গোবিন্দ রায়: বকেয়া ডিএ-র (DA) দাবিতে কো-অর্ডিনেশন কমিটিকে মিছিল করার অনুমতি দিল কলকাতা হাই কোর্ট (Calcutta High Court)। তবে অনুমতি মিলল শর্তসাপেক্ষে। রুটে বদল এনে আগামী ৪ মে মিছিলের অনুমতি দিলেন বিচারপতি রাজশেখর মান্থা। আদালত জানিয়েছে, দুপুর আড়াইটে থেকে বিকেল সাড়ে চারটের মধ্যে মিছিল করতে হবে। হাওড়া ফেরিঘাট, বঙ্কিম সেতু , ডিএম সলপ, মহাত্মা গান্ধী রোড হয়ে হাওড়া ময়দানে শেষ হবে মিছিলটি।
বুধবার মামলার শুনানি চলাকালীন আদালতে রাজ্য দাবি করেছিল, “যে রুটে মিছিল করার কথা বলা হচ্ছে সেটা মিছিলের জন্য নির্দিষ্ট করা কোনও রুট না। জনবহুল এলাকা, সাধারণ মানুষের অসুবিধা হবে। স্কুল ও অফিস যাত্রীর অসুবিধা হবে। ট্রাফিকের অসুবিধা হবে। অন্য রুটে অন্য জায়গায় করলে অসুবিধা নেই।” পালটা বিচারপতি মান্থা প্রশ্ন করেন, যে বিধিনিষেধের কথা আপনারা এখানে বলছেন, সেটা রাজ্যের শাসকদলের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য তো? তিনি তুলে আনেন রেড রোডে তৃণমূলের রাজনৈতিক কর্মসূচির কথাও। বিচারপতি প্রশ্ন করেন, “রেড রোড বন্ধ করে যখন কর্মসূচি হয়, মিছিল হয় তখন পুলিশের অসুবিধা হয় না? কিছু দল যখন মিছিল করে তখন গোটা কলকাতা স্তব্ধ হয়ে যায়। আমি শাসকদলের কথা বলছি না। তখন তো পুলিশের কোন অসুবিধা হয় না! মানুষ পরিবার নিয়ে রাস্তায় বেরতে চায়, কিন্তু বেরতে পারে না! তখন পুলিশের অসুবিধা হয় না?”
[আরও পড়ুন: আচমকাই ইস্তফা এনসিপি প্রধান শরদ পাওয়ারের, ভবিষ্যৎ নেতা কে?]
রাজ্যে আরও বলেছিল,”আড়াই কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের একটি রুটে কর্মসূচি করতে দিতে রাজ্যের কোনও অসুবিধা নেই। নির্দিষ্ট জায়গাতেই কর্মসূচি করতে দিতে হবে এই ধরনের দাবি কেউ জানাতে পারেন না। এটা কারও অধিকারের মধ্যে পড়ে না।” বিচারপতি নিজের পুরনো নির্দেশের কথা মনে করিয়ে তিনি আরও বলেন, “আমি নির্দেশ দিয়েছিলাম যে, মিছিলের আবেদন সংক্রান্ত একটা রেজিস্ট্রার তৈরি করতে হবে, যাতে মানুষ দেখতে পায় কবে মিছিল আছে। সেটা এখনও তৈরি হয়নি।” বিচারপতি আরও প্রশ্ন, ৩০ থেকে ৪০টা মামলা আমার কাছে এসেছে মিছিল করার অনুমতি চেয়ে। কেন আদালতকে বারবার হস্তক্ষেপ করতে হবে? শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করলে অসুবিধা কোথায়?” তিনি মনে করিয়ে দেন, “বিরোধিতা করা বা শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ করা মৌলিক অধিকারের মধ্যে পরে।” প্রসঙ্গত, আগামী ৪ তারিখ নবান্ন অভিযানের অনুমতি চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয় কো-অর্ডিনেশন কমিটি সহ সরকারি কর্মচারীদের সংগঠন। এদিন সেই অনুমতি দিল আদালত।