বিশেষ সংবাদদাতা, নয়াদিল্লি: দেশের প্রতিটি প্রান্তে দলের সংগঠন মজবুত করতে এখন থেকেই কাজ শুরু করে দিতে চান বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডা (JP Nadda)। ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনকে লক্ষ্য রেখেই দেশ জুড়ে ১০০ দিনের যাত্রা শুরু করতে চলেছেন তিনি। যাত্রা শুরুর দিনক্ষণ এখনও চূড়ান্ত না হলেও এই কর্মসূচিতে বাংলা-সহ নির্বাচনমুখী রাজ্যগুলিকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হবে বলেই বিজেপি সূত্রের খবর। জানা গিয়েছে, ‘রাষ্ট্রীয় বিস্তৃত প্রবাস’ নামে ১০০ দিনের ওই যাত্রায় বিজেপি শাসিত রাজ্যের পাশাপাশি দখলে নেই, এমন রাজ্যেও যাবেন বিজেপি (BJP) সভাপতি। বিজেপি সূত্রের খবর, বাংলা থেকেই নাড্ডার এই কর্মসূচি শুরু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ঠিক যেমন প্রধানমন্ত্রী করোনাকালে প্রথমবার রাজ্য সফরে আমফান বিপর্যন্ত এলাকা পরিদর্শন করতে বাংলাতে এসেছিলেন এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শাহও করোনা মুক্ত হওয়ার পরে রাজনৈতিক সফরের জন্য বাংলাকে বেছে নিয়েছিলেন, সেই একই ধারা বজায় রাখতে পারেন বিজেপি সভাপতিও।
জানা গিয়েছে, উত্তরপ্রদেশ ছাড়া ছোট-বড় মিলিয়ে সব রাজ্যেই দুই থেকে তিন দিন থাকবেন নাড্ডা। ১০০ দিনের সফরে দলীয় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে দেখা করবেন তিনি। তাঁদের সঙ্গে আলোচনার পাশাপাশি নির্বাচনের জন্য সংশ্লিষ্ট রাজ্যে সম্ভাব্য জোটসঙ্গী খুঁজে বার করাও নাড্ডার কর্মসূচিতে থাকবে। যে সব রাজ্যে বিজেপি ক্ষমতায় রয়েছে, সেখানে শাসকের ভাবমূর্তি আরও উন্নতির চেষ্টা করা হবে। এছাড়া, দলীয় আদর্শ নিয়ে ক্যাডারদের মধ্যে স্বচ্ছতা বাড়াতে সংশ্লিষ্ট রাজ্যের শীর্ষ নেতাদের তাঁদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনায় উৎসাহিত করবেন তিনি।রাষ্ট্রীয় বিস্তৃত প্রবাস কর্মসূচিতে নাড্ডা যে সমস্ত রাজ্যে সফর করবেন সেগুলিকে চারটে ভাগে ভাগ করা হয়েছে। কর্নাটক, বিহার, ত্রিপুরা-সহ বিজেপিশাসিত রাজ্যগুলিকে ‘এ’ বিভাগে রাখা হয়েছে। কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল দিল্লি এবং রাজস্থান, ছত্তিশগড়, মহারাষ্ট্র, পাঞ্জাব এবং ওড়িশার মতো রাজ্যে যেখানে বিজেপি ক্ষমতা দখল করতে পারেনি, সেগুলিকে ‘বি’-শ্রেণিভুক্ত করা হয়েছে। লাক্ষাদ্বীপ, মেঘালয় এবং মিজোরামের মতো ছোট রাজ্যগুলি ‘সি’-ক্যাটেগরিতে ধরা হয়েছে।
[আরও পড়ুন: ‘বিজেপির নিয়ন্ত্রণে বেশিদিন সরকার চালাতে পারবেন না নীতীশ’, হুঙ্কার আরজেডির]
কেরল, পশ্চিমবঙ্গ, অসম, পুদুচেরি এবং তামিলনাড়ুর মতো রাজ্যে যেখানে বিধানসভা নির্বাচন আসন্ন তেমন রাজ্যগুলিকে ‘ডি’ তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে উত্তরপ্রদেশ ছাড়া ‘সি’ভুক্ত রাজ্যগুলিতে দু’দিন এবং ‘এ’ ও ‘বি’শ্রেণিভুক্ত রাজ্যে তিন দিন করে থাকবেন নাড্ডা। ‘ডি’ শ্রেণিভুক্ত রাজ্যগুলিতে ক’দিন থাকবেন তা নিয়ে কিছু না বলা হলেও এই রাজ্যগুলির মধ্যে নাড্ডা বাংলাতেই সবথেকে বেশিদিন রাত্রিবাস করবেন বলেই জানা গিয়েছে। এর পাশাপাশি উত্তরপ্রদেশে আট দিন থাকার পরিকল্পনা রয়েছে বিজেপি সভাপতির। সদ্য বিহারে আবার ক্ষমতা দখল করেছে এনডিএ। ভালে ফল করেছে বিজেপিও। বিহারের ফল নিয়ে খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi) ভূয়সী প্রশংসা করেছেন নাড্ডার। বিহারের সাফল্যের জন্য কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah) নাড্ডার বাড়িতে গিয়ে পুষ্পস্তবক পর্যন্ত দিয়ে এসেছেন। তবে সেই সাফল্যে সন্তুষ্ট না থেকে আরও বড় লক্ষ্যে ঝাঁপাতে চান বিজেপি সভাপতি। বিজেপি সূত্রের খবর, দেশে করোনা পরিস্থিতির মধ্যে এই কর্মসূচি শুরু করবেন নাড্ডা। তাই তার জন্য বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করা হবে। বিজেপি সভাপতির কোনও সভাতেই ২০০-র বেশি জমায়েত করতে দেওয়া হবে না। স্বাস্থ্যবিধিও মেনে চলার পাশাপাশি সভামঞ্চে শাল বা ফুলের মালা বিতরণও নিষিদ্ধ করা হবে।