shono
Advertisement

অহংকার ও ঔদ্ধত্যের ফল পেল বিজেপি, উপনির্বাচনে জিতে হুংকার মমতার

এই জয় মানুষের জয়, মন্তব্য মুখ্যমন্ত্রীর। The post অহংকার ও ঔদ্ধত্যের ফল পেল বিজেপি, উপনির্বাচনে জিতে হুংকার মমতার appeared first on Sangbad Pratidin.
Posted: 06:30 PM Nov 28, 2019Updated: 06:30 PM Nov 28, 2019

স্টাফ রিপোর্টার: তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বরাবর কেন্দ্রের বিভিন্ন নীতিকে জনবিরোধী বলে এসেছেন। বৃহস্পতিবার রাজ্যের তিনটি বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে ৩-০ ফলে জেতার পর প্রথম প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, অহংকার ও ঔদ্ধত্যের ফল পেল বিজেপি।

Advertisement

করিমপুর হাতে থাকলেও এবারই প্রথম কালিয়াগঞ্জ এবং খড়গপুরে সবুজ আবির ওড়াল শাসকদল। তৃণমূলনেত্রী বলেন, “মানুষকে তার অধিকার দিতে হয়। স্কুল-কলেজ-ব্যবসা-সহ সবকিছু স্বাভাবিক চলছে। হঠাৎ এনআরসির ভয় দেখানো শুরু হল। সন্ত্রাস শুরু হল। সর্বনাশের খেলা শুরু করল বিজেপি। মানুষ তার জবাব দিল।” সর্বভারতীয় রাজনীতিতে কংগ্রেসকে সমর্থন করলেও এ রাজ্যে বামেদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে সোনিয়া গান্ধীর দল যে অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়ছে তা উল্লেখ করতে ভোলেননি মমতা। তিনি বলেন, “আমরা সর্বভারতীয় রাজনীতির ক্ষেত্রে কংগ্রেসকে সমর্থন করি। কিন্তু এখানে কংগ্রেস এবং বামেরা ঘুরিয়ে বিজেপিকে সুবিধে করে দিচ্ছে। মানুষ এই খেলা ধরে ফেলেছে। তাই তাঁরা ভোট নষ্ট না করে তৃণমূলকে ভোট দিয়েছেন।”

[আরও পড়ুন: উপনির্বাচনে ধরাশায়ী বিজেপি, তৃণমূলের জয়ের কারিগর প্রশান্ত কিশোর!]

উত্তরবঙ্গের কালিয়াগঞ্জে গত লোকসভা ভোটের নিরিখে গেরুয়া দল এগিয়ে ছিল প্রায় ৫৭ হাজার ভোটে। বিজেপি নেতারা ধরেই নিয়েছিলেন এখানে উপনির্বাচনে তাঁরা চোখ বন্ধ করে জিতবেন। কিন্তু তৃণমূল এখানে হেলায় হারিয়ে দেয় বিজেপিকে। তৃণমূল সুপ্রিমো এ প্রসঙ্গে বলেন, “বিভেদের রাজনীতি এখানে চলে না। কালিয়াগঞ্জে প্রচুর সংখ্যালঘু ও রাজবংশী মানুষ থাকেন। লোকসভা ভোটে তাঁদের ভুল বোঝানো হয়েছিল। সমস্ত সম্প্রদায়ের মানুষ আমাদের পাশে আছেন।” বস্তুত অবাঙালি, তফসিলি, দলিত-সহ সমস্ত ধর্ম ও বর্ণের মানুষ যে তৃণমূলের পতাকাকেই শ্রেয় মনে করেছে তার প্রমাণ এদিন পাওয়া গিয়েছে। মমতার কথায়, “মানুষের প্রতি আগেও ভরসা ছিল। এখনও আছে। ভবিষ্যতেও থাকবে। আমরা মানুষকেই বিচারের ভার দিই। ভুল করলে তাঁরাই সংশোধন করে দেন। মানুষ বুঝতে পেরেছেন বিজেপি কাউকে সম্মান দেয় না।”

