সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: আচার্য হবেন মুখ্যমন্ত্রী। গত বছর জুন মাসে বিধানসভায় এই বিল পাস হওয়ার পরেও তাতে সই না করায় রাজ্যপালকে বিঁধলেন রাজ্যের স্কুল শিক্ষা ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের মন্ত্রী ব্রাত্য বসু। রাজ্যপাল যেভাবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলির কাজে হস্তক্ষেপ করছেন তার সমালোচনা করে মন্ত্রী বলেন, “কোনও মনোনীত মানুষ এভাবে কন্ট্রোল করতে পারেন না।” মঙ্গলবার একাধিক কর্মসূচিতে পুরুলিয়ায় এসে সিধো-কানহো-বিরসা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মন্ত্রী বলেন, “আজকেই তেলেঙ্গানা রাজ্যের বিষয়ে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে কোনও বিল বিধানসভায় পাশ হয়ে গেলে রাজ্যপাল অনন্তকাল ধরে ফাইল ফেলে রাখতে পারেন না। সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, দু’ সপ্তাহের বেশি সেই ফাইল ফেলে রাখা যাবে না। কিন্তু বছরখানেক ধরে ফাইল নিজের কাছে আটকে রেখেছেন রাজ্যপাল।”
শিক্ষামন্ত্রী এদিন বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁরা কোনও নিয়ন্ত্রণ চান না। কিন্তু তাই বলে কোনও ভবন, সদন নিয়ন্ত্রণ করলে তীব্র প্রতিবাদ করা হবে। এই কারণেই যে আগামিদিনে বিশ্ববিদ্যালয় গুলিতে অচলাবস্থা দেখা দেবে সেই আশঙ্কাও করেন তিনি। তাঁর কথায়, “যিনি এই কাজ করছেন তখন তাঁকে কেউ দোষারোপ করবেন না। আমরা জনপ্রতিনিধি, মানুষজনের কাছে আমাদেরকে জবাব দিতে হবে। আমরা রাজভবন, রাজ্যপালের সঙ্গে সহযোগিতা করছি।” তাহলে প্রশ্ন কেন রাজ্যপাল ওই ফাইলে সই করছেন না? মন্ত্রীর জবাব, “উনি কেন সই করছেন না সেটা উনি বলতে পারবেন। ওনার মনের মধ্যে তো আমি ডুবুরি নামাইনি। কোথায় হীরে আছে, কোথায় জঞ্জাল আছে বুঝতে পারব।”
[আরও পড়ুন: জীবনকৃষ্ণের মোবাইলে ১০০ অডিও ফাইল, যাচাই করতে বিধায়কের স্বরের নমুনা নেবে CBI]
এদিকে স্নাতক স্তরে ভরতির ক্ষেত্রে বেনিয়ম রুখতে আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকেই একটি কেন্দ্রীয় পোর্টালের মাধ্যমে স্নাতকে ভরতি হওয়ার আবেদন করতে পারবেন উচ্চমাধ্যমিক উত্তীর্ণরা। গত সোমবার এই বিষয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করে উচ্চ শিক্ষা বিভাগ। এ বিষয়ে এদিন শিক্ষা মন্ত্রী বলেন, “ভরতির বিষয়ে বেনিয়ম ও কারচুপি রুখতেই এই পোর্টাল চালু করা হয়েছে। উত্তরপ্রদেশ, গুজরাট, ত্রিপুরা, কেরালা কোথাও এমন পোর্টাল নেই।”
সমগ্র রাজ্য জুড়ে যে সমস্ত এলাকার পড়ুয়ার তুলনায় শিক্ষক বেশি। কিংবা যে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্র কম সেই বিষয়গুলির ক্ষেত্রে জেলা ভিত্তিক সমীক্ষা শুরু করেছে স্কুল শিক্ষা বিভাগ। এদিন মন্ত্রী বলেন, “একটি জেলায় এই সমীক্ষার কাজ শেষ হয়েছে। রাজ্যজুড়ে এই সমীক্ষার কাজ শেষ হলে এই বিষয়ে আমরা একটা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করব।” অমর্ত্য সেনকে যেভাবে বিশ্বভারতী একের পর এক নোটিস ধরাচ্ছে তার সমালোচনা করে বলেন, এ বিষয়ে তো আদালতে গেলেই ফয়সালা হতে পারে। এভাবে নোটিস কেন ধরানো হচ্ছে? সেই প্রশ্ন তোলেন তিনি। প্রসঙ্গত, এদিন মন্ত্রী সিধো-কানহো-বিরসা বিশ্ববিদ্যালয় পরিদর্শনের পাশাপাশি জঙ্গলমহল বরাবাজারে রাজ্যের অনগ্রসর শ্রেণিকল্যাণ বিভাগের একটি অনুষ্ঠানে সংগ্রামী শহীদ গঙ্গানারায়ণ সিং-র আবক্ষ মূর্তি উন্মোচন করেন। ওই অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “রাজ্যের প্রান্তিক জনজাতিদের লড়াই আন্দোলনের কথা শুধু ভেবেছেন, স্বীকৃতি দিয়েছেন আমার মুখ্যমন্ত্রী-ই। কোন বহিরাগত ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ভাবেনি।”