সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: এখনও অধরা সেন্ট পল’স কলেজের ছাত্র নিগ্রহ কাণ্ডে অভিযুক্তরা। মঙ্গলবারও রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানিয়ে দিয়েছেন এই ঘটনায় দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে দোষীদের। এদিন তিনি বলেন, “যে অপরাধ হয়েছে তাকে শিথিল করে দেখার কোনও প্রশ্নই নেই। অবিলম্বে গ্রেপ্তার করতে হবে অভিযুক্তদের। যারা লুকিয়ে আছে তারা বেশি শাস্তি পাবে।” এদিকে শিক্ষামন্ত্রীর কড়া নির্দেশের পরে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করার দাবি তুলেছেন কলেজের সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীরাও। সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটেও এই ঘটনা নিয়ে নিন্দার ঝড় উঠেছে।
[বন্ধ হয়ে গেল এলিট, মাল্টিপ্লেক্সের দাপটে ফের এক ‘সিনেমাওয়ালা’র অকালমৃত্যু]
প্রসঙ্গত, গত ১৭ মে কলেজের কমনরুমে মদ্যপানের প্রতিবাদ করে নিগৃহীত হন কলেজেরই ওয়েলফেয়ার সেক্রেটারি। অভিযোগ কলেজের প্রাক্তন ছাত্র অর্ণব ঘোষ, আবদুল কায়ুম মোল্লা, শেখ এনামুল হক, অভিজিৎ দলুইরা তাঁকে নগ্ন করে মোবাইলে ভিডিও রেকর্ডিং করে। পরে সেই ভিডিও ভাইরাল করে দেওয়া হয়। নাম জড়ায় কলেজের অশিক্ষক কর্মী অনন্ত প্রামাণিকেরও। সোমবার আমহার্স্ট স্ট্রিট থানায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়।
এই ঘটনার পর প্রশ্ন ওঠে কিভাবে কলেজে ঢুকে এমন ঘটনা ঘটাল প্রাক্তন ছাত্ররা। নড়েচড়ে বসে কলেজ প্রশাসন। অশান্তি এড়াতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হল। মঙ্গলবারই কলেজে বসানো হয়েছে সিসিটিভি। নয়া নিয়মে ঠিক হয়েছে, মঙ্গলবারের পর থেকে যাঁরাই কলেজে ঢুকবেন তাঁদের সকলকে রেজিস্টারে সই করতে হবে। লিখতে হবে ক্যাম্পাসে ঢোকার কারণ। প্রতিদিন বিকেল ৫টায় কলেজ বন্ধ হয়ে যাবে। ছুটির পরে ক্যাম্পাসে কোনও পড়ুয়াকে থাকতে দেওয়া হবে না। কলেজ সিদ্ধান্ত নিয়েছে যতদিন তদন্ত চলবে ততদিন সাসপেন্ড থাকবেন অভিযুক্ত শিক্ষাকর্মী । অভিযুক্ত তিন নেতাকেও শোকজ করেছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ।
আমহার্স্ট স্ট্রিট থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন কলেজের সাধারণ সম্পাদক সৌরভ সর্দার। তাঁর অভিযোগ, অচেনা নম্বর থেকে প্রায়ই তাঁর মোবাইলে হুমকি ফোন আসছে। তাঁর দাবি, “আক্রান্ত ওই ছাত্রের পাশে দাঁড়ানোর জন্য অনেকেই হুমকি দিচ্ছে। মেসেজ করে গালিগালাজ করা হচ্ছে। সে কারণেই অভিযোগ জানিয়ে রাখলাম।” এমনকী যে সমস্ত সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীরা আক্রান্ত ছাত্রর পাশে দাঁড়িয়েছেন হুমকি দেওয়া হচ্ছে তাঁদেরও। সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটেও আক্রমণের শিকার হচ্ছেন তাঁরা। এদিন থানায় ফেসবুক পেজের কিছু নমুনা দেখান দেন সৌরভ। সেখানেই দেখা গিয়েছে মুস্তাফিজুর রহমান আর শোয়েব খান নামে তৃণমূল ছাত্র পরিষদেরই দুই সদস্য অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করছে কলেজের সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের। একদিকে যেখানে সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি তুলছেন পড়ুয়ারা। সেখানে তাদের মেসেজ করে হুমকি দেওয়া হচ্ছে, “দেখে নেব।” এদিকে অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। পুলিশ সূত্রে খবর, অভিযুক্তদের খুঁজতে দুই চব্বিশ পরগনাতেই চিরুনি তল্লাশি শুরু করা হয়েছে।
[পঞ্চায়েতে খারাপ পারফরম্যান্সের ফল, সরছেন রাজ্যের তিন মন্ত্রী]
The post জিএসকে হুমকি ফোন, সিসিটিভি বসল সেন্ট পল’স কলেজে appeared first on Sangbad Pratidin.