সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিলকিস বানোর (Bilkis Bano) ধর্ষকদের মুক্তি নিয়ে বিতর্ক অব্যাহত। এরই মধ্যে জানা গিয়েছে, ওই মামলার ১১ জন আসামিই তাদের গ্রাম ছেড়ে পালিয়েছে। এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে তেমনই দাবি করা হয়েছে।
ওই সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিরা গুজরাটের রাধিকাপুর গ্রামে তদন্তে গিয়েছিলেন। তাঁরা কথা বলেন ধর্ষকদের পরিবারের সঙ্গে। কথা বলেন তাদের প্রতিবেশীদের সঙ্গেও। আর তা থেকে জানা যাচ্ছে, মুক্তির পরে গ্রামে ফিরে কী পরিস্থিতিতে পড়তে হয়েছিল তাদের।
অন্যতম আসামি বাঁকাভাইয়ের স্ত্রী মংলিবেন জানিয়েছেন, ”আমার স্বামী জেল থেকে বেরনোর পর থেকেই ওরা (মুসলিমরা) ওর এবং বাকিদের পিছনে লেগেছে। ওরা বাজারে গেলে কিংবা বাড়ির সামনে বসে থাকলেও ওদের ছবি, ভিডিও তোলা হচ্ছে। রীতিমতো হুমকি দেওয়া হচ্ছে, ধর্ষণ-শ্লীলতাহানির মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়া হচ্ছে।”
[আরও পড়ুন: ‘নেতাজির মূর্তি উন্মোচনে যথাযথভাবে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি’, কেন্দ্রকে তোপ মুখ্যমন্ত্রীর]
তাঁর কথায় ঝরে পড়েছে ক্ষোভ। তিনি বলছেন, ”অন্য সম্প্রদায়ের মানুষরা এখানে এসে দিব্যি ব্যবসা করে যাচ্ছে। কিন্তু আমরা ভয়ে ভয়ে থাকছি। ওরা বলছে, আবার আমাদের মানুষগুলোকে জেলে পাঠাতে হবে। নয়তো কোনও ভুয়ো মামলা ফাঁসিয়ে দেবে! এই ভাবে আমাদের ভয় দেখানো হচ্ছে এবং আমরা ভয় পাচ্ছিও। ওই ১১ জনই গ্রাম ছেড়েছে ভয়ে।”
এর আগে শোনা গিয়েছিল, ওই ধর্ষকরা গ্রামে ফিরলে নাকি তাদের মালা পরিয়ে বিজয় মিছিল বের করা হয়। বাজি ফাটিয়ে, গান বাজিয়ে উৎসব পালন করা হয়। কিন্তু এই দাবি উড়িয়ে দিয়েছে তাদের পরিবার। বরং উলটো দাবি জানিয়ে বিপন্নতার কথা বলতে দেখা যাচ্ছে তাঁদের।
উল্লেখ্য, ২০০২ সালে সাবরমতী এক্সপ্রেসে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। তারপর থেকেই ব্যাপক সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা শুরু হয় গোটা গুজরাট জুড়ে। সেই সময়েই ২১ বছর বয়সি তরুণী বিলকিস বানোকে গণধর্ষণ করা হয়। ঘটনার সময়ে গর্ভবতী ছিলেন বিলকিস। দাঙ্গার ভয়ে এলাকা ছেড়ে পালাচ্ছিলেন তিনি। সেই সময়েই তাঁকে গণধর্ষণ করা হয়। শুধু তাই নয়, তাঁর তিন সন্তানকেও খুন করা হয়। ২০০৮ সালে এগারোজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেয় মুম্বইয়ের বিশেষ সিবিআই আদালত। তাদের মধ্যে ছিলেন দু’জন চিকিৎসক, যারা প্রমাণ লোপাট করার চেষ্টা করেছিল। একই অপরাধে কয়েকজন পুলিশকর্মীকেও কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। মেয়াদ ফুরনোর আগেই তাদের মুক্তি দিয়েছে গুজরাট সরকার। যা ঘিরে শুরু হয়েছে বিতর্ক।