shono
Advertisement

তিন বছর হলেই স্কুলে ভরতি বাধ্যতামূলক, প্রস্তাব দিয়ে নয়া বিল আনছে কেন্দ্র

সংসদে বিল পাস হলেই নয়া নিয়ম কার্যকর হবে পশ্চিমবঙ্গ-সহ গোটা দেশে। The post তিন বছর হলেই স্কুলে ভরতি বাধ্যতামূলক, প্রস্তাব দিয়ে নয়া বিল আনছে কেন্দ্র appeared first on Sangbad Pratidin.
Posted: 09:23 AM Jan 27, 2020Updated: 09:23 AM Jan 27, 2020

দীপঙ্কর মণ্ডল: তিন বছর বয়স থেকে শিশুর স্কুলে যাওয়া বাধ্যতামূলক হচ্ছে। তার ফলে স্কুলশিক্ষায় বিভিন্ন স্তরের যে যে বিন্যাস আছে তা বদলে যাবে। জাতীয় শিক্ষা নীতিতে একথা ঘোষণা করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। সংসদে বিল পাস হলেই নয়া নিয়ম কার্যকর হবে পশ্চিমবঙ্গ-সহ গোটা দেশে।

Advertisement

সাধারণত শহুরে এলাকায় তিন বছরের পর শিশুদের একটি অংশ স্কুলে যায়। নির্দিষ্ট টাকার বিনিময়ে প্লে এবং কিন্ডারগার্টেন স্কুলে ছেলেমেয়েদের পাঠান অভিভাবকরা। কিন্তু এ রাজ্যে সরকারিভাবে ‘প্রাক প্রাথমিক শিক্ষা’ চালু হয়েছে তা বেশিরভাগ স্কুলে তা কার্যকর করা যায়নি। শিক্ষা মহলের বক্তব্য, পরিকাঠামো এবং শিক্ষকের অভাবে প্রাক প্রাথমিকে শিক্ষাদান ধাক্কা খাচ্ছে। স্কুলশিক্ষা দপ্তরের এক কর্তা জানিয়েছেন, “জাতীয় শিক্ষা নীতি তৈরির অনেক আগেই আমরা প্রাক প্রাথমিকের জন্য ‘কুটুম কাটাম’ এবং ‘মজারু’ নামে দু’টি বই তৈরি করেছি। বই দু’টি বিনামূল্যে ছাত্রছাত্রীদের বিতরণ করা হয়।”

কিন্তু দিল্লি আইন তৈরি করলে তা রাজ্যগুলি মানতে বাধ্য। সংসদে ‘জাতীয় শিক্ষা নীতি’ আইনে রূপান্তরিত হলে সব রাজ্যকেই বিজ্ঞপ্তি জারি করে তা কার্যকর করতে হবে। জানা গিয়েছে, নতুন আইনে স্কুলশিক্ষার বিভিন্ন স্তরকে পুনর্গঠন করার কথা বলা হয়েছে। তিন থেকে আট বছর (প্রাক প্রাথমিক থেকে দ্বিতীয় শ্রেণি) পর্যন্ত স্কুলশিক্ষার স্তরকে বলা হবে মূল বা ফাউন্ডেশনাল। আট থেকে এগারো বছর (তৃতীয় থেকে পঞ্চম শ্রেণি) পর্যন্ত প্রস্তুতিমূলক বা প্রিপারেটরি। এগারো থেকে চোদ্দো বছর (ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণি) পর্যন্ত মধ্য বা মিডল এবং চোদ্দো থেকে আঠারো বছর (নবম থেকে দ্বাদশ) পর্যন্ত উচ্চ বা হাই। শেষ স্তরটিকে নবম-দশম ও একাদশ-দ্বাদশ এই দু’টি ভাগে ভাগ করা হবে। তৃণমূল কংগ্রেসের শিক্ষক সংগঠনের শীর্ষ নেতা দিব্যেন্দু মুখোপাধ্যায় কেন্দ্রীয় সরকারের নীতির কঠোর সমালোচনা করেছেন। তাঁর বক্তব্য, “তিন থেকে আট বছরের শিশু কোনওভাবেই এক গ্রুপে থাকতে পারে না। তিন বছরে কোনও শিশুর বুদ্ধিমত্তার বিকাশ হয় না। তিন থেকে ছয় বছরের শিশুদের একই গ্রুপে রাখলে তাও মানা যেত। কেন্দ্রের শিক্ষা নীতি তাই চূড়ান্ত অবৈজ্ঞানিক।”

[আরও পড়ুন: পতাকা উত্তোলনকে কেন্দ্র করে বিতর্ক, তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষে রণক্ষেত্র সোদপুর]

এখন প্রাথমিক, উচ্চ প্রাথমিক, মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিক এই চারটি স্তরে শিক্ষাদান করা হয়। ‘শিক্ষার অধিকার আইন’-এ ৬ থেকে ১৪ বছর বয়স পর্যন্ত শিক্ষাকে আবশ্যিক ও অবৈতনিক বলে ঘোষণা করা হয়েছে। নয়া আইন কার্যকর হলে প্রাক প্রাথমিক থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা আবশ্যিক এবং অবৈতনিক হিসাবে প্রতিষ্ঠা পাবে। এখন প্রাক প্রাথমিকের জন্য বেসরকারি স্তরে শিক্ষক নিয়োগ হলেও সরকারিভাবে এই নিয়ম চালু হয়নি। নতুন কেন্দ্রীয় আইন কার্যকর হলে ফাউন্ডেশনাল স্তরের জন্য আলাদা করে শিক্ষক নিয়োগ করতে হবে। জাতীয় শিক্ষা নীতি ‘আর্লি চাইল্ডহুড কেয়ার অ্যান্ড এডুকেশন’(ইসিসিই)-এর উপর বিশেষ জোর দিয়েছে। স্কুলের শুরুতে শিশুদের খেলাধুলোর মাধ্যমে শেখানোর কথা বলা হয়েছে। প্রথমে শিশুদের সৌজন্য, নীতি, মূল্যবোধ, পরিচ্ছন্নতা, একতা প্রভৃতি শেখানো হবে।
এই মুহূর্তে দেশে পাঁচ কোটিরও বেশি শিশু প্রাক প্রাথমিক শিক্ষার বাইরে। কয়েক বছরে এই সংখ্যা দশ কোটি ছাড়াবে বলে জানিয়েছে জাতীয় শিক্ষা নীতি। সিপিআইয়ের শিক্ষক সংগঠনের নেতা স্বপন মণ্ডলের বক্তব্য, “এত শিশুকে প্রাক প্রাথমিকের আওতায় আনতে বিপুল পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন। কেন্দ্রীয় সরকার তার দায়িত্ব নেবে কি না সে বিষয়ে কিছু জানায়নি। এই পরিকল্পনার মাঝে স্কুলশিক্ষায় বেসরকারিকরণ যাতে না হয় তা নিশ্চিত করতে হবে।”

The post তিন বছর হলেই স্কুলে ভরতি বাধ্যতামূলক, প্রস্তাব দিয়ে নয়া বিল আনছে কেন্দ্র appeared first on Sangbad Pratidin.

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement