শুভঙ্কর বসু: কলকাতা হাই কোর্টের (Calcutta High Court) রক্ষাকবচ পেল বীরভূমের দাপুটে তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডল। আদালতের নির্দেশ ছাড়া গ্রেপ্তার করা যাবে না তাঁকে, নির্দেশ বিচারপতির। তবে তদন্তে সিবিআইকে সবরকম সাহায্য করতে হবে অনুব্রতকে।
ঘটনার সূত্রপাত বেশ কিছুদিন আগে। ভোট পরবর্তী হিংসায় ইলামবাজারের গোপালনগর গ্রামে গত ২ মে খুন হয়েছিলেন বিজেপি নেতা গৌরব সরকার। ভোটের ফল প্রকাশের দিন বিকেলে গোপালনগর গ্রামে শাসকদলের একটি বিজয় মিছিল বের হয়। গৌরব এবং তাঁর ভাই সৌরভ বাড়ির বাইরে দাঁড়িয়েছিলেন। অভিযোগ, মিছিল থেকে কয়েকজন এসে দুই ভাইকে রড দিয়ে মারতে শুরু করে। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় গৌরবের। সৌরভকে হাসপাতালে ভরতি করা হয়। সেই ঘটনায় মোট ২৪ জনের নামে ইলামবাজার থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছিল। ইলামবাজার থানার পুলিশ প্রথমে ৬ জনকে গ্রেপ্তার করে। পরে তারা জামিনে ছাড়া পেয়ে যায়। পরবর্তী সময়ে হাই কোর্টের (Calcutta High Court) নির্দেশে সিবিআই তদন্ত শুরু করে। তারা ৩ জনকে গ্রেপ্তার করে। পরপর সাতজন আত্মসমর্পণ করে। ৮ জন অভিযুক্ত ফেরার।
[আরও পড়ুন: রাজ্য বিজেপির অন্তর্কলহের মধ্যেই আরএসএসের দ্বারস্থ অমিতাভ চক্রবর্তী, সাক্ষাৎ মোহন ভগবতের সঙ্গে]
গত বছর নভেম্বর মাসে তাদের বিরুদ্ধে গ্রামে ঢেঁড়া পিটিয়ে নোটিস দিয়েছিল সিবিআই। তাদের আত্মসমর্পণ করার নির্দেশ দিয়েছিল। এরপরে ৮ জন আত্মসমর্পণ করে। ধৃতদের মধ্যে এখনও পর্যন্ত ১২ জন জামিন পেয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদের সময় অনুব্রত মণ্ডলের (Anubrata Mandal) নাম জানতে পারে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী দল। তাই তাঁকে সিবিআই (CBI) ক্যাম্পে গত শুক্রবার তলব করা হয়। যদিও অসুস্থ জানিয়ে হাজিরা এড়ান অনুব্রত মণ্ডল। বৃহস্পতিবার অর্থাৎ আজ ফের তাঁকে বীরভূমের ইলামবাজারের ক্যাম্পে হাজিরা দিতে বলা হয়েছিল।
এদিকে বুধবার সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ বিচারপতি রাজাশেখর মন্থার এজলাসে মামলা করেন বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি। বৃহস্পতিবার সেই মামলাটির শুনানি হয়। তৃণমূল নেতার আইনজীবী সন্দীপন গঙ্গোপাধ্যায় সওয়ালে বলেন, অনুব্রত মণ্ডল অসুস্থ। একাধিক শারীরিক সমস্যা রয়েছে তাঁর। করোনা পরিস্থিতিতে দুর্গাপুরে যাওয়া তাঁর জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। পাশাপাশি তিনি প্রশ্ন তোলেন, কেন কলকাতায় সিবিআই দপ্তর থাকা সত্ত্বেও লখনউ থেকে চিঠি পাঠানো হল অনুব্রতকে। তৃণমূল নেতাকে দুর্গাপুরে না ডেকে কেন সিবিআই আধিকারিকরা বোলপুর গেলেন না, সেই প্রশ্নও তোলেন আইনজীবী। এরপরই সবদিক বিবেচনা করে বিচারপতি জানিয়েছেন, আপাতত হাই কোর্টের নির্দেশ ছাড়া অনুব্রত মণ্ডলকে গ্রেপ্তার বা তাঁর বিরুদ্ধে কোনও কঠোর পদক্ষেপ করা যাবে না। তবে তদন্তকারীদের সবসময় সহযোগিতা করতে হবে অনুব্রতকে। অর্থাৎ তৃণমূল নেতাকে রক্ষাকবচ দিল হাই কোর্ট।