রাহুল রায়: অতিরিক্ত শূন্যপদ মামলায় কলকাতা হাই কোর্টে (Calcutta High Court) অস্বস্তিতে স্কুল শিক্ষা কমিশন। মামলার শুনানি চলাকালীন বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য, “রাজ্য এবং স্কুল সার্ভিস কমিশনের (SSC) অবস্থান যদি এক না হয় তাহলে কমিশন ভেঙে দেওয়া হোক।”
রাজ্যের ১৯ মে-র বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, আদালতের নির্দেশ মেনে বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থীদের নিয়োগ করার জন্য অতিরিক্ত শূন্যপদ তৈরি হয়েছিল। সেখানে আবার উলটো পথে হেঁটে কমিশন জানাচ্ছে, অবৈধভাবে যাঁরা চাকরি পেয়েছেন এবং যাঁদের চাকরি বাতিল হয়েছে তাঁদের নিয়োগ দেওয়ার জন্য এই শূন্যপদ তৈরি হয়েছে। বিচারপতির প্রশ্ন, “এটা কীভাবে সম্ভব?”
[আরও পড়ুন: রিজার্ভ ব্যাংকের সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনার পরই নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত, সুপ্রিম কোর্টে জানাল কেন্দ্র]
এ প্রসঙ্গে এদিন আদালতে কমিশনের আইনজীবী জানান, অনেকেই তিন-চার বছর ধরে চাকরি করছেন। তাঁদের পরিবার রয়েছে। তাঁদের কথা ভেবেই আদালতের রায় পুনর্বিবেচনার আরজি জানানো হয়েছে। তিনি আরও জানান, গতকাল এসএসসি-র চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা হয়েছে। আবেদন থেকে এই অংশ প্রত্যাহার করার কথা বিচার করা হচ্ছে। বিচারপতির পালটা মন্তব্য, “এরা অন্য কোথাও কাজ পেতে পারেন, কিন্তু শিক্ষক হিসেবে নয়। এরা শিক্ষক হলে ক্ষতিগ্রস্ত হবে ছাত্ররা। আর কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হবে না, রাজ্যও নয়, অন্য কেউ নয়।”
এরপরই রাজ্যের কাছে জবাব তলব করে হাই কোর্ট। একইসঙ্গে বিচারপতির প্রশ্ন, “কমিশন আর রাজ্যের অবস্থান যদি এক না হয়, তাহলে রাজ্য কমিশনের বিরুদ্ধে কী পদক্ষেপের কথা ভাবছে?” আগামিকাল সকাল সাড়ে দশটার মধ্যে জবাব চেয়েছে আদালত।
[আরও পড়ুন: শ্লীলতাহানির সাজা, দোষীকে সকাল থেকে সন্ধে পর্যন্ত আদালতে বসে থাকার নির্দেশ বিচারকের]
সম্প্রতি, একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির কর্মশিক্ষা বিষয়ে ৭৫০ জনের একটি তালিকা প্রকাশ করে এসএসসি। কর্মশিক্ষায় অতিরিক্ত পদ তৈরি করে সেখানে নিয়োগের জন্য ওই তালিকা প্রকাশ করা হয়। সেই তালিকায় অস্বচ্ছতার অভিযোগ এনে মামলাও হয়। মামলাকারী সোমা রায়ের আইনজীবী ফিরদৌস শামীম জানান, একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির কর্মশিক্ষা বিষয়ে ৭৫০টি অতিরিক্ত পদ তৈরি করা হয়। ওই পদে শিক্ষক নিয়োগের জন্য কাউন্সেলিংয়ের তালিকা প্রকাশ করে ৩ নভেম্বর বিজ্ঞপ্তি দেয় এসএসসি। অভিযোগ, তাঁর মক্কেল স্টেট লেভেল সিলেকশন টেস্টের (এসএলএসটি) লিখিত পরীক্ষায় ৭২ নম্বর পেয়েছেন। এখনও ইন্টারভিউ হয়নি। অথচ ৫৬ পেয়ে এক প্রার্থী চাকরি পেয়ে গিয়েছেন। সোমার পাশাপাশি একই অভিযোগে অনেক মামলা দায়ের হয়েছে হাই কোর্টে। সেই শুনানিতেই কড়া মন্তব্য বিচারপতির।