সুমন করাতি, হুগলি: এবারের সাধারণতন্ত্র দিবসে (Republic Day) দিল্লিতে বিশিষ্ট অতিথি হিসেবে আমন্ত্রিত চুঁচুড়ার কিশোর বিজ্ঞানী অভিজ্ঞানকিশোর দাস। শুক্রবার কেন্দ্রের বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রক থেকে অভিজ্ঞানকে ইমেল মারফত আমন্ত্রণপত্র (Invitation Card)পাঠানো হয়েছে। স্বভাবতই খুশির হওয়া চুঁচুড়ার নারকেল বাগানের দাস পরিবারে। অভিজ্ঞান এই বয়সেই নিজের অভিনব ভাবনা, মেধার জোরে বেশ কয়েকটি যন্ত্র উদ্ভাবন করেছে। এর জন্য আগেই ‘জাতীয় মেধাসম্পদ পুরস্কার’ পেয়েছিল। পড়াশোনার পাশাপাশি তার মৌলিক গবেষণা চলছে। এবার আরও বড় জায়গা থেকে ডাক এল তার। ২৬ জানুয়ারি দিল্লির কর্তব্যপথে সাধারণতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত হুগলির এই কিশোর বিজ্ঞানী।
দেশের ৭৫ তম সাধারণতন্ত্র দিবসে দিল্লির অনুষ্ঠানে ভারতের রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী-সহ প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন ফ্রান্সের রাষ্ট্রপতি ইমানুয়েল ম্যাক্রঁ (Emmanuel Macron)। আর তাঁদের সঙ্গেই অতিথি আসনে বসে কুচকাওয়াজ দেখবেন ১৭ বছরের কিশোর বিজ্ঞানী বর্তমানে হুগলি (Hooghly) কলেজিয়েট স্কুলের একাদশ শ্রেণির ছাত্র। এই অল্প বয়সেই অভিজ্ঞানের উদ্ভাবনী এবং আবিষ্কৃত একাধিক যন্ত্র ভারতের সেরা বিজ্ঞানীদের নজর কেড়েছে। গত অক্টোবরে ভারত সরকারের বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রক থেকে পেয়েছে ‘জাতীয় মেধাসম্পদ পুরস্কার।’ দিল্লির (Delhi) বিজ্ঞান ভবনে তার হাতে পুরস্কার তুলে দিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পীযূষ গোয়েল।
[আরও পড়ুন: খাস কলকাতায় ফের আক্রান্ত পুলিশ, শব্দ তাণ্ডব থামাতে গিয়ে জুটল মার]
অতিমারীর সময় অভিজ্ঞান তৈরি করেছিল ‘টাচ ফ্রি পোর্টেবল অটোমেটিক হ্যান্ড স্যানিটাইজিং সিস্টেম’। ভারত সরকারের নীতি আয়োগও উচ্চ প্রশংসা করেছিল অভিজ্ঞানের এই আবিষ্কারের। অভিজ্ঞান জানায় যে, এই মুহূর্তে তার আরও একাধিক উদ্ভাবন মেধাস্বত্বর জন্য ইন্ডিয়ান পেটেন্ট অফিসের বিবেচনাধীন। এই কিশোর বিজ্ঞানীর উদ্ভাবিত ‘কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা’ নির্ভর ‘উচ্চমানের শিক্ষা নিশ্চিতকরণ’ প্রশংসা কুড়িয়েছিল কেন্দ্রীয় ইলেকট্রনিক্স এবং তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রকের। ২০১৯ সালে কলকাতায় অনুষ্ঠিত পঞ্চম ‘ইন্ডিয়া ইন্টারন্যাশনাল সাইন্স ফেস্টিভ্যালে’ তার উদ্ভাবিত দূষণরোধী এক যন্ত্র ‘সেফ পলিউট্যান্ট’ জিতে নেয় প্রথম পুরস্কার।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রক সূত্রে অভিজ্ঞান যে আমন্ত্রণপত্র পেয়েছে তাতে এই কিশোর বিজ্ঞানীর কাজের ভূয়সী প্রশংসা করা হয়েছে। তাতে লেখা, “আপনি ভারত সরকার স্বীকৃত একজন বিশিষ্ট মেধাস্বত্ব অধিকারী। ৭৫ তম দিবসের এই ঐতিহাসিক অনুষ্ঠানের সাক্ষী হওয়ার জন্য আপনাকে বিশিষ্ট অতিথি হিসেবে আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে।” এই আমন্ত্রণ পেয়ে স্বভাবতই খুশি অভিজ্ঞান ও তার বাবা-মা। অভিজ্ঞান জানায়, “যে কোনও স্বীকৃতি পরবর্তী কাজের প্রেরণা যোগায়। ভারত সরকারের কাছ থেকে এই মহার্ঘ আমন্ত্রণ পেয়ে আমি গর্বিত। আগামী দিনে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) নিয়ে গবেষণা করার ইচ্ছে আছে। আপাতত, আগামী বছরের জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষার প্রস্তুতিতে মনোযোগ দিচ্ছি।”
[আরও পড়ুন: রক্ত কম, মেরুদন্ডের নিচের হাড়ে চিড়! আজ এমআরআই মদন মিত্রের]
অভিজ্ঞানের বাবা অনিন্দ্য দাস পেশায় সিএজি-র একজন আধিকারিক। অনিন্দ্যবাবু জানান,” সাধারণতন্ত্র দিবসে বিশিষ্ট অতিথির সম্মান পাওয়া খুবই গর্বের বিষয়। ছেলের সৌজন্যে আমরা এই ঐতিহাসিক অনুষ্ঠানের সাক্ষী হতে পারব। এটা প্রাপ্তি পুত্রের ধারাবাহিক কাজের স্বীকৃতি। ও আরও উন্নতি করুক জীবনে, এই প্রার্থনা করি।”