সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: উত্তরপ্রদেশ বিধানসভা নির্বাচনের প্রথম দফার ভোট হয়ে গিয়েছে। প্রথম দফায় ভোট হয়েছে পশ্চিমাঞ্চলের বিস্তীর্ণ এলাকায়। যেখানে বিরোধী সমাজবাদী পার্টির (SP) প্রভাব ও প্রতিপত্তি বেশি থাকার পাশাপাশি, কৃষক সম্প্রদায়ের জনতা বেশি। সেখানে সপা খেলা দেখালেও, পূর্বাঞ্চলে আরও বড় খেলা দেখানোর তোড়জোড় শুরু করছে বিজেপি। কেউই এক ইঞ্চি জমিও বিনা যুদ্ধে ছাড়তে প্রস্তুত নয়। বিজেপিও প্রতিটি শ্রেণি ও সম্প্রদায়কে আকৃষ্ট করার চেষ্টা করছে। আর তাতে বিজেপির বড় ভরসা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi)। তাঁকে দিয়েই পূর্বাঞ্চলে প্রচার ধামাকা করার পরিকল্পনা নিয়েছে বিজেপি। সূত্রের খবর, ৩ থেকে ৫ মার্চ কাশীতে থাকতে পারেন প্রধানমন্ত্রী। বারাণসী (Varanasi) এবং আশপাশের এলাকায় বেশ কয়েকটি সমাবেশে তিনি ভাষণ দিতে পারেন। এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রীর রোডশো নিয়েও পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে। যদিও এই পরিকল্পনাটি এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন পায়নি।
পূর্বাঞ্চলকে উত্তরপ্রদেশে ক্ষমতার প্রবেশদ্বার বলে মনে করা হয়। এখানে জয় যে কোনও দলের ক্ষমতায় পৌঁছতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। রাজ্যের ৩০ শতাংশেরও বেশি আসন এখান থেকে আসে। ২০১৪ এবং ২০১৯ লোকসভা নির্বাচন এবং ২০১৭ বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি (BJP) এখান থেকেই সর্বাধিক সংখ্যক আসন জিতেছিল। প্রধানমন্ত্রী মোদি থেকে মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের, পূর্বাঞ্চলের দিকে বিশেষ নজর রয়েছে। যোগী নিজে এসেছেন গোরক্ষপুর থেকে। মোদিও বারাণসী থেকে সাংসদ। জাতপাতের সমীকরণকে শক্তিশালী করতে বিজেপি এখানে ছোট দলগুলোর সঙ্গে জোট করেছে। পূর্ব উত্তরপ্রদেশ থেকে অনুপ্রিয়া প্যাটেল (Anupriya Patel) এবং পঙ্কজ চৌধুরীকে গত কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা সম্প্রসারণে স্থান দেওয়া হয়েছিল। এখানকার মহেন্দ্রনাথ পাণ্ডে, স্মৃতি ইরানি এবং রাজনাথ সিং ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী।
[আরও পড়ুন: ‘হিজাব পরা মহিলাই একদিন দেশের প্রধানমন্ত্রী হবেন’, চ্যালেঞ্জ ওয়েইসির]
পূর্বাঞ্চলে ১৫৬টি বিধানসভা আসন রয়েছে। গত বিধানসভা নির্বাচনে, বিজেপি এখানে ১০৬টি আসন পেয়েছিল। অন্যদিকে সপা ১৮টি, বসপা (BSP) ১২টি, আপনা দল আটটি, সুহেলদেব ভারতীয় সমাজ পার্টি চারটি, কংগ্রেস (Congress) চারটি এবং নিষাদ পার্টি একটি আসন পেয়েছে। নির্দলদের খাতায় ছিল তিনটি আসন। পূর্বাঞ্চলের কিছু জেলায় সপারও বেশ প্রভাব রয়েছে। কিছু আসনে বসপার ভোট উল্লেখযোগ্য। প্রকৃতপক্ষে, কৃষকদের আন্দোলন এবং লখিমপুর খেরির ঘটনার পরে, পশ্চিম উত্তরপ্রদেশ, তরাই এলাকা এবং আওধ এলাকায় বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে উত্তপ্ত পরিবেশ। এমন পরিস্থিতিতে বিজেপির নজর বেড়েছে পূর্বাঞ্চলের দিকে। এ ছাড়া পূর্বাঞ্চল নরেন্দ্র মোদির জন্য সৌভাগ্যের মতো, এটাও বলা হয়। তিনি ২০১৪, ২০১৯ লোকসভা এবং ২০১৭ উত্তরপ্রদেশ বিধানসভা নির্বাচনে প্রচার এখান থেকে শুরু করেছিলেন এবং বিজেপি বাম্পার আসন পেয়েছিল।
[আরও পড়ুন: গাড়ি চালানোর সময় বলা যাবে ফোনে কথা! আসছে নয়া নিয়ম, জানালেন গড়করি]
প্রধানমন্ত্রী মোদি বারবার কাশী সফরে আসছেন। ডিসেম্বরে প্রধানমন্ত্রী মোদি তাঁর সংসদীয় এলাকা বারাণসীতে দু’বার এসেছিলেন। ১৩ ডিসেম্বর তার প্রথম সফরে তিনি কাশী বিশ্বনাথ ধাম উপহার দিয়েছিলেন। এরপর ২৩ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী ২১০০ কোটি টাকার ২৭টি প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। এর আগেও তিনি অনেক সফর করেছেন। পূর্বাঞ্চলের জেলাগুলিতে ষষ্ঠ ও সপ্তম দফায় ভোট হওয়ার কথা। বারাণসীতে ভোট হবে ৭ মার্চ। নির্বাচনের ফল ঘোষণা হবে ১০ মার্চ।