কিছুদিন আগে কাশ্মীরে মৃত শ্রমিকদের কথাও উল্লেখ করেছেন মমতা। তিনি বলেন, “কাশ্মীরে যে পাঁচজন সন্ত্রাসবাদীদের হাতে মারা গেল তাঁদের পরিবারকে কেন্দ্রীয় সরকার সাহায্য করল না। কোনও বিজেপি নেতা একটা শব্দও উচ্চারণ করল না। আমরা সাধ্যমতো পাশে থাকলাম। আর বিজেপি গত কয়েকমাসে এজেন্সি দিয়ে সন্ত্রাস চালাল। শুধু অহংকার এবং ঔদ্ধত্য দেখাল। মানুষ তার জবাব দিল।” জয়ের খবর জানার পর বিজেপির ঔদ্ধত্য নিয়েই এদিন বেশি করে মুখ খোলেন মমতা। তাঁর কথায়, বিজেপি মানে দুঃশাসন। বিজেপি মানেই অহংকার। এই দল যা খুশি করে। সন্ত্রাস চালায়। বাংলার মানুষ এটা ভালভাবে নেয়নি। বাংলায় অহংকার চলে না। এক দুই তিন, বিজেপিকে বিদায় দিন। তবে একইসঙ্গে মমতার বার্তা, “এই জয় মানুষের জয়। আমাদের আরও বেশি করে মানুষের জন্য কাজ করতে হবে।”

এ রাজ্যের রাজ্যপাল সমান্তরাল প্রশাসন চালাচ্ছেন বলে তৃণমূলের অভিযোগ। রাজ্যপাল নিয়ে প্রশ্ন করা হলে মমতা বলেন, “ওনার বিষয়ে যত কম বলা যায় তত ভাল।” করিমপুরে যে তৃণমূলের জয়ের সম্ভাবনা রয়েছে তা শাসকদলের নেতারা আগেই বলেছিলেন। কিন্তু তৃণমূল ভাবেনি যে কালিয়াগঞ্জ এবং খড়গপুর বিধানসভা আসনেও তারা জিততে পারে। ২০১৬ সালের বিধানসভা ভোটে কালিয়াগঞ্জে কংগ্রেসের কাছে ৪৬ হাজার ভোটে হেরেছিল তৃণমূল। উনিশের লোকসভা ভোটে তৃণমূল সেখানে পিছিয়ে ছিল ৫৬ হাজারেরও বেশি ভোটে। সেই ব্যবধান কমিয়ে দিয়ে তৃণমূল কালিয়াগঞ্জে ২৩০৪ ভোটে জিতেছে। একইভাবে খড়গপুর বিধানসভা আসন অধরা ছিল তৃণমূলের কাছে। ষোলোর ভোটে এবং উনিশের লোকসভা ভোটে রেল শহর খড়গপুরে জিতেছিল বিজেপি। লোকসভায় সেখানে ৪৫ হাজারেরও বেশি ভোটের ব্যবধানের জিতেছিল গেরুয়া শিবির। কিন্তু সেই ব্যবধান মুছে দিয়ে খড়গপুরেও জয়ী তৃণমূল।

[আরও পড়ুন: এনআরসি ইস্যুই ফ্যাক্টর, উপনির্বাচনে ভরাডুবির পর মত বঙ্গ বিজেপির]

অপ্রত্যাশিত হলেও বিজেপির যে মহা বিপর্যয় তা বলার অপেক্ষা রাখে না। মমতা এদিন বলেন, বিজেপি এর আগে কালিয়াগঞ্জের রাজবংশীদের ভুল বুঝিয়েছিল। কিন্তু এবার আর তাঁরা বিজেপির ফাঁদে পা দেননি। তৃণমূলকে ভোট দিয়েছেন। খড়গপুরে অবাঙালিরা আমাদের প্রচুর ভোট দিয়েছেন। সব ধর্ম, জাতি ও ভাষাভাষী মানুষ যে তৃণমূলের পাশে রয়েছেন, আমাদের সমর্থন করছেন তা এই ভোট ফলাফলে পরিষ্কার। এই জয় তাই মানুষের জয়।

The post অহংকার ও ঔদ্ধত্যের ফল পেল বিজেপি, উপনির্বাচনে জিতে হুংকার মমতার appeared first on Sangbad Pratidin.

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement