সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সাহিত্যচর্চায়ও এবার দেশদ্রোহিতার ছায়া দেখছে বিজেপি। কালিকট বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকস্তরের ইংরাজি পাঠক্রম থেকে খ্যাতনামা সাহিত্যিক অরুন্ধতী রায়ের (Arundhati Roy) বক্তৃতার অংশ বাদ দেওয়ার দাবি তুলল কেরলের বিজেপি নেতৃত্ব। তা দেশের অখণ্ডতার পরিপন্থী, এই মর্মে রাজ্যপালকে চিঠি লিখেছেন কেরলের বিজেপি সভাপতি কে সুরেন্দ্রন। এ নিয়ে ইতিমধ্যেই সমালোচনা শুরু হয়েছে সাহিত্যমহলে।
বুকার পুরস্কার (Booker Prize) বিজয়ী সাহিত্যিক অরুন্ধতী রায়ের এক বক্তৃতার নির্বাচিত অংশ ‘কাম সেপ্টেম্বর’ সম্প্রতিই অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল কালিকট বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরাজি সিলেবাসে। স্নাতকের তৃতীয় সেমেস্টারে তা পড়ানোর কথা ছিল। কেরলের বিজেপি সভাপতি কে সুরেন্দ্রনের দাবি, ”অরুন্ধতী রায়ের ওই বক্তৃতায় তিনি বলেছেন, কাশ্মীরের স্বাধীনতার জন্য অহিংস আন্দোলন হচ্ছে। ভারত সরকার সেই আন্দোলনের উপর লাগামহীন সন্ত্রাস চালাচ্ছে। এই বক্তৃতা দেশের অখণ্ডতা, সার্বভৌমত্বের পরিপন্থী তো বটেই। সীমান্তে যে সেনারা দেশরক্ষার কাজে নিয়োজিত, তাঁদেরও অপমান করা হচ্ছে।” আর এই যুক্তি দেখিয়ে তাঁর আশঙ্কা, হাজার হাজার ছাত্রছাত্রী পাঠ্যবইয়ের এই অংশ পড়ে দেশের সেনাদের প্রতি শ্রদ্ধা হারাতে পারে, প্রকৃত দেশপ্রেমের ধারণা থেকে সরে আসতে পারে। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য হিসেবে রাজ্যপালের কাছে বিজেপি সভাপতির আবেদন, এই অংশ অবশ্যই সিলেবাস থেকে বাদ দেওয়া উচিত। নাহলে তাঁরা আইনের দ্বারস্থ হবেন বলেও প্রচ্ছন্ন হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
[আরও পড়ুন: ভারতীয় নাগরিকত্বের ভুয়ো নথি-সহ হায়দরাবাদে ধৃত রোহিঙ্গা শরণার্থী]
এই নিয়ে কালিকট বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষর বক্তব্য, অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের অনুমোদন সাপেক্ষে ১০ সদস্যের বোর্ড অফ স্টাডিজের মতামত নিয়ে তবেই ২০১৯এ অরুন্ধতী রায়ের বক্তৃতার ওই অংশ স্নাতকের ইংরাজি সিলেবাসে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। টেক্সট বুক কমিটিরও কোনও আপত্তি ছিল না। তাই বিজেপির আপত্তিতে তাঁরা কিছুটা বিস্মিত। যদিও এই সংক্রান্ত যাবতীয় সিদ্ধান্ত অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল নেবে বলেই জানাচ্ছে কর্তৃপক্ষ।
[আরও পড়ুন: রাম মন্দিরের ভূমিপুজোর আগেই করোনা আক্রান্ত দায়িত্বে থাকা পুুরোহিত]
প্রসঙ্গত, মোদি সরকারের বিরুদ্ধে বরাবর সরব হওয়ার বিদ্বজনদের মধ্যে অরুন্ধতী রায় অন্যতম। নানা কার্যকলাপের বিরোধিতা করে তিনি স্বভাবতই বিজেপি চক্ষুশূল। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের মতে, এই অবস্থানে দাঁড়িয়ে বামশাসিত কেরলে স্নাতক ইংরাজি সিলেবাসে যতটা গুরুত্ব পেয়েছেন বুকারজয়ী সাহিত্যিক, ঠিক ততটাই বিপরীত মেরুতে দাঁড়িয়ে গেরুয়া শিবির। তাই সাহিত্যমূল্য থাকা সত্ত্বেও দেশের অখণ্ডতার পরিপন্থী, এই যুক্তি সাজিয়ে তা সিলেবাস থেকে বাদ দিতে এত তৎপরতা বিজেপির।
The post দেশবিরোধী সাহিত্য! সিলেবাস থেকে অরুন্ধতী রায়ের বক্তৃতা বাদ দেওয়ার দাবি কেরল বিজেপির appeared first on Sangbad Pratidin.