shono
Advertisement

Breaking News

Joint Entrance Exam

লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকায় নেট রিচার্জ করে পড়াশোনা, ডাক্তারি প্রবেশিকায় সফল রাহুল

বাবার চায়ের দোকানে সাহায্যের ফাঁকে পড়াশোনা চালিয়ে গিয়েছে রাহুল।
Published By: Sayani SenPosted: 09:27 AM Jun 07, 2024Updated: 09:27 AM Jun 07, 2024

নন্দন দত্ত, বোলপুর: কোনও প্রাইভেট টিউটর ছিলেন না। লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকায় মোবাইল নম্বরে ইন্টারনেটের রিচার্জ করাতেন। আর তার মাধ্যমে চলত পড়াশোনা। তাতেই ডাক্তারি পরীক্ষার প্রবেশিকায় সুযোগ পেল মাহফুজ আলম ওরফে রাহুল। দিনে বাবার চায়ের দোকানে কাজ। অবসরে পড়া। রাত জাগা। পরিশ্রমেই মিলল সাফল্য। প্রথমবার পরীক্ষা দিয়েই ৭২০ নম্বরের মধ্যে রাহুল পেয়েছে ৬৭৩। সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে র‌্যাঙ্ক ১২ হাজারের কাছাকাছি। এত ভালো ফল করার পরেও দিব্যি একইরকম। বৃহস্পতিবার কয়থা বাসস্ট্যান্ডে হাসপাতাল মোড়ে বাবা মজিবর শেখের দোকানে চা বানিয়ে বাবাকে সাহায্য করতে দেখা গিয়েছে রাহুলকে। কপালে তখনও চন্দনের টিপ। দোকানের একপাশে রাখা ফুলের তোড়া। কারণ, নলহাটি ব্লকের তরফে তাঁকে সম্বর্ধনা দেওয়া হয়।

Advertisement

পড়া আর খেলাই ধ্যানজ্ঞান রাহুলের। কয়থা হাইস্কুলে একাদশ শ্রেণিতে উঠে গরুর দুধ বিক্রি করে একটা মোবাইল ফোন জুটেছিল রাহুলের। সেটাই তাঁর সব। গৃহশিক্ষক ছিল না। ইন্টারনেটই তাঁর ভরসা। করোনার জন্য মাধ্যমিক পরীক্ষা দেওয়া হয়নি। তবুও স্কুলে পড়াশোনার ভিত্তিতে মাধ্যমিক পরীক্ষায় মিলেছিল ৯২ শতাংশ। উচচ মাধ্যমিকে বিজ্ঞান নিয়ে পড়তে শুরু করে রাহুল। কেন বিজ্ঞান? রাহুল জানান, "সবাই নিচ্ছিল, তাই নিলাম। বলার তো কেউ ছিল না। গাইডও নেই। বাবা ষষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত পড়েছেন। মা মরিয়াম বিবি মাধ্যমিক পাশ।"

[আরও পড়ুন: বধূর ‘শ্লীলতাহানি’, ফের কাঠগড়ায় কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ান]

বাবা মজিবুর জানান, "আমার বাবা আমাকে এই দোকান দিয়ে গিয়েছে। আমি আর ছেলে মিলে দুজনে সামান্য এই চায়ের দোকান চালাই। তিন বছর আগে আবাস যোজনার একটা পাকা ঘর পেয়েছি। বাড়িতে একটা দশ কেজি দুধ দেওয়া গরু আছে। সেই দুধ বিক্রি করে ছেলের বই কিনেছি।" মা জানান, "লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের যে টাকা পেতাম, সেটা দিয়েই ছেলের মোবাইলে নেট রিচার্জ করে দিতাম। সেটা নিয়েই সারাদিন পড়াশোনা করত।"

রাহুল জানায়, "প্রথমে ইচ্ছা ছিল নেভিতে যাওয়া। পরীক্ষায় পাশ করেছিলাম। কিন্তু শারীরিক পরীক্ষা নিরীক্ষায় পাশ করতে পারিনি। পরে ইচ্ছা জাগল ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়ব। পড়ার এত খরচ কোথায় পাব? তখনই নিজেই ডাক্তার হওয়ার কথা ভাবি। প্রস্তুতি বলতে এনসিআরটির বই কিনেছিলাম। সেটা পড়তাম। দিনের পড়া সে দিনেই শেষ করতাম। মোবাইলে বিভিন্ন কোচিং ক্লাস শুনতাম। শেষে একটা সংস্থায় যোগ হয়ে ক্যুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে বাড়িতে বসে পরীক্ষা দিতাম। বাড়িতে কম্পিউটার নেই। টিভি ছিল। বাবার চায়ের দোকানে সাহায্য করতে গিয়ে অনেক কিছু ছাড়তে হয়েছে।" কিন্তু এই ডাক্তারি পড়ার খরচ জোগাবে কে? স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড প্রকল্পের মাধ্যমে লোন নেওয়ার ভাবনাচিন্তা করছে রাহুল।

[আরও পড়ুন: বাঁধ মানল না চোখের জল, গার্ড অফ অনারে মাঠ ছাড়লেন সুনীল]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকায় নেট রিচার্জ করে পড়াশোনা।
  • ডাক্তারি প্রবেশিকায় সফল রাহুল।
  • বাবার চায়ের দোকানে সাহায্যের ফাঁকে পড়াশোনা চালিয়ে গিয়েছে রাহুল।
Advertisement