সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সবরীমালা মন্দিরে প্রবেশের চেষ্টার অভিযোগে এক মুসলিম মহিলা কর্মীকে স্থানান্তর করল বিএসএনএল। ওই মহিলা কর্মীর নাম রেহানা ফতিমা। তিনি সংস্থার কাস্টমার রিলেশন বিভাগে কর্মরত। একাধারে সমাজকর্মী ফতিমা সবরীমালা বিতর্কের মধ্যেই আয়াপ্পার মন্দিরে প্রবেশের চেষ্টা করছিলেন গত শুক্রবার। পাহাড়ে ওঠার সময় কোনওভাবে কর্তব্যরত পুলিশকর্মীদের নজরে পড়ে যান ওই সমাজকর্মী। তখনই তাঁকে নিরস্ত করা হয়। তাঁর সঙ্গে ছিলেন আরও এক মহিলা সমাজকর্মী। দু’জনকেই পাহাড় থেকে নামিয়ে আনা হয়। এদিকে সবরীমালায় মহিলাদের প্রবেশ সংক্রান্ত বিষয়ে সুপ্রিমকোর্টের চূড়ান্ত রায়ের পর থেকেই বিতর্ক চলছে। তারপর থেকে গোটা মন্দির এলাকায় ভক্তদের ভিড় লেগে রয়েছে। অশান্তি এড়াতে পর্যাপ্ত পুলিশি নিরাপত্তার বন্দোবস্তও রয়েছে। সেই চক্রব্যূহ ভেঙেই পাহাড়ের উপরে আয়াপ্পার মন্দিরে ওঠার চেষ্টা করছিলেন রেহানা ফতিমা। তখন তাঁকে আটকে দেওয়া হয়। গোটা ঘটনায় উত্তেজনা ছড়িয়েছে মন্দির এলাকায়।
একে মহিলা আবার তার উপর মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি। তিনি কিনা পবিত্র পাহাড়ে চড়ে আয়াপ্পার মন্দিরে ওঠার চেষ্টা করছেন। স্বভাবতই ক্ষুব্ধ স্থানীয় জনগণ ও মন্দির কর্তৃপক্ষ। সুপ্রিম রায়ের ঘটনায় ক্ষোভে ফুঁসছিল আয়াপ্পা ভক্তদের বৃহদাংশ। রেহানা ফতিমার পদক্ষেপ সেই ক্ষোভে বারুদ সঞ্চার করে। ওই সমাজকর্মী যখন পুলিশি ঘেরাটোপ এড়িয়ে পাহাড়ে ওঠার চেষ্টা করে চলেছেন তখন অজ্ঞাতপরিচয় একদল দুষ্কৃতী ততক্ষণে তাঁর বাড়িতে হামলা চালিয়েছে। কোচির পানামবিল্লি নগরে মহিলার বাড়ি। অভিযোগ, দুষ্কৃতী দলটি সেই বাড়িতে ঢুকে যথেচ্ছ ভাঙচুর চালায়। সেই সময় পরিবারের কেউ ঘটনাস্থলে না থাকায় বড়সড় বিপদ এড়ানো গিয়েছে বলে খবর।
[রাফালে নিয়ে প্রশ্ন তুলেই সরতে হল সিবিআই ডিরেক্টরকে!]
এই গণবিক্ষোভ এড়াতেই ফতিমাকে তাঁর কর্মক্ষেত্র কোচির বোট জেটি শাখা থেকে তড়িঘড়ি বদলি করে দিয়েছে টেলিকম সংস্থা বিএসএনএল। বর্তমানে ওই সমাজকর্মীর কর্মস্থল পালারিভাট্টম টেলিফোন কেন্দ্র। শহরের এমন এক জায়গায় এই টেলিফোন কেন্দ্রের অবস্থান যেখানে কোনও গ্রাহকের ফোন আসে না। পরিষেবা সংক্রান্ত সমস্যা নিয়ে কোনওরকম ফোন কল পাননা ওই কর্মী। এদিকে ফতিমার বহিষ্কারের দাবিতে সবরীমালা মন্দিরের কর্মসমিতির সদস্যরা পালারিভাট্টম টেলিফোন কেন্দ্রের সামনেই বিক্ষোভ শামিল হলেন।
লক্ষ হিন্দু ধর্মাবলম্বীর ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত করেছেন ফতিমা। তাই তাঁকে সম্প্রদায় থেকেই বহিষ্কার করেছে কেরলের মুসলিম জামাত কাউন্সিল। ঠিক তার পরেপরেই কর্মক্ষেত্রে স্থানান্তর ও বহিষ্কারের দাবিতে বিক্ষোভ। সবরীমালাকে কেন্দ্র করে এহেন ঘটনার ঘনঘটায় উত্তপ্ত কোচি-সহ সংলগ্ন এলাকা।