দিপালী সেন: অর্থাভাব যেন কারও পড়াশোনায় বাঁধা না হয়ে দাঁড়ায়। তা সুনিশ্চিত করতে বিকাশ ভবনে শিক্ষাদপ্তরে ‘লেটার বক্স’ লাগানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee)। যে বক্সে আবেদন জানিয়ে চিঠি জমা করতে পারবেন পড়াশোনা করতে গিয়ে টাকার অভাবের সম্মুখীন পড়ুয়ারা। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মোতাবেক শীঘ্রই একটি ‘লেটার বক্স’ বসানো হতে চলেছে বিকাশ ভবনে। জানা গিয়েছে, আটতলায় স্কুল শিক্ষা দপ্তরের কমিশনারের ঘরের বাইরেই বসানো হচ্ছে সেটি।
মেধাবী ও দুস্থ পড়ুয়াদের আর্থিক সাহায্যে রয়েছে সরকারি নানা প্রকল্প ও বৃত্তি। মেয়েদের জন্য কন্যাশ্রী, মেধাবী-দুস্থ পড়ুয়াদের জন্য স্বামী বিবেকানন্দ মেরিট-কাম-মিনস বৃত্তি, সংখ্যালঘু ছাত্রছাত্রীদের জন্য ঐক্যশ্রী, তফসিলি জাতি ও উপজাতির পড়ুয়াদের জন্য শিক্ষাশ্রী, অনগ্রসর শ্রেণির (ওবিসি) ছাত্রছাত্রীদের জন্য মেধাশ্রী-সহ আরও অনেক প্রকল্প রয়েছে সেই তালিকায়। স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে স্বল্প সুদের হারে পড়াশোনার জন্য ঋণের ব্যবস্থাও করা হয়েছে। তারপরেও অর্থাভাব পড়াশোনায় বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে জানিয়ে অনেকেই মুখ্যমন্ত্রীর কাছে চিঠি পাঠান।
[আরও পড়ুন: ‘বাংলা জ্বলছে, জ্বালাচ্ছেন দিদি, দুর্নীতি-হিংসাই ওখানকার নিউ নর্মাল’, তোপ অনুরাগ ঠাকুরের]
গত ১ জুন রাজ্যের কৃতি ছাত্রছাত্রীদের সম্বর্ধনা অনুষ্ঠানের মঞ্চ থেকে সেকথা তুলে ধরেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই প্রেক্ষাপটেই তাঁর নির্দেশ ছিল, সরকারি বিভিন্ন প্রকল্প ও বৃত্তির আর্থিক সুবিধা সত্ত্বেও কারও সমস্যা হলে তাঁদের জন্য শিক্ষাদপ্তরে লেটার বক্স করা হোক। যাঁদের পড়াশোনায় টাকার অসুবিধা হচ্ছে, তাঁরা ওই বক্সে আবেদনপত্র পৌঁছে দেবেন। বিষয়টি নিয়ে যাতে কোনও গড়িমসি না হয়, শিক্ষামন্ত্রীকে সেদিকে নজর রাখার নির্দেশও দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেছিলেন, ‘‘প্রত্যেকটা চিঠি দেখে দেখে ব্যবস্থা নেবে। কার কী ব্যবস্থা নিলে যথাসময়ে আমাকে জানাবে। দেরি করবে না।’’
মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ পেতেই শিক্ষা দপ্তরে শুরু হয়ে যায় তৎপরতা। বিকাশ ভবন সূত্রে খবর, প্রথমেই কীভাবে গোটা বিষয়টি পরিচালিত হবে তা নিয়ে তৈরি করা হয় ‘স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিওর’ তথা এসওপি। শিক্ষাদপ্তরের উচ্চপদস্থ এক আধিকারিক জানিয়েছেন, চলতি সপ্তাহের শুরুতেই দপ্তরে লাগানো হবে আবেদনপত্র জমা দেওয়ার বক্সটি। স্কুল শিক্ষাদপ্তরের কমিশনারের ঘরের বাইরেই লাগানো থাকবে সেটি। যাতে আবেদন জমা পড়লে সেগুলি খতিয়ে দেখা হবে।
[আরও পড়ুন: ঠাকুরনগরে কাজে ‘বাধা’, কেন্দ্রীয় বাহিনীর বিরুদ্ধে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা পুলিশের]
ওই আধিকারিক জানিয়েছেন, আবেদনপত্র জমা দেওয়ার পর আবেদনকারী পড়ুয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করা হবে। সংশ্লিষ্ট পড়ুয়া কোথায় ভরতি হবে, তার ফি কত, কী বৃত্তি পায়, কতটা অভাবি-এরকম নানাদিক খতিয়ে দেখা হবে। তারপর কেস-টু-কেস ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে আবেদনকারীদের কী সাহায্য করা যায়। জানা গিয়েছে, প্রতি বছরই এরকম বহু আবেদনপত্র বিকাশ ভবনে জমা পড়ে। এবার সেগুলির জন্য একটি সুনির্দিষ্ট ব্যবস্থা তৈরি হল মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে।