সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার কাঁধে নিয়োগ দুর্নীতি মামলার তদন্তভার যাওয়ার পর থেকে গ্রেপ্তার একের পর এক মাথা। হুগলির যুব তৃণমূল নেতা কুন্তল ঘোষ (Kuntal Ghosh) গ্রেপ্তারির পর থেকে বারবার শিরোনামে জায়গা করে নিয়েছেন গোপাল দলপতি। সম্প্রতি সামনে এসেছে তাঁর স্ত্রী তথা অভিনেত্রী হৈমন্তী গঙ্গোপাধ্যায়ের নামও। তবে শোরগোলের মাঝে আচমকা উধাও হয়ে যান গোপাল দলপতি। অবশেষে খোঁজ মিলল গোপালের। এখনও ‘নিখোঁজ’ হৈমন্তী। গোপালের দাবি, একটি মামলা সংক্রান্ত প্রয়োজনীয়তায় বর্তমানে দিল্লিতে রয়েছেন। সিবিআই কেন্দ্রীয় দপ্তরে হাজিরা দিতে বললে, যেকোনও সময় যেতে পারেন বলেও জানান। হৈমন্তীর সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদের প্রক্রিয়া প্রায় শেষের পথে বলেই দাবি তাঁর। ক্ষোভ উগরে দেন নিয়োগ দুর্নীতিতে ধৃত হুগলির যুব তৃণমূল নেতা কুন্তল ঘোষের বিরুদ্ধেও।
পূর্ব মেদিনীপুরের ভগবানপুরের বাসিন্দা গোপাল দলপতিই (Gopal Dalapati) যে আদতে আরমান, তা স্বীকার করে নিয়েছেন। তাঁর আরও দাবি, উইনার্স জোন এন্টারটেনমেন্ট এলএলপি’র মতো একাধিক কোম্পানি রয়েছে। উইনার্স জোন এন্টারটেনমেন্ট এলএলপি’র রেজিস্ট্রেশন হয়ে গিয়েছিল। তবে কাজ শুরু হয়নি। রেজিস্ট্রেশন হয়েছিল আরমান গঙ্গোপাধ্যায়ের নামেই। নিয়োগ দুর্নীতিতে ধৃত কুন্তল ঘোষের সঙ্গে তাঁর পরিচয়ের সত্যতাও স্বীকার করেছেন গোপাল। তাঁর দাবি, ২০১৭-১৮ সালে যোগাযোগ হয়েছিল। তবে ব্যবসা সংক্রান্ত কোনও কথাবার্তা হয়নি। তাহলে কুন্তলের সঙ্গে ঠিক কী সম্পর্ক ছিল তাঁর, সে বিষয়ে একটি কথাও বলেননি গোপাল। রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের (Partha Chatterjee) সঙ্গে কুন্তলের যোগসূত্র পাওয়া গিয়েছে। তবে পার্থর সঙ্গে তাঁর কোনও সম্পর্ক ছিল না বলেই দাবি গোপালের।
[আরও পড়ুন: ‘আমি ফেঁসে গিয়েছি’, গ্রামের বাড়িতে দাঁড়িয়ে মায়ের কাছে দাবি গোপাল দলপতির]
প্রকাশ্যে আসা তথ্য অনুযায়ী, গোপাল দলপতির দু’টি বিয়ে। প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদের পর হাওড়ার বাকসাড়ার বাসিন্দা হৈমন্তীর (Haimanti Ganguly) সঙ্গে বৈবাহিক জীবন শুরু হয় গোপালের। তার আগে একে-অপরের প্রেমে পড়েন। একসময় টালিগঞ্জ, বেহালার ফ্ল্যাটে একসঙ্গে থেকেছেন দু’জনে। তবে গোপালের দাবি, বর্তমানে বৈবাহিক সম্পর্ক উষ্ণতা হারিয়েছে। আপাতত বিবাহবিচ্ছেদের আইনি প্রক্রিয়া প্রায় শেষ পর্যায়ে। তা সত্ত্বেও এখনও কেন গোপাল ওরফে আরমানের ব্যাংক অ্যাকাউন্টের নমিনি হৈমন্তী, তা অবশ্য স্পষ্ট নয়। শোনা গিয়েছে, হৈমন্তীর সঙ্গে বিয়ের পরই নাকি গোপাল হয়েছিলেন আরমান। আবার অন্য একটি সূত্র বলছে, নিজের নাম বদল করে ভুয়ো অর্থলগ্নি সংস্থা খুলেছিলেন গোপাল। তবে গোপাল থেকে আরমান হয়ে ওঠার বিষয়ে তাঁর বৃদ্ধা মা কিছুই জানেন না। গোপালের দাবি, তাঁর মা গ্রাম্য গৃহবধূ। জন্মের পর থেকে ছেলেকে ‘গোপাল’ নামে ডাকেন। তাই গোপালই জানেন। আরমান হয়ে ওঠার কাহিনি তাঁর জানার কথা না।
[আরও পড়ুন: যৌনসুখের বিনিময়ে পাক চরকে মিসাইল টেস্টের তথ্য পাচার, গ্রেপ্তার DRDO আধিকারিক]
নিজের পাশাপাশি বারবার হৈমন্তীকেও নির্দোষ বলেই দাবি করেছেন গোপাল। দাবি, নিয়োগ দুর্নীতিতে ধৃত কুন্তল স্রেফ নিজের দিক থেকে নজর ঘোরাতে গোপাল এবং হৈমন্তীকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছেন। গোপাল দলপতির চ্যালেঞ্জ, প্রয়োজনে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার তলবে সাড়া দিয়ে সমস্ত তথ্য দেবেন।