সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ধ্বংসের মধ্যেই লুকিয়ে রয়েছে সৃষ্টির বীজ। আর বিভাজনের আড়ালেই জন্মে নিচ্ছে সম্প্রীতি। এমন ছবিই এখন দেখা যাচ্ছে সাম্প্রদায়িক অশান্তির ফলে বিপর্যস্ত উত্তর-পূর্ব দিল্লির বিস্তীর্ণ এলাকায়। এর মাঝেই দিল্লির বদরপুর এলাকার মোহন এস্টেটের আলি গ্রামে গিয়ে দেখা গেল সম্প্রীতির এক অনন্য ছবি। যেখানকার বাসিন্দাদের মনে এখনও আতঙ্ক থাকলেও সাম্প্রদায়িক বিভাজনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে সর্বদা তৈরি রয়েছেন তাঁরা।
কয়েকদিন আগে অশান্তি চলাকালীন ওই গ্রামে টহলদারি চালাচ্ছিলেন পুলিশ ও বিএসএফ(BSF) জওয়ানরা। এর ফলে গ্রামে বসবাসকারী মুসলিমরা ভয় পেয়ে নিজেদের ঘরের মধ্যে আটকে রেখেছিলেন। আসলে আশপাশের এলাকার পরিস্থিতি তাঁদের এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য করেছিল। কিন্তু, এই কথা শুনে বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসেন ওই গ্রামের সংখ্যাগরিষ্ঠ হিন্দু বাসিন্দারা। তারপর গ্রামের জনসংখ্যার ৩০ শতাংশ অধিকার করে থাকা মুসলিম প্রতিবেশীদের পাশে দাঁড়ান। স্থানীয় বাগওয়ালি মসজিদে গিয়ে সেখানে আশ্রয় নেওয়া মুসলিম নাগরিকদের আশ্বস্ত করেন। গ্রামের মধ্যে কোনওভাবে অশান্তি তাঁরা করতে দেবেন না বলে পরিষ্কার জানিয়ে দেন।
[আরও পড়ুন: অযোধ্যা মামলার রায় সংশোধনের আরজি জানিয়ে সু্প্রিম কোর্টের দ্বারস্থ পপুলার ফ্রন্ট]
এপ্রসঙ্গে স্থানীয় এক বাসিন্দা বাহাদুর খান বলেন, ‘বিভিন্ন বিষয় নিয়ে গুজব ছড়ানো হচ্ছিল। সেই শুনে গ্রামের সমস্ত হিন্দুরা রাস্তার মোড়ে বেরিয়ে আসেন। তারপর ডেকে বের করেন মুসলিম প্রতিবেশীদেরও। তারপর আমাদের সবাইকে বলেন, পারলে এখানে কোনও দাঙ্গাকারী এসে দেখাক। আমরা এখানে যারা আছি, তারা কেউ আলাদা নই। ওরাও যেমন আমরাও তেমন।’
[আরও পড়ুন: সাতজনকে সাসপেন্ডের জের, সংসদ ভবনের সামনে প্রবল বিক্ষোভ কংগ্রেস সাংসদদের]
বাগওয়ালি মসজিদের ইমাম জাইনুল আবেদিন বলেন, ‘দিল্লির বিভিন্ন জায়গা থেকে মসজিদ ভাঙচুরের খবর আসছিল। এর জেরে আমরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলাম। কিন্তু, এখানকার হিন্দুরা সবসময় আমাদের পাশে থেকে সাহস জুগিয়েছেন। না তাঁরা কিছু করেছেন না কাউকে করতে দিয়েছেন। আসলে আমাদের সবকিছু এখানে। আর আমরাও আগাগোড়া এখানকার বাসিন্দা। তাই এখান থেকে আমাদের বের করে দিয়ে কার কী লাভ হবে।’
The post ‘অশান্তি করতে এলে উপযুক্ত শিক্ষা দেব’, হিংসার মধ্যেও ঐক্যর সুর দিল্লির এই গ্রামে appeared first on Sangbad Pratidin.