সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কার্তি চিদম্বরমকে পিটার ও ইন্দ্রাণী মুখোপাধ্যায়ের মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করল সিবিআই। সেই কথোপকথনের ভিডিও রেকর্ডিংও করা হয়েছে। তবে সেখানে দুই অভিযুক্ত কী তথ্য দিয়েছেন বা তদন্তকারীদের হাতে নতুন কোনও তথ্য এসেছে কি না, তা জানা যায়নি।
[দিদির মৃতদেহ আগলে বসেছিলেন বোন, পচাগলা দেহ উদ্ধার করল পুলিশ]
আইএনএক্স মিডিয়াকে ঘুষের বিনিময়ে বিদেশি বিনিয়োগের সুযোগ পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরমের পুত্র কার্তির বিরুদ্ধে। সেই সংস্থারই অন্যতম কর্ণধার ইন্দ্রাণী ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে গোপন জবানবন্দিতে দাবি করেন তাঁদের সংস্থায় বিদেশি বিনিয়োগ আনতে প্রভাব খাটিয়ে ফরেন ইনভেস্টমেন্ট প্রোমোশন বোর্ডের ছাড়পত্র পাইয়ে দিতে অর্থ নিয়েছিলেন। বিদেশি মুদ্রা আইন ভঙ্গের অভিযোগে ২৮ ফেব্রুয়ারি কার্তি চিদম্বরমকে গ্রেপ্তার করে সিবিআই। তিনি আপাতত সিবিআই হেফাজতে। অন্যদিকে মেয়ে শিনা বোরাকে হত্যার অভিযোগে গ্রেপ্তার ইন্দ্রাণী ২০১৫ সাল থেকে মুম্বইয়ের বাইকুল্লা জেলে রয়েছেন। রবিবার দুপুরে কার্তিকে দিল্লি থেকে মুম্বইয়ের বাইকুল্লা জেলে নিয়ে আসা হয়। প্রায় দু’ঘণ্টা সিবিআই গোয়েন্দারা তাঁকে জেরা করেন। পরে কার্তিকে আর্থার রোড জেলেও নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে রয়েছেন শিনা বোরা হত্যাকাণ্ডের আরেক অভিযুক্ত ইন্দ্রাণীর স্বামী তথা আইএনএক্স মিডিয়ার কর্ণধার পিটার মুখোপাধ্যায়। কার্তিকে তাঁর সামনে বসিয়ে আরও দু’ঘণ্টা জেরা করা হয়।
সূত্রের খবর, বাইকুল্লা জেলের একটি ঘরে ইন্দ্রাণীকে আনা হয়। সেখানে আগে থেকেই বসিয়ে রাখা হয়েছিল কার্তিকে। সিবিআইয়ের ছয় আধিকারিকও ছিলেন সেখানে। তাঁরাই জিজ্ঞাসাবাদ করেন। জেলের কোনও আধিকারিরকে ওই ঘরে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়নি। তবে ইন্দ্রাণীর উপর নজর রাখার জন্য ঘরের বাইরে দু’জন মহিলা কনস্টেবল ও দু’জন পুরুষ পুলিশ মোতায়েন রাখা হয়। ইন্দ্রাণী ও পিটার এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটকে (ইডি) জিজ্ঞাসাবাদের আগে জানিয়েছিলেন, পি চিদম্বরম কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী থাকাকালীন তাঁরা নর্থ ব্লকের অফিসে তাঁর সঙ্গে দেখা করে বিদেশি বিনিয়োগের প্রস্তাবে সরকারি অনুমোদনের আর্জি জানিয়েছিলেন। মুখোপাধ্যায় দম্পতির অভিযোগ, চিদম্বরমই তাঁর পুত্রের ব্যবসায় সাহায্যের জন্য এবং বিদেশি ব্যাঙ্কে টাকা পাঠাতে বলেছিলেন। অভিযোগ, বাবা কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী থাকার সময় আইএনএক্স মিডিয়া প্রাইভেট লিমিটেডকে প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ পাওয়ার ক্ষেত্রে বাড়তি সুবিধা পাইয়ে দেন কার্তি। সরকারি নিয়মের তোয়াক্কা না করে বিদেশ থেকে প্রায় ৩০৫ কোটি টাকা বিনিয়োগ হয় আইএনএক্স মিডিয়ায়।
[‘ম্যাজিক মাশরুম’ কেনাবেচার মাধ্যম বিটকয়েন, তদন্তে আন্তর্জাতিক যোগ পেলেন গোয়েন্দারা]
বিদেশি বিনিয়োগ আনার ক্ষেত্রে তৎকালীন বিদেশি বিনিয়োগ প্রোমোশন বোর্ড (এফআইপিবি)-এর কাছে দু’টি আবেদন করেন পিটার-ইন্দ্রাণী। প্রথমটি এফডিআই অনুযায়ী বিদেশি বিনিয়োগের জন্য এবং দ্বিতীয়টি আইএনএক্সের বিভিন্ন চ্যানেল ও মিডিয়া হাউসে সরাসরি বিদেশি সংস্থাকে শেয়ার ইস্যু করার জন্য। বোর্ড প্রথম শর্ত মেনে ৪.৬২ কোটি টাকা বিদেশি বিনিয়োগে সিলমোহর দিলেও শেয়ারের বিষয়টি অর্থ মন্ত্রকের হাতেই ছেড়ে দেয়। এখানেই অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। সিবিআইয়ের দাবি, আইএনএক্স প্রভাব খাটিয়ে প্রায় ৩০৫ কোটি টাকা বিদেশি বিনিয়োগ আনে। ‘ডিল’ করানোর জন্য বেশ কয়েক কোটি টাকা নেন কার্তি। এ ক্ষেত্রে বিদেশি বিনিয়োগের সর্বোচ্চ সীমা লঙ্ঘনের অভিযোগ আনে সিবিআই।
The post ইন্দ্রাণী-পিটারের সামনে বসিয়ে জেরা কার্তিকে appeared first on Sangbad Pratidin.