shono
Advertisement

কলকাতায় বাস ভাড়ার অধিকাংশই জোড় সংখ্যা, বন্ধের পথে এক টাকার মুদ্রা!

জ্বালানির দাম এতটাই বেড়েছে যে পুরনো ভাড়ায় বাস নামাতে চাইছেন না মালিকরা।
Posted: 01:28 PM Sep 12, 2021Updated: 01:28 PM Sep 12, 2021

নব্যেন্দু হাজরা: ফের ব্রাত্য এক টাকার কয়েন। বাস মালিকদের তৈরি ভাড়ার নয়া তালিকায় এক টাকার তেমন আর হাতবদল হচ্ছে না। ফলে বাজারেও তার প্রচলন কমছে। অনেক জায়গাতেই আবার এক টাকার কয়েন নিতে চাইছেন না কেউ কেউ। ফলে বছর চারেক আগে যেভাবে এক টাকার কয়েন প্রায় ‘অচল’ হয়ে গিয়েছিল, ফের সেদিকেই এগোচ্ছে পরিস্থিতি। কিন্তু কারণটা কী?

Advertisement

সরকার বাসের ভাড়া না বাড়ালেও নিজেদের মতো করে তা বাড়িয়ে নিয়েছেন বাসের মালিক-কন্ডাক্টররা। আর নতুন তালিকায় সর্বনিম্ন ভাড়া হয়েছে ১০ টাকা। তার পরের ধাপ যথাক্রমে ১২, ১৫, ২০ এমনকী ২৫ টাকা। আর নতুন ভাড়ার চার্টেই সেভাবে আর প্রয়োজন পড়ছে না এক টাকার কয়েনের। এতদিন বাসের ৭, ৯, ১১, ১৩ টাকা ভাড়ার জেরে এক টাকার কয়েনেই লেনদেন ছিল ভরসা। তা যাত্রী হোক বা কন্ডাক্টর। ভাড়ার হিসাব চোকাতে এক টাকাই ছিল সম্বল। তাই ‘কার্যত অচল’ ছোট কয়েন বা বড়– সবই ছিল সচল। তবে ফের তা অচলের দলে ভিড়েছে।

[আরও পড়ুন: মানিকতলায় অটো থেকে উদ্ধার দেহ, পিটিয়ে খুনের অভিযোগে ধৃত সিভিক ভলান্টিয়ার-সহ দুই]

গত চার বছর ধরে বাসের সর্বনিম্ন ভাড়া ছিল সাত টাকা। পরের ধাপ ন’টাকা। তাই ১০ টাকার নোট কেউ হাতে দিলে এক টাকা অথবা তিন টাকা ফেরত দিতে হত কন্ডাক্টরদের। ফলে এক টাকার কয়েন প্রাসঙ্গিক ছিল নিত্যদিনের জনজীবনে। কিন্তু এখন সে গুরুত্বহীন। ১৫ টাকা ভাড়া হলে যাত্রী ১০ টাকার সঙ্গে পাঁচ টাকার কয়েন দিচ্ছেন। অথবা কুড়ি টাকা দিলে পাঁচ টাকার কয়েন ফেরত নিচ্ছেন। যে কারণে সেখানে এক টাকার কয়েনের লেনদেন একেবারেই বন্ধ প্রায়। বাসমালিকরা জানাচ্ছেন, আসলে আগে যে ভাড়ার চার্ট ছিল তাতে বিজোড় সংখ্যাই গুরুত্ব পাচ্ছিল। তাই এক টাকার কয়েন যেমন যাত্রীদেরও দরকার ছিল, তেমনই কন্ডাক্টরদেরও। কিন্তু এখন যে তালিকা বাসমালিকরা (Bus Service) নিজেরা বানিয়ে নিয়েছে, তাতে জোড় সংখ্যা প্রাধান্য পেয়েছে। বিজোড় সংখ্যা থাকলেও তাতে পাঁচ টাকার কয়েনের চাহিদা বেড়েছে। সরকারি বাসেও ন্যূনতম ভাড়া আট টাকা। তারপর ১০, ১২, ১৪ টাকা। ফলে সেখানেও ভাড়া দিতে প্রয়োজন পড়ে না এক টাকার কয়েনের।

বাস মালিকদের দাবি, ৫০ শতাংশ যাত্রীই সর্বনিম্ন সাত টাকা ভাড়া দেন। অর্থাৎ কম দূরত্বে যাতায়াত করেন। এখন তাঁরা দিচ্ছেন ১০ টাকা ভাড়া। বাকি ২৫ শতাংশ যেতেন ৯ টাকা ভাড়ায়। তাঁরা এখন কেউ ১২ টাকায় কেউ ১৫ টাকায় যাতায়াত করছেন। ফলে প্রায় ৯০ শতাংশ যাত্রীরই ভাড়া দিতে এবং ভাড়া ফেরত নিতে এক টাকার প্রয়োজন হচ্ছে না।

[আরও পড়ুন: উত্তরপ্রদেশের উন্নয়নের বিজ্ঞাপনে কলকাতার উড়ালপুলের ছবি, যোগীকে তুলোধোনা তৃণমূলের]

সল্টলেকে বেসরকারি সংস্থার কর্মী রূপম বন্দ্যোপাধ্যায় তাই বললেন, “এক টাকার কয়েন যা ছিল, তা রয়েই যাচ্ছে। হাতবদল হচ্ছে না। মূলত বাসে যাতায়াত করতেই খুচরো পয়সার হাতবদল হয়। এখন খুচরো বলতে দু’টাকা আর পাঁচ টাকার দরকার হচ্ছে। এক টাকার দরকার হচ্ছে না।” অল বেঙ্গল বাস-মিনিবাস সমন্বয় সমিতির সাধারণ সম্পাদক রাহুল চট্টোপাধ্যায় বলেন, “আসলে জ্বালানির দাম এতটাই বেড়েছে যে পুরনো ভাড়ায় বাস নামাতে চাইছেন না মালিকরা। তাই সর্বনিম্ন ভাড়া এখন ১০ টাকা নেওয়া হচ্ছে। পরের ধাপের যে ভাড়া রয়েছে, সেখানেও খুচরো এক টাকার কয়েনের লেনদেনের প্রয়োজন হচ্ছে না। তাই কয়েন সরকারিভাবে না হলেও বাসে কার্যত অচলেরই পথে।”

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement