মনিরুল ইসলাম, উলুবেড়িয়া: গোটা বিশ্ব করোনা আতঙ্কে কাঁপছে। অথচ তারই মাঝে রবিবার লকডাউনের রাতে ফাটল দেদার শব্দবাজি। মারণ ভাইরাসের দাপটে প্রাণহানি, আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ার সংখ্যা যখন লেগে রয়েছে, তখন কেন পালন করা হল অকাল দিপাবলি? সেই প্রশ্নে মুখর গোটা দেশের অধিকাংশ মানুষ। অথচ তাতে কিছুই যায় আসে না গেরুয়া শিবিরের নেতাদের। চিন্তার আবহে যাদের আনন্দ করতে ইচ্ছা হয়েছে, তাঁরা শব্দবাজি ফাটিয়েছেন, আত্মপক্ষ সমর্থন করে জবাব বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের (Dilip Ghosh)।
দেদার শব্দবাজি ফাটানোর প্রসঙ্গে বিজেপি রাজ্য সভাপতি বলেন, “মানুষ বোমা ফাটিয়ে অন্যায়টা কি করেছে? প্রধানমন্ত্রী যখনই আবেদন করেন দেশের কোটি কোটি মানুষ সাড়া দেয়। যারা বিরোধিতা করেছিলেন তারাই এখন প্রশ্ন করছে কে বোমা ফাটালো? বোমা কারা ফাটালো সেটা পুলিশ দেখুক। এতদিন মানুষ হতাশায় ডুবেছিল। যদি একটু আনন্দ করে তাহলে বিরোধীদের কষ্ট হচ্ছে কেন? মানুষের মনের মধ্যে যে হতাশা ছিল তা কেটে গিয়েছে।”
রোগের পাশাপাশি আর্থিক সংস্থান নিয়েও চিন্তিত সাধারণ মানুষ। লকডাউনের অর্থনীতির বেহাল দশা ভাবাচ্ছে আমজনতাকে। এ প্রসঙ্গে শব্দবাজি নিয়ে যে যাই বলুন না কেন, সেই সমালোচনায় কর্ণপাত করতে নারাজ দিলীপ ঘোষ। তবে পালটা রাজ্যের সমালোচনায় মুখর তিনি। রাজ্যের উদাসীনতায় এখনও অনেকে লকডাউন মানছে না বলেও অভিযোগ তাঁর। বিজেপি নেতা বলেন, “সারা দেশে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। অথচ পশ্চিমবঙ্গে তা হচ্ছে না। আমি জানি না আমাদের মুখ্যমন্ত্রী কী চাইছেন।”
করোনায় আক্রান্ত এবং মৃতের সংখ্যা নিয়ে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভপ্রকাশ করেন দিলীপ ঘোষ। তিনি বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী চিকিৎসকদের বলে দিয়েছেন কেউ যেন করোনা না লেখেন। তারা যেন নিউমোনিয়া লেখেন। যেমন ডেঙ্গুর সময় অজানা জ্বর লিখতে বলা হয়েছিল। চিকিৎসকদের জন্য করা ১০ লক্ষ টাকার বিমার সুবিধা তাদের পাওয়ার সম্ভাবনা নেই। কোনও চিকিৎসক যদি করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যান তবে বলা হবে তাঁর উচ্চ রক্তচাপ ছিল। সুগার, হাইপারটেনশনের সমস্যা ছিল। তাই হার্ট অ্যাটাকে মারা গিয়েছেন। করোনার কথা আসবে না। এটা দুর্ভাগ্যজনক।”
করোনা ভাইরাস টেষ্ট নিয়েও রাজ্য সরকারকে বিঁধেছেন বিজেপি নেতা। তিনি বলেন, “ভারতে গড়ে ৩২ জনের করোনা পরীক্ষা হয়। পশ্চিমবঙ্গে সংখ্যাটা ৫। ফলত মানুষ মারা গেলেও বোঝা যাচ্ছে না, করোনা হয়েছে কিনা। তার আরও অভিযোগ, রাজ্য সরকার তথ্য চাপা দিতে গিয়ে মানুষের জীবন বিপন্ন করছে।” এক্ষেত্রে হাওড়ার গ্রামীণ এলাকার তৃণমূলের কো-অর্ডিনেটর সমীর পাঁজা বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী শুরু থেকেই বলে আসছে করোনা টেস্টিং কিট দেওয়ার জন্য। কিন্তু কেন্দ্র সরকার অসহযোগিতা করছেন। তা সত্ত্বেও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আপ্রাণ চেষ্টা করছেন। মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন।”
দেখুন ভিডিও:
[আরও পড়ুন: খাঁচাবন্দি প্রাণীদের সংক্রমণের আশঙ্কা বেশি, নিউ ইয়র্কের ঘটনায় সতর্কবার্তা বিশেষজ্ঞদের]
The post ‘মানুষ বোমা ফাটিয়ে যদি আনন্দ করে অন্যায়টা কী?’, সমালোচনায় পালটা প্রশ্ন দিলীপের appeared first on Sangbad Pratidin.