রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায় ও সম্যক খান: আবারও বিতর্কিত মন্তব্য শোনা গেল বিজেপির সাংসদ তথা দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের গলায়। এবার মহিলাদের সম্মান বাঁচাতে হিন্দু যুবকদের সরাসরি হাতে অস্ত্র তুলে নেওয়ার নিদান দিলেন তিনি। তাও আবার প্রকাশ্য জনসভায়।
বুধবার পশ্চিম মেদিনীপুরের গড়বেতায় হিন্দু জাগরণ মঞ্চের একটি অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে ওঠেন দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)। তখনই বিতর্কিত মন্তব্যটি করে বসেন। বলেন, ‘ভগবান রামচন্দ্র ছোট থেকে অস্ত্র তুলেছেন... মা–বোনেদের সম্মান রক্ষার্থে হিন্দু যুবকদের এক হতে হবে। প্রয়োজনে হলে অস্ত্র ধরতে হবে। সংবিধান আমাদের সেই অধিকার দিয়েছে। ধর্ম রক্ষার্থে, সম্মান রক্ষার্থে, প্রাণ রক্ষার্থে অস্ত্র ধরাটা আইনের চোখের কোনও অপরাধ নয়। আমরা সেটাই করব।’’ এরপর তিনি আরও বলেন, ‘‘আগে প্রতিশোধ নিতে হবে, তারপর থানায় যেতে হবে।’’
দেখুন ভিডিও:
[আরও পড়ুন: ‘বাংলার মানুষই জবাব দেবে’, রাজ্যপালের অপসারণের দাবি নিয়ে তৃণমূলকে পালটা বাবুলের]
এদিকে, এর আগে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদকেও তীব্র আক্রমণ করেন দিলীপ ঘোষ। এদিন হাতিয়ারায় দলের চা–চক্র কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখতে গিয়ে দিলীপবাবু বলেন, ‘‘তাঁর নাকি জমি বিশ্বভারতীর জায়গায় রয়েছে। উনি এ বিষয়ে জবাব দিন। না হলে মামলা করুন। কোনও সম্মানীয় ব্যক্তির বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ যদি ভুল হয় সেটা ঠিক নয়। আর জমি যদি সত্যিই কব্জা করা হয়ে থাকে। তাহলে কি উনি নোবেল পুরস্কার ফেরত দেবেন? উনি ভুল প্রমাণিত হলে কি বলা হবে জমি চোরকে নোবেল প্রাইজ দেওয়া হয়েছে?’’ এখানেই না থেমে তিনি আরও বলেন, ‘‘দেশ ওঁকে অনেক কিছু দিয়েছে। উনি কি দিয়েছেন?’’ এরপর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে উদ্দেশ্য করে বিজেপির রাজ্য সভাপতি বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর এই বিষয়ে তথ্য প্রমাণ দেওয়া উচিত। উনি (মমতা) ওখানে ছুটে গিয়ে ঝোল টানছেন।’’
[আরও পড়ুন: শিশির অধিকারীর সঙ্গে জ্যোতির্ময় মাহাতোর ‘সাক্ষাৎ’, রাজনৈতিক মহলে জোর জল্পনা]
যদিও অমর্ত্য সেন সম্পর্কে দিলীপ ঘোষের এই মন্তব্যের কড়া সমালোচনা ও নিন্দা করেছে তৃণমূল এবং সিপিএম দু’দলই। তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় বলেন, ‘‘এই ধরণের মন্তব্যের নিন্দা করার ভাষা নেই।’’ বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসুর বক্তব্য, ‘‘অর্মত্য সেনের একটাও বই দিলীপ ঘোষ পড়েছেন কিনা সেটা আমার সন্দেহ আছে। অর্মত্য সেন সম্পর্কে উনি জানেন কিনা, আমি জানি না। উনি বিজেপির সভাপতি। এইসব মানুষের বিষয়ে প্রশ্নের উত্তর দেওয়া বা না দেওয়া একই ব্যাপার।’’