shono
Advertisement

দেশকে ব্রিটিশ শাসনমুক্ত করতে শুরু আরাধনা, আজও স্বমহিমায় ঝালদার এই কালীপুজো

এই পুজোর সঙ্গে যুক্ত রয়েছে ঝালদা থানাও। The post দেশকে ব্রিটিশ শাসনমুক্ত করতে শুরু আরাধনা, আজও স্বমহিমায় ঝালদার এই কালীপুজো appeared first on Sangbad Pratidin.
Posted: 10:04 AM Oct 24, 2019Updated: 10:15 AM Oct 24, 2019

সুমিত বিশ্বাস,পুরুলিয়া: ব্রিটিশ পুলিশের শাসন থেকে দেশকে মুক্ত করতে যে পাহাড়ে কালীপুজোর আরাধনা করেছিলেন বিপ্লবীরা, আজ সেই পুজোয় শামিল পুলিশরাও! যা ঝালদা নামোপাড়া শিলফোড় পাহাড় সর্বজনীন কালীপুজো নামে পরিচিত। এই পুজোকে ঘিরে হয় পংক্তি ভোজনও। পুরুলিয়ার ঝালদার নামোপাড়ায় শিলফোড় পাহাড়ের কালীপুজো আজও জাগ্রত।

Advertisement

কথিত আছে, এই পাহাড়ে কালী মূর্তির প্রতিষ্ঠা করে পুজো শুরু করেছিলেন বিট্রিশদের কাছ থেকে রায়সাহেব উপাধি পাওয়া প্রেমচাঁদ মোদক। আর সেই শ্যামাকালীর কাছেই বিপ্লবীরা সাধনা করতেন। নিতেন পুজোর প্রসাদ। পুরুলিয়ার ঝালদার শিলফোড় পাহাড়ে সেই শ্যামাকালীর পুজো এবার ৮৫ বছরে পা দিচ্ছে। ১০৬টি সিঁড়ি বেয়ে ১৩০ ফুট উঁচুতে শিলফোড় পাহাড়ের মাথায় ওই কালী মন্দির। সেখানেই মা কালী নিত্য পুজো পান। তবে কালীপুজোর সময় ভক্তদের ভিড়ে উপচে পড়ে এই পাহাড়। হাজার হাজার ধর্মপ্রাণ মানুষ এই মন্দিরে পা রাখেন। সব মিলিয়ে মিলন মেলার আকার নেয় এই পুজো। 

[আরও পড়ুন:  দেবীর স্বপ্নাদেশেই শুরু, রীতি মেনে আজও চলছে কুলেশ্বরী কালীবাড়ির পুজো]

ইতিহাস বলছে, ব্রিটিশ পরাধীন ভারতবর্ষে ১৯৩৪ সালে শুরু হয় এই পুজো। এখন এই পুজো ঝালদা নামোপাড়া শিলফোড় পাহাড় সার্বজনীন কালীপুজো নামে পরিচিত। তবে এখন এই পুজোর সঙ্গে যুক্ত রয়েছে ঝালদা থানাও। এই পুজোকে ঘিরে অন্নকূট হয় ঝালদা থানাতেই। ঝালদার তৎকালীন জমিদার প্রেমচাঁদ মোদক ব্রিটিশদের কাছ থেকেই রায়সাহেব উপাধি পান। তিনি ওই পাহাড়চূড়ায় মায়ের মূর্তি প্রতিষ্ঠা করে পুজো শুরু করতেই সেই পুজোয় বিপ্লবীরা শামিল হয়ে যান বলে কথিত আছে। ঝালদার বাসিন্দা রাধারমন চক্রবর্তী তখন এই পুজোর পুরোহিত ছিলেন। তখন থেকেই এই মন্দিরে নিত্য পুজো শুরু হয়। যা আজও হয়ে আসছে। 

১৯৭৩ সালে ২৫ অক্টোবর এই পাহাড়ে শিলফোড় হিললক পার্কের উদ্বোধন করেন পুরুলিয়ার তৎকালীন সাংসদ দেবেন্দ্রনাথ মাহাতো। তবে দীর্ঘদিন ধরে ওই পার্ক বেহাল ছিল। বছর দুয়েক আগে ওই পার্ককে সাজিয়ে তোলে ঝালদা পুরসভা। এখন ওই সাজানো গোছানো পার্ক থেকেই ঝালদার বানসা, কপিলা পাহাড় চোখে পড়ে। চোখে পড়ে আলোয় ঝলমল ঝালদা পুর শহরকে। ফলে এই ঘিঞ্জি শহরে এখন সময় কাটানোর অন্যতম ঠিকানা এই পাহাড়। পর্যটনেরও অঙ্গ। তাই কালীপুজোয় শুধু ধর্মপ্রান মানুষজন নন। এখানে পা পড়ে পর্যটকদেরও। মন্দিরের চারপাশের ল্যান্ডস্কেপ দেখলে চোখ জুড়িয়ে যায়। সেই সঙ্গে বাহারি আলো, ফোয়ারা, দোলনা, গাছ-গাছালিতে এই পাহাড়চূড়ার কালী মন্দির থাকে ভিড়ে ঠাসা। এই পুজো কমিটির অন্যতম কর্মকর্তা তথা ঝালদার পুরপ্রধান প্রদীপ কর্মকার বলেন, “এই পাহাড়ে এখন শ্যামা কালীর আরাধনাকে ঘিরে মিলন মেলার আকার নেয়। বলা যায়, চারদিন ধরে রীতিমত উৎসব চলে। তাই মন্দির-সহ পার্ককে আমরা আরও সাজিয়ে গুছিয়ে তুলেছি।” পুজোকে ঘিরে আলোকমালায় সেজে ওঠে গোটা পাহাড়। সেই আলোর রোশনাইয়ের মধ্যেই মনে করিয়ে দেয় বিপ্লবীদের কথা। ব্রিটিশ পুলিশ থেকে রেহাই পেতে কখনেও এই শিলফোড়, কখনও বানসা, কখনও আবার কপিলা পাহাড়ের গুহায় আশ্রয় নিতেন তারা। মেতে উঠতেন শ্যামার আরাধনায়। 

ছবি: অমিত সিং দেও

[আরও পড়ুন: ‘ডিজে মানত করেছি, এবারের মতো ছেড়ে দিন’, পুলিশের কাছে আজব আবদার ক্লাব সদস্যের]

The post দেশকে ব্রিটিশ শাসনমুক্ত করতে শুরু আরাধনা, আজও স্বমহিমায় ঝালদার এই কালীপুজো appeared first on Sangbad Pratidin.

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement