স্টাফ রিপোর্টার: তাপপ্রবাহে দগ্ধ বাংলা। এই পরিস্থিতিতেই রবিবার হতে চলেছে রাজ্য জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষা। আবহাওয়ার রণমূর্তির কথা মাথায় রেখে প্রতিটি পরীক্ষাকেন্দ্রকে পর্যাপ্ত জলের পাশাপাশি ওআরএস মজুত রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে রাজ্য জয়েন্ট এন্ট্রান্স বোর্ডের তরফে। প্রতিটি পরীক্ষাকেন্দ্রে এবার জেনারেটর থাকাও বাধ্যতামূলক করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বোর্ডের চেয়ারম্যান মলয়েন্দু সাহা। তিনি বলেন, “সব সেন্টার ইনচার্জদের আমরা বলেছি, এত গরমে জেনারেটরের ব্যবস্থা রাখতেই হবে। ব্যতিক্রমী এই আবহাওয়ায় যদি লোডশেডিং হয়, তার জন্যই এটা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। ওআরএস-এর ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছে। যেহেতু ছাত্রছাত্রীরা জলের বোতল নিয়ে পরীক্ষার ঘরে ঢুকতে পারবেন না, তাই পর্যাপ্ত জলের ব্যবস্থা রাখতে বলা হয়েছে।”
একইসঙ্গে পরীক্ষার্থীদের উদ্দেশে তাঁর বার্তা, “দেরি হলে রোদের তেজ বেড়ে যায়। তাই পরীক্ষার্থীরা যেন সকাল সকাল পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছে যান।” রবিবার সকাল ১১টা থেকে শুরু হবে প্রথম পত্রের (গণিত) পরীক্ষা। চলবে ১টা পর্যন্ত। দ্বিতীয় পত্রের (পদার্থবিদ্যা ও রসায়ন) পরীক্ষা হবে দুপুর দুটো থেকে বিকেল চারটে পর্যন্ত। সকাল ৯টা থেকেই পরীক্ষাকেন্দ্রে ঢুকতে পারবেন পরীক্ষার্থীরা। সাড়ে ৯টার মধ্যে সকলকে পরীক্ষাকেন্দ্রে প্রবেশ করে যেতে হবে। এবারের রাজ্য জয়েন্টে রেকর্ড সংখ্যক আবেদন জমা পড়েছে। গত বছরের তুলনায় ১৭ হাজার ৭৭৩ জন বেশি।
মোট আবেদনকারীর সংখ্যা ১ লক্ষ ৪২ হাজার ৬৯২ জন। যা ২০২৩ সালে ১ লক্ষ ২৫ হাজারের কাছাকাছি ছিল। আবেদনকারীদের মধ্যে ছাত্রী ৪৩ হাজার ১২১ জন (গত বছরের তুলনায় ১০১৭৬ জন বেশি) ও ছাত্র ৯৯ হাজার ৫৭১ জন (গত বছরের তুলনায় ৭৫৯৭ জন বেশি)। পরীক্ষার্থী সংখ্যার সঙ্গেই বেড়েছে পরীক্ষাকেন্দ্রের সংখ্যাও। বোর্ডের চেয়ারম্যান জানিয়েছেন, এ বছর পরীক্ষাকেন্দ্রের সংখ্যা ৩৮৮। তার মধ্যে দুটি ত্রিপুরায় ও একটি অসমে। গত বছর পরীক্ষাকেন্দ্রের সংখ্যা ছিল ৩০৬। অন্যান্য বছরের মতোই প্রতিটি পরীক্ষাকেন্দ্রে থাকছে হ্যান্ডহেল্ড মেটাল ডিটেক্টর যন্ত্র।
[আরও পড়ুন: পরিচিতর ডাকে সাড়া, পার্ক স্ট্রিটের নামী হোটেলে গিয়ে ভয়ংকর অভিজ্ঞতা ব্যবসায়ীর]
মলয়েন্দুবাবু বলেন, “যে কেন্দ্রগুলিতে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা বেশি, সেগুলিতে একাধিক হ্যান্ডহেল্ড মেটাল ডিটেক্টর দিয়েছি। এবং আমাদের প্রায় ৯০ জন রোমিং অবজারভার রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি ডিটেক্টর (আরএফডি) নিয়ে পরীক্ষাকেন্দ্রগুলি পরিদর্শন করবেন। তাঁরা সবাই প্রথিতযশা অধ্যাপক, প্রাক্তন উপাচার্য।”
এক-একজন রোমিং তথা ভ্রাম্যমাণ পরিদর্শক গড়ে তিনটি করে পরীক্ষাকেন্দ্রে আচমকা পরিদর্শন করবেন। পরীক্ষাকেন্দ্রে কোনও মোবাইল বা বৈদ্যুতিন যন্ত্র থাকলে জানান দেবে তাঁদের হাতে থাকা আরএফডি। পরীক্ষাকেন্দ্রে সেন্টার ইনচার্জের পাশাপাশি এ বছর অতিরিক্ত সেন্টার ইনচার্জ নিযুক্ত করা হয়েছে। পরীক্ষার্থীর সংখ্যা বেশি এমন পরীক্ষাকেন্দ্রে সহকারী সেন্টার ইনচার্জও থাকবেন। থাকবেন বোর্ডের পরিদর্শক। কিছু কেন্দ্রে বোর্ডের প্রতিনিধিও থাকবেন। চেয়ারম্যান বলেন, “রাজ্য প্রশাসনের সব স্তরের সহায়তায় আমরা পরীক্ষাটা নিতে পারছি। আমরা যা যা সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া যায় নিয়েছি। পরীক্ষার্থীদের যতটা সম্ভব বাড়ির কাছে পরীক্ষাকেন্দ্র বরাদ্দ করেছি। পরিবহণ-সহ অন্যান্য জরুরি পরিষেবা সচল রাখতেও ব্যবস্থা নিয়েছে প্রশাসন।”