রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: বাংলায় দুর্গাপুজোকে রাজনৈতিক প্রচারের হাতিয়ার করতে নয়া কৌশল নিল বঙ্গ বিজেপি। লক্ষ্য, চব্বিশের লোকসভা ভোটকে সামনে রেখে বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসবে দল ও কেন্দ্রীয় সরকারের প্রচার। চন্দ্রযানের সাফল্য, জি-২০ থেকে শুরু করে গ্যাসের দাম কমার বিষয়ে হোর্ডিং বানিয়ে বিভিন্ন জনবহুল এলাকায় বা পুজো মণ্ডপের সামনে টাঙানো হবে।
প্রতিটা হোর্ডিংয়েই থাকবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির (Narendra Modi) ছবি। মোদি সরকারের সাফল্য তুলে ধরতে এমন জায়গায় হোর্ডিং দেওয়ার কথা বলা হয়েছে, যাতে দর্শনার্থীদের সহজেই চোখে পড়ে। বৃহস্পতিবার কলকাতায় বিজেপির সাংগঠনিক বৈঠকেও পুজোর সময় এভাবে জনসংযোগ করার নির্দেশ দিয়েছেন কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান (Dharmendra Pradhan)।
দলীয় সূত্রে খবর, মোদির সাফল্যের প্রচারে বিজেপির (BJP) তুরুপের তাস হতে চলেছে জি-২০ (G-20) সম্মেলন। জি-২০ নিয়ে একটি প্রস্তাবও নিয়েছে দল। সেই প্রস্তাব রাজ্যে রাজ্যে পাঠানো হয়েছে। দলের নির্দেশ এই প্রস্তাব মেনেই লোকসভা নির্বাচনকে পাখির চোখ করে প্রচার চালাতে হবে। বঙ্গ বিজেপিতেও এসেছে সেই নির্দেশ। এদিন ন্যাশনাল লাইব্রেরি অডিটোরিয়ামে উত্তর কলকাতা ও দমদম লোকসভা এলাকার বিজেপির নেতা ও কর্মীদের নিয়ে বৈঠক করেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। পুজোর মরশুমে মোদির ছবি দেওয়া হোর্ডিং প্রতি বুথে কমপক্ষে তিনটি করে লাগানোর কথা বলেছেন ধর্মেন্দ্র।
[আরও পড়ুন: মালবাজারে এবার ‘দুয়ারে ডাক্তার’, বিনামূল্যে পরিষেবা পেয়ে খুশি চা শ্রমিকরা]
এদিকে গেরুয়া শিবির সূত্রে খবর, যারা বিজেপি নেতাদের নিয়ে দলের শর্ত মেনে পুজো করবে, সেইসব ক্লাব বা সংগঠনকে বিজেপির তরফে থেকে আর্থিক অনুদান দেওয়া হবে। এই আর্থিক অনুদানের ব্যবস্থা কেন্দ্রীয় নেতারা করবেন। আর্থিক অনুদান পাওয়ার ক্ষেত্রে বিজেপির তরফে শর্ত দেওয়া হচ্ছে ১) পুজোর কমিটিতে স্থানীয় পদ্মশিবিরের নেতাদের রাখতে হবে। ২) পুজো মণ্ডপের আশপাশ ও চত্ত্বর প্রধানমন্ত্রীর ছবি দিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের প্রচার করতে হবে। মূলত, এই দু’টি শর্ত মানলে সেই পুজোর উদ্যোক্তাদের ১ লক্ষ টাকা কিংবা তারও বেশি আর্থিক অনুদান দেওয়া হবে। এ ব্যাপারে রাজ্য বিজেপির তরফে জেলা কমিটিগুলির কাছে গোপন সার্কুলার পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। যে পুজো কমিটিগুলিকে পাওয়া যাবে তাদের তালিকা পাঠাতে বলা হয়েছে বলে খবর।
[আরও পড়ুন: ওড়িশায় কাজে যাওয়াই কাল, সাপের ছোবলে প্রাণ গেল সামশেরগঞ্জের পরিযায়ী শ্রমিকের]
রাজনৈতিক মহলের একাংশের কথায়, বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপুজোকে বিশ্বের দরবারে তুলে ধরেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। দুর্গাপুজো যখন আরও ভাল করে হতে পারে সেই উদ্যোগ নিয়েছে তৃণমূল সরকার। তখন স্রেফ দলীয় রাজনৈতিক প্রচারের লক্ষ্যে পুজো কমিটিগুলিকে ধরার চেষ্টায় নেমেছে বিজেপি (BJP)। আর পদ্ম শিবিরের সেই গোপন ছক সামনে চলে এসেছে। যদিও প্রশ্ন, শাসকদলের নেতাদের অধীনে রয়েছে সিংহভাগ পুজো কমিটিই। তখন বিজেপির এই আর্থিক অনুদানের চেষ্টা কার্যত বৃথাই যাবে।