গোবিন্দ রায়: বালির পরিবেশবিদ তথা তৃণমূল নেতা তপন দত্ত হত্যা মামলায় সিবিআই তদন্তের (CBI Probe) নির্দেশ দিল কলকাতা হাই কোর্ট (Calcutta High Court)। সিআইডিকে তদন্তের সমস্ত নথি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার হাতে তুলে দেওয়ার নির্দেশ দিলেন বিচারপতি রাজশেখর মান্থার। তদন্ত এবং গোটা বিচারপক্রিয়া শেষ হয়ে যাওয়ার পর এই মামলায় নতুন করে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিল কলকাতা হাই কোর্ট। যা গোটা দেশে কার্যত নজিরবিহীন।
উল্লেখ্য, ২০১১ সালের ৬ মে খুন হয়েছিলেন বালির পরিবেশবিদ তথা সক্রিয় তৃণমূল কর্মী তপন দত্ত (Tapan Dutta Murder Case)। জলাভূমি ভরাটের প্রতিবাদ করায় তাঁকে খুন করা হয় বলে অভিযোগ। এই খুনে কাঠগড়ায় ওঠে তৃণমূলেরই নেতা-কর্মীরাই। খুন হওয়া তৃণমূল কর্মীর স্ত্রী প্রতিমা দত্তর করা এফআইআরে নাম ছিল রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ রায়-সহ ১৩ জন তৃণমূল নেতা-কর্মীর। তদন্তভার গ্রহণ করেছিল সিআইডি। কিন্তু ১১ বছর পেরিয়ে গেলেও মেলেনি সুবিচার।
[আরও পড়ুন: গালিগালাজ করেই বাড়ে জনপ্রিয়তা, কত রোজগার ছিল রোদ্দুর রায়ের?]
তদন্তের পর সিআইডি জানিয়েছিল, জলাজমি ভরাটের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছিলেন বলেই তপনবাবুকে খুন হতে হয়েছে। ২০১১ সালের ৩০ অগস্ট সিআইডি মামলার প্রথম চার্জশিট পেশ করে ৷ সিআইডির প্রথম চার্জশিটে রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ রায়-সহ একাধিক নেতার নাম ছিল। ওই বছরই ২৬ সেপ্টেম্বর সাপ্লিমেন্টরি চার্জশিট পেশ করে সিআইডি (CID)। কোনও কারণ না দেখিয়ে চার্জশিট থেকে ন’জনের নাম বাদ দেওয়া হয়।
পরে নিম্ন আদালত ৫ অভিযুক্তকে বেকসুর খালাসের নির্দেশও দেয়। কিন্তু ২০১৭ সালে কলকাতা হাই কোর্ট নিম্ন আদালতের সেই নির্দেশ খারিজ করে দেয়। অভিযুক্তরা পালটা সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়। শীর্ষ আদালতও হাই কোর্টের নির্দেশ বহাল রাখে এবং হাই কোর্টকে দ্রুত মামলাটি নিষ্পত্তি করার নির্দেশ দেয়। বুধবার কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ সিঙ্গল বেঞ্চকে একমাসের মধ্যে এই মামলার নিষ্পত্তির নির্দেশ দিয়েছিল। এর পরই এদিন সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিল কলকাতা হাই কোর্ট। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা যদি মনে করে, তদন্তে কোথাও খামতি রয়েছে, তা ফের তদন্ত করতে পারবে তারা।
[আরও পড়ুন: বাংলায় ব্যর্থ, অধীরকে ত্রিপুরার উপনির্বাচনের প্রচারেও পাঠাচ্ছে না কংগ্রেস]
কলকাতা হাই কোর্টের রায়ে খুশি তপন দত্তের স্ত্রী প্রতিমাদেবীও। তাঁর কথায়, “১১ বছর ধরে লড়াই করছি। অবশেষে সিবিআই তদন্তের রায় দিল আদালত। আরও কয়েক বছর না হয় দেরি হবে, কিন্তু সুবিচার পাবই।”