নন্দিতা রায়, নয়াদিল্লি: পশ্চিমবঙ্গের করোনা পরিস্থিতি উদ্বেগজনক বলে মনে করছে না কেন্দ্র। আর সেই কারণেই এই মুহূর্তে রাজ্যে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল পাঠানোর কোনও পরিকল্পনা নেই তাদের।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের একজন উচ্চপদস্থ আধিকারিক নাম না প্রকাশের শর্তে বলেছেন, “রাজ্যের করোনা (Corona) পরিস্থিতি নিয়ে দু’দিন আগেই সেখানকার স্বাস্থ্য সচিবের সঙ্গে আলোচনা করেছেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিব রাজেশ ভূষণ। তাতে বাংলার বর্তমান করোনা পরিস্থিতি নিয়ে বিশদে আলোচনা হয়েছে। বাংলায় একদিনে সংক্রমণের সংখ্যার তুলনায় সুস্থ হওয়ার সংখ্যা বা হার যে বেশি সেই বিষয়টিও উঠে এসেছে। সেই সঙ্গে বাকি সমস্ত বিষয় আলোচনার পরেই কেন্দ্র সরকার এখনই পশ্চিমবঙ্গে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদল পাঠানোর কোনও প্রয়োজন আছে বলে মনে করছে না। এর আগে যখন সংক্রমণ বাড়ছিল, বাংলায় কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল পাঠানো হয়েছিল। প্রয়োজনে আবারও পাঠানো হতে পারে। তবে, এখনই সেই প্রয়োজন আছে বলে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক মনে করছে না।”
[আরও পড়ুন: বিফলে সাধুর মায়ের আবেদন, পালঘর মামলার তদন্তভার সিবিআইকে দিতে নারাজ মহারাষ্ট্র সরকার ]
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, বাংলায় বর্তমানে দিনে তিন হাজারের বেশি সংক্রমণ হলেও ‘পজিটিভিটি রেট’ সেভাবে বৃদ্ধি পায়নি, বরং কমেছে। রাজ্যে দিনপ্রতি টেস্টের সংখ্যা প্রায় পঞ্চাশ হাজারের কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছে। করোনা সংক্রমণ বা করোনায় মৃত্য, কোনও ক্ষেত্রেই দেশের প্রথম পাঁচটি রাজ্যের তালিকাতেও নেই বাংলা। সোমবারই বাংলায় ছিল লকডাউন (Lockdown)। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে কিছুদিন আগেই প্রকাশিত চতুর্থ পর্যায়ের আনলক সংক্রান্ত নির্দেশিকায় রাজ্যগুলিকে স্থানীয় স্তরে লকডাউন জারি করার আগে কেন্দ্রের মতামত নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। সেই বিষয়টি নিয়ে বাংলা-সহ বেশ কিছু রাজ্য আপত্তিও জানিয়েছে। কেন্দ্র সরকারের এহেন নির্দেশ দেশের যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর উপর আঘাত বলেই বিরোধী রাজ্যগুলি থেকে অভিযোগ করা হয়েছে। কেন্দ্র অবশ্য এই অভিযোগ মানতে নারাজ।
এপ্রসঙ্গে কেন্দ্রের এক স্বাস্থ্যকর্তার যুক্তি, “কনটেনমেন্ট জোনে লকডাউনের কথা তো কেন্দ্রীয় নির্দেশিকায় বহু আগে থেকেই উল্লেখ রয়েছে। রাজ্য সরকারগুলি যদি মনে করে কোনও জায়াগায় সংক্রমণ বাড়ছে সেখানে লকডাউন করা জরুরি, তাহলে সেগুলিকে কনটেনমেন্ট জোন হিসেবে চিহ্নিত করুক। তাহলেই তো সমস্যা মিটে যায়। আর কেন্দ্রীয় নির্দেশিকায় যে পয়েন্টটির কথা বলা হচ্ছে, তা নিয়ে বাংলার তরফ থেকে লিখিতভাবে কোনও আপত্তি কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের কাছে জমা পড়েনি। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছে এই মর্মে বাংলা থেকে কোনও চিঠি জমা পড়েছে কিনা আমাদের জানা নেই। যে কোনও আপত্তি থাকলে সেটি সবসময় লিখিত মাধ্যমে জমা পড়বে এটাই নিয়ম।”
[আরও পড়ুন: কোভিডের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়তে পারছে না অ্যান্টিবডি, দাবি নয়া গবেষণায়]
একইভাবে কেন্দ্র যে করোনা পরীক্ষার জন্য রাজ্যকে আর বিনা পয়সায় টেস্টিং কিট সরবরাহ করবে না সেই বিষয়টি নিয়েও বিশদে ব্যাখ্যা দিয়েছেন ওই উচ্চপদস্থ আধিকারিক। তিনি বলেছেন, “শুধুমাত্র বাংলাকেই নয়, কেন্দ্র আর কোনও রাজ্যকেই ফ্রি’তে টেস্টিং কিট সরবরাহ করবে না। এটা একটি সামগ্রিক সিদ্ধান্ত। এবং অনেক আগেই চিঠি লিখে সমস্ত রাজ্যকে একথা জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল। শুরুতে সরবরাহ করা হয়েছিল, কারণ সেইসময় টেস্টিং কিট মেলা কঠিন ব্যাপার ছিল। এখন তো তা বাজারে পাওয়া যাচ্ছে। আর কেন্দ্র সরকার তো সব রাজ্যকেই করোনা মোকাবিলার জন্য টাকা দিয়েছে। কেন্দ্রীয় তহবিল থেকে প্রাপ্ত সেই টাকা থেকেই তো রাজ্যগুলি কিট কিনতে পারে।”
The post বাংলার পরিস্থিতি ভাল, এখনই প্রতিনিধি দল পাঠানোর প্রয়োজন দেখছে না কেন্দ্র appeared first on Sangbad Pratidin.