তারক চক্রবর্তী, শিলিগুড়ি: পৃথক দু’টি অভিযানে ভারত-নেপাল সীমান্তের পানিট্যাঙ্কি এবং বাংলা-বিহার সীমান্তের চেকরমারী থেকে মাদক ও লক্ষাধিক টাকা-সহ এক বিজেপি নেতা সহকারে তিনজনকে গ্রেপ্তার করল খড়িবাড়ি থানার পুলিশ। পাচারকারীদের মধ্যে এক মহিলাও রয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের নাম পানিট্যাঙ্কির গৌড়সিংজোত এলাকার বাসিন্দা সরস্বতী গিরি, নকশালবাড়ির রাঘুজোতের বাসিন্দা সুমন বর্মন এবং নেপালের বিরতা মোড়ের মাদক পাচারকারী ধীরেন উপ্রেতি। মাদক পাচারের অভিযোগে বিজেপি নেতার গ্রেপ্তারি নিয়ে জারি রাজনৈতিক চাপানউতোর।
পুলিশ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার সন্ধেয় নেপাল সীমান্তের পানিট্যাঙ্কিতে অভিযান চালায় পানিট্যাঙ্কি ফাঁড়ির পুলিশ। পানিট্যাঙ্কির গৌড়সিং জোত ফ্লাইওভারের নিচে একটি চা বাগানের পাশে মাদক সামগ্রী হাতবদলের সময় পুলিশের জালে ধরা পড়ে নেপালের ধীরেন ও ভারতীয় মহিলা মাদক বিক্রেতা সরস্বতী। তল্লাশিতে তাদের কাছ থেকে ৪২টি ছোট ব্রাউন সুগার, ১১ গ্রাম ওজনের পৃথক একটি ব্রাউন সুগারের প্যাকেট উদ্ধার হয়েছে। পাশাপাশি ধৃতদের তল্লাশি করে ৩০ বোতল কফ সিরাপ, দু’টি মোবাইল ফোন ও নগদ ১ লক্ষ ৬২ হাজার টাকা উদ্ধার হয়েছে। এছাড়া, নেপাল নম্বরের একটি স্কুটি বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ।
[আরও পড়ুন: পিসির সঙ্গে প্রেম, অশান্তির জেরে ভাইপোর মৃত্যু! মহিলার চুল কাটল উত্তেজিত জনতা]
অপরদিকে, ওইদিন গভীর রাতে বাংলা-বিহার সীমান্তের চেকরমারীতে সুমন বর্মনকে মাদক-সহ গ্রেপ্তার করে খড়িবাড়ি থানার পুলিশ। ধৃত সুমন বিহার থেকে বাইক নিয়ে নকশালবাড়ির দিকে যাচ্ছিল। তল্লাশিতে তার বাইক থেকে ২৫ বোতল কফ সিরাপ উদ্ধার করে পুলিশ। ধৃতদের শুক্রবার দুপুরে শিলিগুড়ি মহকুমা আদালতে পাঠায় খড়িবাড়ি পুলিশ। বিচারক প্রত্যেকের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।
ধৃত সুমন বর্মন নকশালবাড়িতে সক্রিয় বিজেপি নেতা বলেই পরিচিত। গত মহকুমা পরিষদ নির্বাচনের সময়ে পঞ্চায়েত সমিতির প্রার্থী হিসেবে বিজেপির প্রতীকে নির্বাচনে লড়াই করেছিলেন। খুব স্বাভাবিকভাবেই এই গ্রেপ্তারির ঘটনা শুরু রাজনৈতিক তরজা। এ প্রসঙ্গে শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের সভাধিপতি অরুণ ঘোষ বলেন, “ওই যুবক পঞ্চায়েত সমিতি নির্বাচনেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিল। বিজেপি বারবার আমাদের দলকে কলঙ্কিত করার চেষ্টা করে। তবে এখন দেখছি তাদের নেতাকর্মীদেরাই গরু পাচার, মাদক পাচারের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়। মানুষ সবই দেখছে।” অন্যদিকে, বিজেপির শিলিগুড়ি সাংগঠনিক জেলা সভাপতি তথা মাটিগাড়া-নকশালবাড়ির নিজেপি বিধায়ক আনন্দময় বর্মন বলেন, “ওই যুবক নির্বাচনে আমাদের দলের প্রার্থী ছিল কিনা জানা নেই। আমাদের দলের কোনও পদে ছিল না। আমাদের দলের সদস্যরা এমন কাজ করে না।”