shono
Advertisement

স্বপ্নাদেশেই বদলে যায় দেবীর রূপ, বনগাঁর দত্তবাড়িতে মা বিরাজ করেন 'বিড়াল হাতি' রূপে

কালের নিয়মে জাঁকজমক হারিয়েছে বনগাঁর দত্তবাড়ির পুজো।
Posted: 02:31 PM Sep 20, 2022Updated: 02:31 PM Sep 20, 2022

জ্যোতি চক্রবর্তী, বনগাঁ: নীলকণ্ঠ পাখি উড়িয়ে বিসর্জনের রীতি ছিল শতাব্দীপ্রাচীন বনগাঁর দত্তবাড়ির পুজোয় (Durga Puja 2022)। দত্তবাড়ির প্রতিমা নিরঞ্জন হলেই বনগাঁর অন্য বাড়ি ও পারিবারিক পুজোর প্রতিমা বিসর্জন দেওয়ার প্রথা কয়েক দশক ধরে প্রচলিত ছিল ৷ আর এই দত্ত পরিবারের হাত ধরেই বনগাঁয় (Bangao) প্রথম দুর্গাপুজোর প্রচলন হয়েছিল। কালের নিয়মে পুজোর পরিধি ছোট হয়ে এলেও বনগাঁ দত্তপাড়ার দত্তবাড়ির পরিচিতি আজও যথেষ্ট রয়েছে।

Advertisement

পরিবারের প্রতিষ্ঠাতা কালনীর দত্ত ছিলেন প্রতাপাদিত্যের রাজস্ব সংগ্রাহক। যশোরের বাগআঁচড়া গ্রামে তাঁর বসত ছিল। সেখান থেকে তাঁর বংশধরেরা প্রথমে সুকপুকুরিয়া গ্রামে আসেন। পরবর্তীতে বনগাঁয় বসবাস শুরু করেন দত্তরা। আনুমানিক ১৮২০ সালে বনগাঁর দুর্গোৎসবের সূচনা হয়েছিল এই দত্তবাড়িতে। পুজোমণ্ডপের সামনে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের প্রচলন এঁরাই প্রথম করেন। অতীতের সেই ঐতিহ্য আজ আর নেই। একে একে পরিবারের সকলেই কর্মসূত্রে বনগাঁ ছেড়েছেন। পুজোয় পরিবারের কেউ আর আজ আসেন না৷ স্থানীয়দের উদ্যোগেই সংস্কার হয় সেই প্রাচীন দুর্গামন্দির। সেখানেই আজও পূজিত হন দেবী দুর্গা। দত্ত পরিবারের পুজো আজ সর্বজনীন পুজোয় পরিণত হয়েছে।

[আরও পড়ুন: দুর্নীতি করে পাওয়া স্কুলের চাকরি যাবেই, সাফ বার্তা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের]

কথিত আছে, রাজা সীতারাম রায়ের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ছিলেন সূর্যনারায়ণ দত্ত। আনুমানিক ১৭১৪ খ্রিস্টাব্দে মোঘলদের কাছে সীতারামের পরাজয় হলে যশোর থেকে বনগাঁয় চলে আসেন সূর্যনারায়ণ। ইচ্ছামতী-তীরে বসবাস শুরু করেন। সূর্যনারায়ণ দত্তর পুত্রস্বরূপ নারায়ণের আমলেই পরিবারের শ্রীবৃদ্ধি হতে থাকে। যদিও এ নিয়ে নানা মতপার্থক্য রয়েছে।

বনগাঁর দত্তবাড়ির পুজো নিয়ে নানা কাহিনি রয়েছে। মূলত দেবীদুর্গার দশ হাত হলেও দত্তবাড়ির দুর্গা বিড়াল হাতি। অর্থাৎ দুর্গার বিড়ালের মতো ছোট দু’টি হাত। কোন এক বছর পরিবারে কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে রাজবাড়িতে পুজো বন্ধ থাকে। সেই সময় রাজবাড়ির বড়মা স্বপ্নাদেশ পান দেবীর বিড়াল হাতি রূপের। সেই রূপেই দত্তবাড়িতে পুজো হয়। মহালয়া থেকেই পুজো শুরু হত। দত্তবাড়িতে নির্দিষ্ট এক ঘরে বসত চণ্ডীঘট। দশমীতে নৌকায় করে দেবী বিসর্জন হত।

দত্তপাড়ার এক বৃদ্ধ বাসিন্দা বলেন, ‘‘শোনা যায় কৃষ্ণনগরের রাজা কৃষ্ণচন্দ্রর সঙ্গে দত্ত পরিবারের যোগাযোগ ছিল। প্রতিবছর পুজোয় দত্তরা রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের বাড়িতে যেতেন।’’ পুজোর অস্তিত্ব টিকে থাকলেও অতীতের জৌলুস হারিয়েছে দত্তবাড়ির পুজো। যাঁদের হাত ধরে বনগাঁয় পুজোর শুরু সেই পুজোয় আজ অস্তিত্ব সংকটে। স্থানীয়রা চাঁদা তুলে কোনরকমে টিকিয়ে রেখেছেন পুজোটি।

[আরও পড়ুন: কর্মরত অবস্থায় টেলিভিশনে সাক্ষাৎকার দিতে পারেন কি বিচারপতি? শুরু তরজা]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement