সুমন করাতি ও অর্ক দে: তৃণমূলের টিকিটে জিতে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। প্রধানও হয়েছেন। তারপরই আবার তৃণমূলে ফিরলেন খানাকুলের অরুন্ডা গ্রাম পঞ্চায়েতের সদ্য নির্বাচিত প্রধান। ঘটনাকে ঘিরে শোরগোল এলাকায়।
আগস্টের ১০ তারিখ বোর্ড গঠন হয় হুগলির (Hooghly) খানাকুল ১ নম্বর ব্লকের অরুন্ডা গ্রাম পঞ্চায়েতে। পঞ্চায়েতের মোট আসন সংখ্যা ছিল ২৩টি। যার মধ্যে তৃণমূল জয় লাভ করে ১৪ টিতে। বিজেপি জয়লাভ করে ৯ টি আসনে। স্বাভাবিকভাবেই সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে তৃণমূল। হিসাব অনুযায়ী বোর্ড গঠনও শাসকদল তৃণমূলেরই করার কথা ছিল। কিন্তু বোর্ড গঠনের দিন দেখা যায় তিনজন জয়ী তৃণমূল প্রার্থী বিজেপির জেলা সভাপতি বিমান ঘোষের হাত ধরে বিজেপিতে যোগদান করেন। তারপর বিজেপির সদস্য হয়ে বোর্ড গঠনে অংশ গ্রহন করেন। এতেই উলটে যায় হিসেব। বিজেপির আসন সংখ্যা হয়ে দাঁড়ায় ১২ টি এবং তৃণমূল ১১ টি। সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠন করে বিজেপি।
[আরও পড়ুন: ‘যাদবপুর কি ভিনগ্রহে যে নিয়ম মানবে না?’, ছাত্রমৃত্যুতে ক্ষুব্ধ শিশু সুরক্ষা কমিশন]
প্রধান হিসাবে নির্বাচন করা হয় তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যোগ দেওয়া দেবাশিস সিংকে এবং উপপ্রধান হন বিজেপির টিকিট থেকে জয়ী প্রার্থী তনুশ্রী রায় দুলুই। বোর্ড গঠনের দুদিন পার হতে না হতেই আবার নিজের দল অর্থাৎ তৃণমূলে ফিরে আসেন দুই সদস্য, সদ্য নির্বাচিত প্রধান দেবাশিষ সিং এবং অসীমা কারক। জেলা সভাপতি রামেন্দু সিংহরায় তারকেশ্বরে নিজের অফিসে দলীয় পতাকা তুলে দেন তাঁদের হাতে। ফলে হিসেব আবার বদলে যায়। দুই জয়ী সদস্য দলে ফিরে আসায় তৃণমূলের আসন সংখ্যা হয়ে দাঁড়ায় ১২। সেখানে বিজেপির আসন সংখ্যা ১১ টি। যদিও আইনত বিজেপির নির্বাচন করা প্রধানকেই মান্যতা দেয় তৃণমূল।
তৃণমূলের জেলা সভাপতি রামেন্দু সিংহরায়ের অভিযোগ, বোর্ড গঠনের একদিন আগে থেকেই তাঁদের জয়ী তিন সদস্যকে অপহরণ করে বিজেপি। বোর্ড গঠনের দিন তাদের বিজেপিতে জোর করে যোগদান করানো হয়। বিজেপির হাত থেকে ছাড়া পেয়ে আবার দুই সদস্য তৃণমূলে যোগদান করে। ফলে ওই পঞ্চায়েতের বোর্ড তাঁদের দখলে গেল বলেই দাবি করেন রামেন্দু সিং রায়। অন্যদিকে বিজেপির জেলা সভাপতি বিমান ঘোষের দাবি, যারা তৃণমূলে যোগদান করছে বলে দাবি করছে শাসকদল তাঁদের বাড়ি থেকে অপহরণ করছে। এতে কিছু লাভ হবে না। বোর্ড বিজেপির দখলেই থাকবে। এ প্রসঙ্গে দলবদলু দেবাশিস সিং বলেন, “বিজেপি আমাদের ভয় দেখিয়ে যোগদান করিয়েছিল। এখন ভুল বুঝতে পেরেছি, তাই এবার নিজের পুরনো দলেই ফিরে এলাম।”
অন্যদিকে কার্যত একই ছবি র্ব বর্ধমানের বর্ধমান ২ ব্লকের হাট গোবিন্দপুর পঞ্চায়েতের মহিপাল গ্রামে। পঞ্চায়েত ভোটে মহিপাল গ্রামের ১৬৮ নম্বর আসনে তৃণমূল প্রার্থীকে ১২ ভোট হারিয়ে জয়লাভ করেন বিজেপি প্রার্থী। ভোটের ফলাফল ঘোষণার পর বিজেপি প্রার্থী লতা হাঁসদা বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগদান করেছিলেন। কিন্তু তাতেও পদ মেলেনি। এরপরই বিজেপিতে ফিরলেন তিনি।
