য ভাণ্ডারা তৈরি করছে রাজ্য বনদপ্তর। সেখানে থাকবে হাতিদের পছন্দের খাবার। ফলে লোকালয়ে হাতির (Elephant) উৎপাতের আতঙ্ক কমবে। অভিজ্ঞতার নিরিখে খাদ্যতালিকাও তৈরি করেছেন বিশেষজ্ঞরা।

Advertisement

জঙ্গল সংলগ্ন এই ভাণ্ডারাগুলিতে মিলবে কলা, তরমুজ, চালতা, মরশুমি সবজি-সহ মোট ৩৯ রকম খাদ্য। থাকবে পানীয় জলের ব্যবস্থা। এ বিষয়ে বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, ‘‘রাজ্যে হাতির সংখ্যা অনেক বেড়ে গিয়েছে। তাই হাতির খাবারের জন্য উন্নত প্রযুক্তিতে খাদ্যভাণ্ডার তৈরি করা হবে। এ বিষয়ে প্রাথমিক পর্যায়ে পরিকল্পনা হয়ে গিয়েছে।’’ একইসঙ্গে বন্যপ্রাণীর যাতায়াতের জন্য মোট ১৪টি করিডরও তৈরি উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলেও খবর।

মূলত, ঝাড়খণ্ড থেকে খাবারের খোঁজে হাতি দক্ষিণবঙ্গের বেশ কয়েকটি জেলায় প্রবেশ করে। মাঝেমধ্যে তারা আবার লোকালয়ে ঢুকে যায়। দলমার দাঁতালদের আতঙ্কে গৃহহীন হয়ে পড়েন মানুষ। বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, মেদিনীপুর-সহ দক্ষিণবঙ্গের বেশ কিছু জঙ্গল অধ্যুষিত জেলায় মাঝেমধ্যেই হাতির উপদ্রব দেখা যায়। তাদের তাণ্ডবে শস্যও নষ্ট হয়। কয়েকদিন আগে উত্তরবঙ্গে হাতির আক্রমণে এক মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে।

[আরও পড়ুন: রাজভবনে এবার প্রবেশাধিকার সাধারণ মানুষেরও, মমতার হাতে চাবি দিলেন রাষ্ট্রপতি]

এছাড়াও হাতির দলের হানায় মাঝেমধ্যেই অনেক মানুষের মৃত্যুর খবরও শোনা যায়। তাই দাঁতালদের এই দাপাদাপি কমিয়ে সংরক্ষণ করতে এবং প্রাণহানি রুখে সম্পত্তি নিরাপদে রাখতে ভাণ্ডারা তৈরির অভিনব পরিকল্পনা নিয়েছে বনদপ্তর। দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, বনাঞ্চলেই যাতে হাতি পর্যাপ্ত খাদ্যের জোগান পায় তার জন্য প্রাথমিকভাবে পাঁচটি এলাকায় ভাণ্ডারা তৈরির ভাবনা নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে লালগড়, বেলপাহাড়ি এবং তপোবন এলাকার জঙ্গল সংলগ্ন এলাকা চিহ্নিত করা হয়েছে। সেখানে বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে বৈদ্যুতিক তারের ফেন্সিংয়ের ভিতরে থাকবে হাতির খাবারের ব্যবস্থা। তৈরি করা হবে জলাশয়ও।

পর্যাপ্ত খাবারের জন্য সেখানে কলা গাছ, তরমুজ খেত, চালতা গাছ থাকবে। পাশাপাশি চাষ করা হবে মরশুমি সবজিও। সবমিলিয়ে ৩৯ রকম খাদ্য থাকবে এই ভাণ্ডারায়। আগামী ছ’মাসের মধ্যে এই প্রকল্পের কাজ শুরু করা হবে বলেও জানা গিয়েছে। একইসঙ্গে বন্যপ্রাণীর নিরাপদে যাতায়াতের জন্য করিডর তৈরিরও উদ্যোগ নিয়েছে বনদপ্তর। মোট ১৪টি করিডর তৈরি করা হবে বলে দপ্তর সূত্রে খবর। আপাতত ৭টির পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এক-একটি করিডর প্রায় সাত-আট কিলোমিটার লম্বা হবে।

মূলত উত্তরবঙ্গেই এই করিডরগুলি তৈরি হবে। এছাড়াও ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, পশ্চিম মেদিনীপুরেও তৈরি করা হবে কয়েকটি করিডর। করিডরগুলিতেও থাকবে বৈদ্যুতিক তারের ফেন্সিং। এই করিডর দিয়েই বন্যপ্রাণীরা নিরাপদে গভীর জঙ্গলে চলে যেতে পারবে। পাইলট প্রজেক্ট হিসাবে জলদাপাড়া থেকে বক্সা পর্যন্ত প্রথম করিডরটি তৈরি হবে। যেটি দু’টি চা বাগানের মধ্যে দিয়ে যাবে। এই করিডর তৈরির কাজ আগামী তিনমাসের মধ্যে শুরু হবে বলেই খবর। বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক জানান, ‘‘আমরা চাই বন্যপ্রাণ রক্ষা হোক, মানুষও নিরাপদে থাকুক। সেই কারণেই এই দুই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’’

[আরও পড়ুন: রাজভবনে এবার প্রবেশাধিকার সাধারণ মানুষেরও, মমতার হাতে চাবি দিলেন রাষ্ট্রপতি]

Advertisement